কলকাতা, 30 জুলাই: জ্ঞান ফিরেছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ৷ তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ৷ মাথা নাড়ছেন, ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করছেন ৷ তবে এখনও সংকট কাটেনি ৷ রবিবার এ কথা জানালেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ব্যক্তিগত চিকিৎসক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এবং মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তী ৷ তিনি জানান, রাইলস টিউবে খাওয়ানো হয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে ৷
বেলা 11টার বুলেটিন: ভেন্টিলেশনে থাকলেও হিমোডায়নামিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (79) । তাঁর সিটি থোরাক্স করা হবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছে । রবিবার বেলা এগারটা নাগাদ প্রকাশিত বুলেটিনে এ কথা জানায় উডল্যান্ডস মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে বুদ্ধবাবু: প্রথমে তাঁকে ননইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল ৷ কিন্তু পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয় । তাঁর রক্তচাপের পরিমাণ আগের থেকে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে । এছাড়া ফুসফুসের যে সংক্রমণ ছিল, সেটি দুটি ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ কোনও মতেই বাড়ানো যাচ্ছে না । তার সঙ্গে কিডনিতেও সমস্যা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । পরিস্থিতি যতক্ষণ না একটু স্বাভাবিক হচ্ছে, ততক্ষণ ডাক্তাররা অ্যান্টিবায়োটিকের যে ডোজ তার পরিমাণ বাড়াতে পারছেন না ।
আরও পড়ুন: অবস্থার অবনতি! ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে বুদ্ধদেব, বেড়েছে রক্তচাপও
রাতে অবস্থার আশানুরূপ উন্নতি হয়নি: গতকাল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় বিকেল 4.30টে নাগাদ ৷ এরপর রাত 10.30টা পর্যন্ত তাঁকে পর্যবেক্ষণ করেন চিকিৎসকরা । তখন তাঁকে রাখা হয়েছিল ননইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে । তবে আশা অনুযায়ী শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়াতে চিন্তায় পড়ে যান চিকিৎসক মহল । এরপরই তাঁকে ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয় ৷
পর্যবেক্ষণে মেডিক্যাল বোর্ড: ইতিমধ্যেই তাঁর জন্য চিকিৎসক কৌশিক চক্রবর্তীর তত্ত্বাবধানে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে । সেখানে রয়েছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সৌতিক পণ্ডা, ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সুস্মিতা দেবনাথ, ইন্টারভেনশনাল কার্ডিয়োলজিস্ট সরোজ মণ্ডল, ইন্টারনাল মেডিসিন এবং পালমোনোলজিস্ট অঙ্কন বন্দ্যোপাধ্যায়, ইন্টারনাল মেডিসিন এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ ধ্রুব ভট্টাচার্য, অ্যানাস্থেসিওলজিস্ট আশিস পাত্র, জেনারেল ফিজিশিয়ান সপ্তর্ষি বসু এবং সোমনাথ মাইতি ।
চিকিৎসকরা বলছেন, "তিনি এখন মোটামুটি স্টেবল রয়েছেন কিন্তু স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে তিনি নেই । 48 ঘণ্টা না পেরোলে কোনও সদুত্তর দেওয়া যাচ্ছে না ।"
প্রসঙ্গত, গতকাল যখন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তাঁর অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল 69 । তারপর তা হয় 82 থেকে 84-এর মধ্যে । রাত 8.30টা নাগাদ বাম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বুদ্ধবাবুকে দেখে হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় বলেন, তিনি আগের থেকে ভালো আছেন । কিন্তু আচ্ছন্নভাব রয়েছে । বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের রক্তে ক্রিয়েটিনিনের পরিমাণ বেশি রয়েছে । তবে প্রস্রাবে কোনও সমস্যা নেই বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর । এছাড়াও তাঁর কোভিড হয়েছিল, ফলে ফুসফুসের জোরও কমেছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা । কোন পথে এগোবে চিকিৎসা, তা নিয়ে আলোচনা করছে মেডিক্যাল বোর্ড ৷