কলকাতা, 25 এপ্রিল: রবীন্দ্রভারতীর জোড়াসাঁকো ভবনের ভিতরে রাজনৈতিক দলের বেআইনি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। লোগো-সহ অন্যান্য সমস্ত কিছু সরানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যার সমস্ত খরচ বহন করবে কলকাতা পৌরনিগম। হেরিটেজ বিল্ডিংয়ের আগের অবস্থা ফেরাতে হবে। ভাঙার সময় কলকাতা পৌরনিগমের আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ারের উপস্থিতিতে কাজ হবে। হাইকোর্টের এই নির্দেশ কার্যকর করা হল কি না, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট পৌরনিগমকে 45 দিনের মধ্যে আদালতে জমা করার নির্দেশ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, "জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে এখনও বেআইনি দখলদার রয়েছে। পৌর কমিশনারকে আদালতে ডাকা হোক। কেন এখনও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। একটি রাজনৈতিক দলের অফিস করা হয়েছে। তাতে বিশ্ববাংলার লোগো লাগানো রয়েছে।" অন্যদিকে, কলকাতা পৌরনিগমের হেরিটেজ সংরক্ষণ কমিটি রিপোর্ট দিয়ে জানিয়েছে বেআইনি নির্মাণ জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে রয়েছে। কিন্তু সেটা হেরিটেজ বিল্ডিং নয়। পালটা নিগমের তরফে জানানো হয়, বেআইনি নির্মাণ থাকলে তা দেখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ও হেরিটেজ কমিটির। এব্যাপারে পৌরনিগমের কোনও ভূমিকা নেই।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই কলকাতা পৌরনিগম, হেরিটেজ বিল্ডিং কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ বিষয়ে বল ঠেলাঠেলি চলছে। প্রত্যেকেই নিজেদের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া। প্রায় প্রত্যেকেই স্বীকার করেছে বেআইনি নির্মাণ রয়েছে জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে । কিন্তু কে সেটা ভাঙার বা সরানোর দায়িত্ব নেবে, সে ব্যাপারে সবাই হাত গুটিয়ে নিয়েছে। এর আগে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, হেরিটেজ সংরক্ষণ কমিটি নতুন করে জোড়াসাঁকো ও বিটি রোডের ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে দেখবে।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রভারতীর হেরিটেজ ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধের নির্দেশ, রাজ্যের রিপোর্ট তলব
এই পরিদর্শনে হবে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সদস্যদের নিয়ে। আলাদা আলাদাভাবে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় দু'টি ক্যাম্পাসের ব্যাপারে। আরকিউলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার ডিরেক্টরকেও রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। এদিন সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা পৌরনিগমকেই এই বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে হবে। সেই ব্যাপারে আদালতকে রিপোর্ট দিয়ে জানাতেও হবে তাদের।