কলকাতা, 9 মার্চ: অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে আলোচনা চেয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের (Chandrima Bhattacharya) কটাক্ষের মুখে পড়ল বিরোধী দল । বৃহস্পতিবার বিধানসভার প্রথমার্ধে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যু নিয়ে আলোচনা চেয়ে অ্যাডজনমেন্ট মোশন আনে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি (BJP on Adenovirus at Assembly)। কিন্তু অধ্যক্ষ এই বিষয়ে নতুন করে আলোচনার সুযোগ দেননি । সেই সময় বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । গোটা বিষয়টি নিয়ে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে বিবৃতি দেওয়ার কথা বলেন অধ্যক্ষ ।
এদিকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে বিধানসভায় বলতে উঠে বিরোধী দলকে কটাক্ষ করে বলেন, গত সোমবার অর্থাৎ 6 মার্চ এই নিয়ে রাজ্য বিধানসভায় বিবৃতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিরোধীরা কেউ সেই সময় হাউসে ছিলেন না । এখন মূল প্রস্তাব দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সভাকে মুলতুবি করার প্রচেষ্টা করছেন । পরিষদীয় রাজনীতি করছেন ৷ যখন মুখ্যমন্ত্রী বলেন তখন হাউসে থাকতে হয় । এরপরই রাজ্য বিধানসভার মধ্যে হৈচৈ করতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা । এই সময় অধিবেশনের প্রথম অর্ধ মুলতুবি ঘোষণা করে দেন অধ্যক্ষ । এরপর বিরোধীরা বিধানসভার লবিতে এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখান এবং সাংবাদিক সম্মেলন করে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন ।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে রাজ্য বিধানসভার অন্দরে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই সময় তিনি এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছিলেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে 19 জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে । যার মধ্যে 6 জনের মৃত্যু অ্যাডিনো ভাইরাসের কারণে হয়েছে । এর মধ্যে 13 জনের কো-মর্বিডিটি ছিল । একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, করোনার পর এর একটা প্রতিক্রিয়া হচ্ছে । সে কারণেই এই বিষয়টা নিয়ে অত্যন্ত সাবধানে থাকতে হবে ।
এদিন এর পালটা হিসাবে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল ও বিজেপির চিকিৎসক বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী । তাঁদের দাবি, রাজ্যে শিশু চিকিৎসার ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই । সরকারের ভুল নীতির জন্য কোল শূন্য হচ্ছে মায়েদের । অধিকাংশ জায়গায় সঠিক চিকিৎসাটুকুও পাওয়া যাচ্ছে না ।
মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া কো-মর্বিডিটি তত্ত্ব এদিন খারিজ করে দিয়ে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল বলেন, "সেই করোনার সময় থেকে যখনই সরকারি ব্যর্থতা সামনে আসছে তখনই কো-মর্বিডিটির কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী । আসলে এসবের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা লুকোতে চাইছেন তিনি । এই সরকারের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলছেন তাপমাত্রা বাড়লেই অ্যাডিনো ভাইরাসের সংক্রমণ কমে যাবে । তাহলে কেন হাসপাতালগুলো খুলে রেখেছেন । এগুলো সব বন্ধ করে দিন ৷ পরিস্থিতি এত গুরুতর হওয়ার পর হেল্পলাইন খোলার কথা বলছেন । কেন এতদিন খোলা হল না ? তাহলে তো এই বাচ্চার প্রাণ যেত না।"
আরও পড়ুন : অ্যাডিনো ভাইরাসে শিশু মৃত্যুতে বিধানসভায় উদ্বেগ প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর