কলকাতা, 15 জুন : রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে আজ ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ এবার তা নিয়েই রাজ্যপালকে নিশানা করল রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর ৷ স্বরাষ্ট্র দফতরের থেকে একাধিক টুইট করা হয় ৷ টুইটে রাজ্যপালের দেওয়া চিঠি নিয়ে রাজ্য সরকার হতাশা প্রকাশ করেছে ৷ ধনকড়ের চিঠিকে 'অতিরঞ্জিত'ও বলা হয় স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে ৷
মঙ্গলবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেড় পাতার একটি চিঠি দেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ চিঠির শুরুতেই ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান জানতে চান রাজ্যপাল ৷ তাঁর দাবি, একুশের ভোট পর্ব মেটার পর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে ৷ বহু মানুষ খুন হয়েছেন, কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে, মহিলাদের সম্ভ্রমহানি করা হয়েছে, অথচ মুখ্যমন্ত্রী নীরব থেকেছেন ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আচরণে তিনি যে অত্যন্ত ব্যথিত, তা স্পষ্ট ভাষাতেই জানিয়েছেন রাজ্যপাল ৷
চিঠিতে ধনকড় আরও অভিযোগ করেন, আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে সরকারের তরফে কোনও উদ্যোগই নেওয়া হয়নি ৷ এমনকি নতুন সরকার গঠনের পর এখনও পর্যন্ত মন্ত্রিসভার কোনও বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রীকে এই নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করেন ধনকড় ৷ রাজ্যপালের মতে, এর ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে ৷ যা গণতন্ত্রের কাছে অত্যন্ত লজ্জার ৷ ধনকড়ের ভাষায় স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এত করুণ পরিস্থিতি রাজ্যে আগে কখনও তৈরি হয়নি ৷
আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar : আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সরব রাজ্যপাল, চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রীকে
এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়ার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করা হয় রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে ৷ একাধিক টুইটে রাজ্যপালের দেওয়া চিঠির সমালোচনা করা হয় ৷ রাজ্য জানায়, রাজ্য বিস্মিত এই বিষয়টি দেখে যে, এই চিঠির সঙ্গে সত্যের কোনও সম্পর্ক নেই ৷ রাজ্যপালের এমন আচরণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার হতাশ এবং শঙ্কিত একথা জানানো হয় টুইটে ৷ মুখ্যমন্ত্রীকে টুইট করে রাজ্যপাল যে চিঠি দিয়েছে, তাতে রাজ্যপাল প্রথাগত ধারা লঙ্ঘন করেছেন বলে দাবি করা হয় স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে ৷ এইভাবে চিঠি দেওয়াকে নীতির পরিপন্থী বলে মনে করে রাজ্য ৷
আরও পড়ুন : Jagdeep Dhankhar : রাজ্যপালের কড়া চিঠিতে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে তৃণমূল
অন্যদিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই রাজ্যপালের এই চিঠি বলে মনে করা হয় তৃণমূলের তরফ থেকে ৷ রাজ্যপালের চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে তৃণমূলের তরফ থেকে ৷ রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, নির্বাচনের আগে যখন রাজ্যপাল তাঁর সাংবিধানিক পদ মর্যাদাকে লুটিয়ে দিয়ে রাজ্যে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন এবং রাজ্যের মানুষ তা প্রত্যাখ্যান করেন, তখন থেকেই এই চিত্রনাট্য চলছে ৷ ধনকড়ের বিরুদ্ধে কুণালের অভিযোগ, ‘‘এই মুহূর্তে তিনি রাজ্যপাল নন, তিনি বিজেপির দালাল ৷ আর রাজভবনটা হল বিজেপি পার্টি অফিস ৷’’