বিধাননগর, ২০ ফেব্রুয়ারি : হাতের শিরা কাটা অবস্থায় উদ্ধার করা হল প্রাক্তন IPS গৌরবচন্দ্র দত্তর মৃতদেহ। গতকাল সল্টলেকের এফ ব্লকের ৪২৪ নম্বর বাড়ি থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ। উপস্থিত ছিলেন বিধাননগর পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহ। গৌরবচন্দ্র দত্ত আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। যদিও ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে গৌরববাবুর স্ত্রী পুলিশকে ফোন করেন। তিনি জানান, দুপুরের পর থেকে আর ঘরের দরজা খোলেননি গৌরববাবু। বার বার ডেকেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। এরপর বিকেলে বিধাননগর দক্ষিণ থানার পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌঁছে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৌরববাবুকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে থাকতে দেখে। তাঁর কবজিতে গভীর ক্ষত ছিল। আর তাঁর দেহের পাশ থেকে একটি ব্লেডও উদ্ধার করা হয়। তবে ঘটনাস্থান থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি। একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। যে ঘর থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সেটিকে সিল করে দিয়েছে পুলিশ। আজ ঘরটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে।
চাকরির শেষ জীবনে একাধিক বিতর্কের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন গৌরববাবু। ২০০৩ সালে DIG পদে থাকাকালীন ব্যারাকপুর পুলিশ ট্রেনিং ক্যাম্পে এক কনস্টেবলের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। শুরু হয় ঘটনার তদন্ত। এরপর ২০১০ সালে যৌন হেনস্থার অভিযোগে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ হিউম্যান রাইটস কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে এক মহিলা কনস্টেবলকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের IG প্ল্যানিং বিভাগ থেকেও সরানো হয় তাঁকে। তারপরই স্বেচ্ছাবসর নেন তিনি।
গৌরববাবুর ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। অবসাদ দূর করতে বৈষ্ণব মতাবলম্বী হয়ে ধর্মে মন দিয়েছিলেন। বৈষ্ণবদের বেশ কিছু অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন।