কলকাতা, 15 ডিসেম্বর : বেআইনিভাবে জলাভূমি ভরাট করলে তা আগের অবস্থায় ফেরাতে হতে পারে, এমনকি সেখানে বেআইনিভাবে কোনও নির্মাণ হয়ে থাকলে তাও ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে হাইকোর্ট (High Court on Filling of Water Bodies)। মুর্শিদাবাদের একাধিক জায়গায় বেআইনিভাবে জলাভূমি ভরাট সংক্রান্ত মামলায় এই পর্যবেক্ষণ প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের ।
যদিও রাজ্যের বক্তব্য, ওই এলাকায় বেআইনিভাবে জলাভূমি ভরাট করা হচ্ছে না । এ ব্যাপারে আগামী 21 ফেব্রুয়ারি সব পক্ষকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ।
বহরমপুর পৌরসভায় একটি প্রায় এক বিঘার বেশি জলাভূমি বেআইনিভাবে ভরাট করার বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা । যদিও মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ওই এলাকায় বেআইনিভাবে কোনও জলাভূমি ভরাট করা হচ্ছে না । পরিবর্তে ওই এলাকায় অন্যত্র বিকল্প জলাভূমি তৈরি করে দেওয়া হবে ।
আরও পড়ুন : KMC : অবৈধভাবে জলাশয় ভরাট রুখতে কড়া কলকাতা পৌরনিগম
কিন্তু বহরমপুর পৌরসভার তরফের আইনজীবী অরিন্দম দাস আদালতে বলেন, "বেআইনিভাবে জলাভূমি ভরাটের অভিযোগে ভূমি সংস্কার আইনের ধারা মেনে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ । যেহেতু এখনও রেকর্ডে জমিটি জলা হিসেবে চিহ্নিত, তাই পৌরসভা ও বেআইনি ভরাটের অভিযোগ পেয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ।"
রাজ্যের তরফের আইনজীবী অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায় এই বক্তব্যের পাল্টা বলেন,"পৌরসভার রেকর্ডে এখনও বিষয়টি নথিভুক্ত করা হয়নি ।"
এই বিষয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন ,"এটা কোনও বিকল্প হতে পারে না । কেউ যদি বলে বর্ধমানের একটি জলাজমি ভরাট করে বিকল্প হিসেবে কলকাতায় আরেকটি জলাভূমি তৈরি করে দেওয়া হবে সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত এবং একইসঙ্গে কতটা আইনসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে ।"
তারপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন ।
মামলাকারীদের বক্তব্য, গোটা রাজ্যে রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের মদতে বেআইনিভাবে একের পর এক জলাভূমি ভরাট করে বেআইনি নির্মাণ গড়ে তোলা হচ্ছে । যেহেতু রাজনৈতিক মদত রয়েছে, তাই সাধারণ মানুষের পক্ষে এর বিরুদ্ধে কিছু করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে । আদালত যদি এই ব্যাপারে কঠোর নির্দেশ প্রদান করে, তাহলে জলাভূমি ভরাটের বিরুদ্ধে শক্তপোক্ত আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে গোটা রাজ্যে ।
আরও পড়ুন : পুকুর ভরাটে কড়া কলকাতা পৌরনিগম