কলকাতা, 11 মে: কালিয়াগঞ্জের নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পুলিশের তদন্তে বিস্তর গলদ। সেই জন্য প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস, আইপিএস দময়ন্তী সেন ও প্রাক্তন আইজি (আইপিএস) পঙ্কজ দত্তকে নিয়ে সিট গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের। নির্দেশ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷
এদিন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বলেন, "কোর্ট এখনই কোনও মন্তব্য করছে না। আইনজীবী হিসেবে একজন সরকারের হয়ে বলতেই পারেন। কিন্তু আদালত একজন কর্মরত আইপিএসের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত দুই অফিসারকে জুড়ে দিচ্ছে খুব স্বাভাবিক ভাবে। আদালতের নজরদারিতে এই তদন্ত চলবে।" বিচারপতির প্রশ্ন, "ময়নাতদন্ত সাড়ে তিনটেতে হলে ইঙ্কোয়েস্ট কি করে সাড়ে পাঁচ টায় হয় ! হাসপাতাল বলছে, সাড়ে 5টায় ময়না তদন্ত হয়েছে। অথচ দেহ ঘটনা স্থল থেকে সরানোর আগেই ইঙ্কোয়েস্ট হয়ে যাওয়ার কথা ৷ পুলিশ নৃশংস ভাবে দেহ টেনে নিয়ে যায়।"
আরও পড়ুন : টেনেহিঁচড়ে কিশোরীর দেহ নিয়ে গেল পুলিশ, কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে প্রশাসন
জানা গিয়েছে, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ময়নাতদন্তের সময় পরিবারের কেউ ছিল না। ইনকোয়েস্টের সময়ও কেউ ছিল না। ময়নাতদন্তে রিপোর্টের সময় ও ইঙ্কোয়েস্টের সময়ের ব্যবধানে গরমিল ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়েছে পুলিশ। এই অবস্থায় পরিবারের ভরসা জোগাতে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। এই তিনজনের কমিটি তাঁদের পছন্দ মতো অফিসার নিয়ে তদন্ত চালাতে পারবেন। এই সিটকে সব ক্ষমতা সিআরপিসি অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের ব্যাপারে এই সিট সিদ্ধান্ত নেবে। তদন্ত চলাকালীন সিট তদন্ত নিয়ে কোনও পাবলিক কমেন্ট করতে পারবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হাইকোর্টের তরফে ৷ 28 জুন মামলার পরবর্তী শুনানি। ওইদিন প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দিতে হবে সিটকে।
পাশাপাশি, নাবালিকার নাম ট্যুইট করে দেওয়ায় শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের সমন পাঠানোর ঘটনায় আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মূলত, কালিয়াগঞ্জের ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা রাজ্য। দফায় দফায় বিক্ষোভ অবরোধ চলতে থাকে। এমনকী পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধস্তাধস্তিও হয়। এর মাঝেই কালিয়াগঞ্জ থানার একটি অংশে আগুনও লাগিয়ে দিয়েছিল আন্দালনকারীরা। এই ঘটনা নিয়ে পুলিশকে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।