কলকাতা, 26 অক্টোবর: মেট্রোরেলের কাজের জন্য ময়দান এলাকায় গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ময়দান কলকাতার অন্যতম ফুসফুস। একই সঙ্গে, প্রতিদিনের হাঁটা, খেলাধুলা ও ঘোরাঘুরিরও জায়গা। কলকাতাকে চিহ্নিত করা হয়েছে 1950 সাল থেকে সবচেয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধির শহর বলে। অন্যান্য বড় শহরের সঙ্গে তুলনা করে এই মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয়েছে। সুতরাং এই ধরনের গাছ কাটা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত বলেও জানিয়েছে হাইকোর্ট।
প্রায় 700 গাছ কাটা হবে শুনে আদালতও বৃহস্পতিবার চমকে যায়। মামলাকারীর চিঠি পাওয়ার পর আরভিএনএলের উত্তর দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি শুনে উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট। আদালত আরভিএনএল এবং কেন্দ্র উভয়কে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছে। 9 নভেম্বর এই মামলার ফের শুনানি বলে জানিয়েছে আদালত। আপাতত 13 নভেম্বর পর্যন্ত ময়দান এলাকায় গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশও জারি করেছে হাইকোর্ট। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি বিভাশ রঞ্জন দে'র ডিভিশন বেঞ্চ এদিন এই নির্দেশ দিয়েছে।
'পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালক্যাটা' নামে এক বেসরকারি সংস্থা শহরে নির্বিবাদে গাছ কাটা হচ্ছে অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। সংগঠনের আইনজীবী বলেন, "নির্বিবাদে গাছ কাটা হচ্ছে ময়দান এলাকায়। আরভিএনএল (রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড) কাজ করছে। মোট 700 গাছ কাটবে তারা সংবাদ মাধ্যম সুত্র থেকে আমরা জানতে পেরেছি । তার মধ্যে প্রায় 200টি শুধুমাত্র মেশিন ও অন্যান্য জিনিসপত্র বহনের সুবিধার জন্য। আরটিআই করেছিলাম আমরা। উত্তর পাইনি। 325 মিটার ময়দান স্টেশন তৈরি হবে। খোঁড়া হচ্ছে মেশিন দিয়ে। একটা অংশ ব্যারিকেড করে ঘেরা। কাউকে সেই অংশে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।"
আইনজীবী আরও সওয়াল করেন, "25 সেপ্টেম্বর প্রথম চিঠি দিয়েছিলাম আমরা কতৃপক্ষকে। কোনও উত্তর দেওয়া হয়নি। পুজোর পরে মার্কিং করা হবে আরও গাছ। পরিবর্তে অন্যত্র গাছ লাগানো হবে বলা হচ্ছে। কিন্তু 80-90 বছরের পুরনো গাছ কাটা হচ্ছে। এই ক্ষতি পুরণ হবে ? গাছ কাটার প্রয়োজনীয় অনুমতি নেই আরভিএনএলের কাছে। আরভিএনএল এবং কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল 23 অক্টোবর কিন্তু তারা কোনও উত্তর দেয়নি।এদিন মামলার শুনানিতে হাজিরও হয়নি।"
আরও পড়ুন: রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারকের বদলিতে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট, নির্দেশে স্থগিতাদেশ
রাজ্যের আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, "কাজ করছে আরভিএনএল। সেনাবাহিনীর জায়গা। রাজ্য শুধু আইন রক্ষার কাজ করতে পারে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় যদি কিছু অসুবিধা হয় আমরা সেটা দেখতে পারি।" ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পরই আপাতত গাছ কাটার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে।