কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর: আজ থেকে বাস চলবে টালা সেতু দিয়ে ৷ প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর 22 সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয়েছে হেমন্ত সেতু । কলকাতা তথা রাজ্যবাসীর কাছে এটি টালা ব্রিজ নামেই পরিচিত । বৃহস্পতিবার ভোর 6টা থেকে টালা ব্রিজ পুরোপুরি খুলে দেওয়া হয়েছে ৷ চলছে বাস ও ভারী যানবাহন (Bus and other heavy vehicles transport starts over Tala Bridge) ।
পুজোর আগে গত বৃহস্পতিবার টালা ব্রিজের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee inaugurates Tala Bridge) । তবে যাতায়াতের জন্য সেতু খুল দেওয়া হলেও যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল । চতুর্থীর ভোর থেকে তিলোত্তমা তথা রাজ্যবাসীর জন্য চালু হল উত্তর কলকাতার সংযোগরক্ষাকারী টালা ব্রিজ ৷
উত্তর কলকাতার একাধিক অংশ সঙ্গে শহরতলির যোগাযোগ স্থাপনে এই ব্রিজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । 2020 সালের গোড়ার দিকে ব্রিজটি ভেঙে নতুন করে তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয় ৷ তখন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেতুটি ৷ এতে নাকাল হতে হয়েছিল নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে এলাকাবাসীদের ।
এই সিদ্ধান্তে খুশি বাস মালিকরাও । বৃহস্পতিবার থেকে আগের মতো সময় অনুযায়ী রুটের সব বাস চলাচল করবে । প্রথমে এই ব্রিজ উদ্বোধনের পরে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন দ্রুত ব্রিজের উপর দিয়ে বাস চালাতে দেওয়ার আর্জি জানালেও তখন তা খারিজ করে দেওয়া হয় । এরপর ফের পরীক্ষানিরীক্ষার পর বৃহস্পতিবার থেকে গণপরিবহণে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন: উত্তর কলকাতার মানুষকে পুজোর উপহার মুখ্যমন্ত্রীর, খুলে গেল টালা ব্রিজ
প্রসঙ্গত 2018 সালের মাঝামাঝি মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর শহরের সবক'টি ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয় । তাতে দেখা যায় টালা ব্রিজের পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক । তখনই সেতু ভেঙে নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । 2019 সালের 27 সেপ্টেম্বর প্রথম হেমন্ত সেতু বন্ধ করে দেওয়া হয় । 2020-র ফেব্রুয়ারি মাসে টালা ব্রিজ ভাঙার কাজ শুরু হয় । করোনা-সহ নানা কারণে সংস্কারের জন্য কিছুটা অতিরিক্ত সময় লেগেছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর ।
টালা ব্রিজ খুলে দেওয়া নিয়ে 'ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন'-এর যুগ্ম সম্পাদক প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, "এই সিদ্ধান্তে আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরে পেলাম । কারণ যেহেতু বেলা 1টার পর ট্রাফিক ঘুরিয়ে দেওয়া হয়, তাই সেতু বন্ধ করে দেওয়ার পর প্রথম তিনমাস আমাদের ভোগান্তির শেষ ছিল না । ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও চূড়ান্ত রুট ম্যাপ না থাকায় কখনও এক পথে বাস ঘোরাতে হত, তো আবার পরের দিন অন্য পথ দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় । এতে আমাদের যাত্রী সংখ্যায়ও কম-বেশি হত । নির্দিষ্ট একটি রুট না থাকায় যাত্রীরাও বিভ্রান্তির মধ্যে পড়তেন ।" এতদিন ধরে বেলগাছিয়া সেতুর উপর দিয়ে ব্যাপক হারে ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন চলত ৷ এবার তা হবে না ৷ এর ফলে বেলগাছিয়া ব্রিজের উপরে চাপটাও অনেকটা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, "গত তিন বছরে এলাকাবাসী এবং নিত্যযাত্রীরা একটা রুট দিয়ে আবার যাতায়াত শুরু করেছেন ৷ তাই কিছু দিন সময় লাগবে বাসে সেই আগের ভিড় ফিরতে । তবে টালা ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত যেহেতু অনেটা সহজ, তাই যাত্রীরা এই রুটে আবার ফিরবেন ।"
আরও পড়ুন: 31 জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে সম্পূর্ণ বন্ধ হচ্ছে টালা ব্রিজ, জারি বিজ্ঞপ্তি