কলকাতা, 26 এপ্রিল: গত 24 ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন 15,889 জন ৷ মৃত্যু হয়েছে 57 জনের ৷ দিন পনেরো আগে অবধি পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল 'মাত্র' সাড়ে চার হাজারের কিছু কম ৷ পনেরো দিনেই সেই সংখ্যাটি লাফিয়ে প্রায় চারগুণ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী হতে পারে খুঁজতে গেলে যেটা পাওয়া যাবে তা হল গণতন্ত্রের উৎসব বিধানসভা নির্বাচন এবং তার প্রচার-প্রস্তুতি ৷ এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে এর দায় কার?
নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রচার এবং নির্বাচন করানোর জন্য প্রাথমিক গাইডলাইন দিলেও তা কতটা মেনে চলা হচ্ছে বা আদৌ মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য করার দায়বদ্ধতা তেমন অনুভব করতে দেখা যায়নি নির্বাচন কমিশনকে ৷ বিশাল বিশাল জনসভা অবলীলায় চলতে দেওয়া হয়েছে রাজ্যে ৷ মিটিং-মিছিল-রোড শো সবই চলেছে তাল মিলিয়ে ৷
রাজনৈতিক দলগুলিও এই পরিস্থিতিতে পুরোমাত্রায় যে যার মতো করে প্রচার চালিয়ে গিয়েছে ৷ সামাজিক দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে দেদার মিটিং-মিছিল চালিয়েছে ৷ এক-একটি দল নিজেরা সভার আয়োজন করেছে আর বিরোধী দলের বিরুদ্ধে করোনা বিধি না মানার অভিযোগ তুলেছে ৷ ন্যূনতম দায়বদ্ধতা অনুভব করেনি কেউই ৷ পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাওয়ার মুখে কোনও কোনও দল অনলাইন প্রচারের কথা ঘোষণা করেছে ৷ বলা বাহুল্য সেই পদক্ষেপ হয়েছে অনেক দেরিতে ৷
রাজ্য সরকার ভরা করোনা কালেও শুধুই ভোট নিয়েই ব্যস্ত ৷ করোনা বিধি আরোপ করে তা ঠিকমতো লাগু হয়েছে কিনা, রাজ্যবাসী সেগুলি ঠিকঠাক মেনে চলছেন কিনা ভোটের ব্যস্ততায় তা দেখার সময় হয়নি রাজ্য সরকারের ৷ আলাদা পদক্ষেপ তো অনেক দূরের কথা ৷ করোনার টিকাকরণ রাজ্যে চালু করলেও বাকি বিষয়গুলি নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় রাজ্য সরকারের কাছে ছিল না ৷
সবশেষে সবথেকে বেশি ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষও বাদ যাবেন না দায়বদ্ধতার তালিকা থেকে ৷ রাজনীতির টানে মিটিং-মিছিল-সভা সবেতেই হাজিরা দিয়েছেন ৷ সাধারণ বিধি-নিষেধ মানাটাও গুরুত্বপূর্ণ মনে করেননি ৷ এটা জানার পরও যে প্যানডেমিকের মধ্যে সবচাইতে খারাপ অবস্থা হবে তাঁদেরই ৷
অতএব বলা যায় এ দায় একা কারো নয়, এ দায় ভাগ করে নেওয়ার !
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সরকারের হঠাৎ সীমান্ত বন্ধের সিদ্ধান্তে বিপাকে বহু মানুষ