কলকাতা, 30 নভেম্বর: ফুটপাথে সুস্থভাবে চলাফেরা করা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার। কিন্তু হকারদের কারণে ফুটপাথ নামক বিষয়টাই যেন এখন উঠে গিয়েছে। ফুটপাথ এখন আর পথচারীদের নয়, হকারদের ব্যবসা করার জায়গাতে পরিণত হয়েছে। এই ব্যাপারে রাজ্য আইন তৈরি করলেও সেই আইনের কোনও প্রয়োগ কেন এতদিনেও করা হল না? পথচারীকে হকারমুক্ত ফুটপাথ(Hawker Free Footpath in Kolkata) দেওয়া যেমন রাজ্যের দায়িত্ব কর্তব্যের মধ্যে পড়ে একইসঙ্গে হকারদেরকেও যাতে পুনর্বাসন দেওয়া যায়, লাইসেন্স প্রদান করা যায় সেটাও দেখার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের (State Government)। সেই কারণেই তৈরি হয়েছিল আইন। তা সত্বেও এখনও প্রয়োগ হয়নি সেই আইনের। এই ব্যাপারে কলকাতা পৌরসভার কমিশনার ও রাজ্যের পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের সচিবকে হলফনামার দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি টিএস শিভাগনানাম ও হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকার স্ট্রিট ভেন্ডারস আইন 2014 সালে কার্যকর করে। কিন্তু রাজ্য এই ব্যাপারে কিছুই করেনি। আইন কার্যকরের দাবিতে প্রথম কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয় 2015 সালে। হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল এই ব্যাপারে নির্দিষ্ট আইন তৈরি করতে। সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকার ওয়েস্ট বেঙ্গল আরবান স্ট্রিট প্রোটেকশন অফ লাইভলিহুড অ্যান্ড রেগুলেশন অফ স্ট্রিট ভেন্ডিং রুল তৈরি করে 2018 সালে। কিন্তু এখনও এই আইনের প্রয়োগ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ভার পরীক্ষার জন্য চারদিন বন্ধ থাকছে পার্কস্ট্রিট উড়ালপুল
এই ব্যাপারে মামলাকারী আইনজীবী শ্রীকান্ত দত্ত জানান, আইনে একাধিক বিষয়ে বলা ছিল। হকারদের বসার নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করে দেওয়া। তাঁদের লাইসেন্স দেওয়া। এগুলি ঠিক করার জন্য একটি কমিটি তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকার কিছুই করেনি। ডিভিশন বেঞ্চ হলফনামা দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি আরও জানিয়েছে, এতদিন হয়ে যাওয়া সত্বেও রাজ্যের এই ব্যাপারে কেন গাছাড়া মনোভাব? রাজ্য যাতে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয় সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। 4 সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে তাদের বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বিষয়টির মধ্যে একদিকে যেমন হকারদের পুনর্বাসনের বিষয়টি রয়েছে একইসঙ্গে পথচারীদের জন্য ফুটপাথও যাতে মুক্ত করা যায় সেই বিষয়টিও রয়েছে। তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই মামলা। 12 জানুয়ারি ফের মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।