কলকাতা, 12 অক্টোবর: ছাত্র আন্দোলনের মুখে পড়ে প্রায় 16 ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ধরনা চালিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বতী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ । বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর এই ধরনা ওঠে ৷ তার আগেই অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনাকে ‘অনভিপ্রেত’ বলেই মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু । তাঁর কথায়, "সব অধ্যাপকদের যেমন শ্রদ্ধা করা যায় না, তেমনই সব ছাত্রদের স্নেহ করা যায় না । অধ্যাপককে নিশ্চয়ই চার অক্ষরের কথা বলা বা তুই তোকারি করা, এগুলো আন্দোলনের কোনও বহিঃপ্রকাশ বা আন্দোলনের রাস্তা হতে পারে না ।"
বৃহস্পতিবার রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল । সেই কর্মশালায় উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু । সেখানেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান চিত্রকে ঘিরে । তাতে মন্ত্রীর মত, অধ্যাপককে তুই তোকারি করা কখনও আন্দোলনের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না ।
তিনি বলেন, "যাদবপুরে কী ঘটছে সেটা আমি খুব ভাসাভাসাভাবে শুনেছি । ছাত্রছাত্রীরা আন্দোলন করতে পারে । কিন্তু অধ্যাপককে নিশ্চয়ই চার অক্ষরের কথা বলা বা তুই তোকারি করা, এগুলো আন্দোলনের কোনও বহিঃপ্রকাশ বা আন্দোলনের রাস্তা হতে পারে না ।"
এর সঙ্গে তিনি আরও বলেন, "আমরাও ছাত্র বয়সে আন্দোলন করেছি । অনেক অধ্যাপকের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছি । কিন্তু কোনও অধ্যাপককে কখনও তুই তোকারি করা, চার বা পাঁচ অক্ষর সম্বোধন করা প্রকাশ্যে, এটা খুব ভদ্র কাজ বা আন্দোলনের জন্য দরকারি বলে মনে হয় না ।" এই মন্তব্যের পরেই শিক্ষামন্ত্রীর মত, "এটা ঠিক যে, সব অধ্যাপককে শ্রদ্ধা করা যায় না, তেমনি আবার সব ছাত্রকে তো স্নেহও করা যায় না । সবাই স্নেহের যোগ্য নন ।"
প্রসঙ্গত, 26 সেপ্টেম্বর অতএব গতবারের ডাকা ইসি বৈঠকে 12 ঘণ্টা পর কোনও সদুত্তর আসেনি বলেই জানা গিয়েছিল । তাই খুবই অল্প সময়ে আরও একটা ইসি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল । সেই কথা মতো বুধবার আচমকাই ইসি বৈঠক ডাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ । এই বৈঠকে মূলত আলোচনার বিষয়ে ছিল ছাত্রমৃত্যু ও ডেঙ্গি পরিস্থিতি । তবে ইসি বৈঠক ডাক দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গতবারের মতো স্লোগান শুরু করে পড়ুয়ারা । তারপর পড়ুয়াদের এই আন্দোলনের জেরে ধরনায় বসেন উপাচার্য । বৃহস্পতিবার সেখান থেকেই নিজের কাজ চালিয়ে যান বুদ্ধদেব সাউ ।
আরও পড়ুন: কাল থেকে ধরনায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রয়েছেন কর্মসমিতির সদস্যরাও