ETV Bharat / state

কেষ্ট গড়ে চ্যালেঞ্জ কমিশনের, জোড়াফুলের কাঁটা মুর্শিদাবাদ-মালদা

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে সংখ্যাতত্বের দিক থেকে দেখতে গেলে মূলত তৃণমূল কংগ্রেস এবং কিছুটা কংগ্রেস বা সংযুক্ত মোর্চা এগিয়ে বিজেপির থেকে । তবে তাঁরা এটাও মনে করেন যে এই সব সংখ্যাতত্ব বহুসময় ওলটপালট হয়ে যায় যখন প্রবল পরিবর্তনের হওয়া বইতে থাকে ।

Bengal Election 2021
ছবি
author img

By

Published : Apr 28, 2021, 8:09 PM IST

Updated : Apr 28, 2021, 10:16 PM IST

কলকাতা, 28 এপ্রিল: বৃহস্পতিবার রাজ্যে বিধানসভার অষ্টম দফার নির্বাচনে যে 35 আসনে ভোট, সেই আসনগুলি ছড়িয়ে রয়েছে কলকাতা, মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম, এই চার জেলার মধ্যে ।

চৌরঙ্গি, এন্টালি, বেলেঘাটা, জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর, মানিকতলা এবং কাশীপুর-বেলগাছিয়া --- কলকাতার এই সাত আসনে জয় নিয়ে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস একপ্রকার নিশ্চিত । অবাঙালি অধ্যুষিত জোড়াসাঁকো আসনে বেশ কিছুটা লড়াইয়ের জায়গায় বিজেপি থাকলেও, এই আসনে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত নয় গেরুয়া শিবির । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলেরও ধারণা যে এই কেন্দ্রগুলিতে তৃণমূল কংগ্রেসের জয় প্রায় সুনিশ্চিত ।

কিন্তু বাকি 28 আসন যার মধ্যে আছে মালদা জেলার ছ'টি, মুর্শিদাবাদের এগারোটি এবং বীরভূমের এগারোটি আসন, এই বেশ কিছু আসন নিয়ে তৃণমূলের এক শ্রেণীর কপিলার চিন্তার ভাঁজ রয়েছে । এমনিতেই মুর্শিদাবাদ এবং মালদা জেলাতে চিরকালই কংগ্রেসের তুলনাতে তৃণমূল শক্তি অনেকটাই কম । 2016 বিধানসভা নির্বাচনের পর যদিও এই দুই জেলায় কংগ্রেসের ক্রমাগত শক্তিক্ষয় হয়েছে এবং তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু এখনও কংগ্রেস এই দুই জেলাতে একটা বড় ফ্যাক্টর । 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপুল সাফল্য এবং তৃণমূল কংগেসের দাপটের মধ্যেও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ এবং মালদা থেকে একটি করে লোকসভা আসন ধরে রাখতে সক্ষম হয় কংগ্রেস ।

এবার আবার কংগ্রেসের সাথে জোট হয়েছে বামফ্রন্ট এবং আব্বাস সিদ্দিকীর অল ইন্ডিয়া সেক্যুলার ফ্রন্ট বা এআইএসএফের । তো সংযুক্ত মোর্চার মিলিত শক্তি সংখ্যালঘু ভোট কতটা টানতে পারবে এবং তাতে কতটা লাভবান হবে বিজেপি এই সংখ্যালঘু ভোট ভাগের ফলে সেটাই চিন্তা শাসক শিবিরের । মনে রাখতে হবে এই 2019 সালে এই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা জেলা থেকেই মালদা (উত্তর) লোকসভা আসনটি ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি কংগ্রেসের হাত থেকে ।

আরও পড়ুন : অষ্টম দফার আগে মুর্শিদাবাদের ভোটারদের উদ্দেশ্যে ভিডিয়ো বার্তা অধীরের

এরপর আবার 2019 সালেপ পর থেকে ধারাবাহিক শক্তিবৃদ্ধি করেছে বিজেপি বীরভূম জেলাতেও । জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টর আগের সেই একছত্র প্রতিপত্তিও এখন অনেক কম । এরপর আবার শেষ মুহূর্তে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপারকে বদলে আনা হয়েছে দুঁদে এবং দাপুটে আইপিএস অফিসার নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে । তাই 2011 থেকে যে বীরভূমে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের একছত্র আধিপত্য সেই জেলাতও এইবার একেবারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না তৃণমূল কংগ্রেস ।

বিজেপি নিজেও জানে শেষ দফার যে 35 টি আসনে ভোট হচ্ছে সেখানে তাঁদের সাংগঠনিক শক্তি তুলনামূলক ভাবে কম । তাই সোমবার কলকাতাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি, জেপি নাড্ডা বলেন যে সপ্তম দফার নির্বাচনের পরই বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞনীদের মতে এই দাবি হলো একধরণের মনস্তাত্ত্বিক খেলা যাতে শেষ দফার ভোটারদের যতখানি সম্ভব প্রভাবিত করা যাই এই প্রচারের শেষ বেলায় ।

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় থেকে ফিরহাদ হাকিম প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন যে ষষ্ঠ দফার পরই তৃণমূল কংগ্রেস ম্যাজিক ফিগার পেয়ে গিয়েছে এবং শেষ দুই দফা হল শুধুমাত্র তৃণমূল সংখ্যা বাড়ানোর খেলা ।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে সংখ্যাতত্বের দিক থেকে দেখতে গেলে মূলত তৃণমূল কংগ্রেস এবং কিছুটা কংগ্রেস বা সংযুক্ত মোর্চা এগিয়ে বিজেপির থেকে । তবে তাঁরা এটাও মনে করেন যে এই সব সংখ্যাতত্ব বহুসময় ওলটপালট হয়ে যায় যখন প্রবল পরিবর্তনের হওয়া বইতে থাকে ।

কে শেষ হাসি হাসবে? শাসকদল না কি বিজেপি? নাকি ফিনিক্স পাখির মতো ভেসে উঠবে সংযুক্ত মোর্চা? জানতে গেলে অপেক্ষা করতেই হবে 2 মে পর্যন্ত ।

কলকাতা, 28 এপ্রিল: বৃহস্পতিবার রাজ্যে বিধানসভার অষ্টম দফার নির্বাচনে যে 35 আসনে ভোট, সেই আসনগুলি ছড়িয়ে রয়েছে কলকাতা, মালদা, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম, এই চার জেলার মধ্যে ।

চৌরঙ্গি, এন্টালি, বেলেঘাটা, জোড়াসাঁকো, শ্যামপুকুর, মানিকতলা এবং কাশীপুর-বেলগাছিয়া --- কলকাতার এই সাত আসনে জয় নিয়ে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস একপ্রকার নিশ্চিত । অবাঙালি অধ্যুষিত জোড়াসাঁকো আসনে বেশ কিছুটা লড়াইয়ের জায়গায় বিজেপি থাকলেও, এই আসনে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত নয় গেরুয়া শিবির । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলেরও ধারণা যে এই কেন্দ্রগুলিতে তৃণমূল কংগ্রেসের জয় প্রায় সুনিশ্চিত ।

কিন্তু বাকি 28 আসন যার মধ্যে আছে মালদা জেলার ছ'টি, মুর্শিদাবাদের এগারোটি এবং বীরভূমের এগারোটি আসন, এই বেশ কিছু আসন নিয়ে তৃণমূলের এক শ্রেণীর কপিলার চিন্তার ভাঁজ রয়েছে । এমনিতেই মুর্শিদাবাদ এবং মালদা জেলাতে চিরকালই কংগ্রেসের তুলনাতে তৃণমূল শক্তি অনেকটাই কম । 2016 বিধানসভা নির্বাচনের পর যদিও এই দুই জেলায় কংগ্রেসের ক্রমাগত শক্তিক্ষয় হয়েছে এবং তৃণমূলের শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু এখনও কংগ্রেস এই দুই জেলাতে একটা বড় ফ্যাক্টর । 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপুল সাফল্য এবং তৃণমূল কংগেসের দাপটের মধ্যেও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ এবং মালদা থেকে একটি করে লোকসভা আসন ধরে রাখতে সক্ষম হয় কংগ্রেস ।

এবার আবার কংগ্রেসের সাথে জোট হয়েছে বামফ্রন্ট এবং আব্বাস সিদ্দিকীর অল ইন্ডিয়া সেক্যুলার ফ্রন্ট বা এআইএসএফের । তো সংযুক্ত মোর্চার মিলিত শক্তি সংখ্যালঘু ভোট কতটা টানতে পারবে এবং তাতে কতটা লাভবান হবে বিজেপি এই সংখ্যালঘু ভোট ভাগের ফলে সেটাই চিন্তা শাসক শিবিরের । মনে রাখতে হবে এই 2019 সালে এই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা জেলা থেকেই মালদা (উত্তর) লোকসভা আসনটি ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি কংগ্রেসের হাত থেকে ।

আরও পড়ুন : অষ্টম দফার আগে মুর্শিদাবাদের ভোটারদের উদ্দেশ্যে ভিডিয়ো বার্তা অধীরের

এরপর আবার 2019 সালেপ পর থেকে ধারাবাহিক শক্তিবৃদ্ধি করেছে বিজেপি বীরভূম জেলাতেও । জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টর আগের সেই একছত্র প্রতিপত্তিও এখন অনেক কম । এরপর আবার শেষ মুহূর্তে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপারকে বদলে আনা হয়েছে দুঁদে এবং দাপুটে আইপিএস অফিসার নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে । তাই 2011 থেকে যে বীরভূমে ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের একছত্র আধিপত্য সেই জেলাতও এইবার একেবারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারছে না তৃণমূল কংগ্রেস ।

বিজেপি নিজেও জানে শেষ দফার যে 35 টি আসনে ভোট হচ্ছে সেখানে তাঁদের সাংগঠনিক শক্তি তুলনামূলক ভাবে কম । তাই সোমবার কলকাতাতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি, জেপি নাড্ডা বলেন যে সপ্তম দফার নির্বাচনের পরই বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞনীদের মতে এই দাবি হলো একধরণের মনস্তাত্ত্বিক খেলা যাতে শেষ দফার ভোটারদের যতখানি সম্ভব প্রভাবিত করা যাই এই প্রচারের শেষ বেলায় ।

অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় থেকে ফিরহাদ হাকিম প্রথম থেকেই দাবি করে আসছেন যে ষষ্ঠ দফার পরই তৃণমূল কংগ্রেস ম্যাজিক ফিগার পেয়ে গিয়েছে এবং শেষ দুই দফা হল শুধুমাত্র তৃণমূল সংখ্যা বাড়ানোর খেলা ।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে সংখ্যাতত্বের দিক থেকে দেখতে গেলে মূলত তৃণমূল কংগ্রেস এবং কিছুটা কংগ্রেস বা সংযুক্ত মোর্চা এগিয়ে বিজেপির থেকে । তবে তাঁরা এটাও মনে করেন যে এই সব সংখ্যাতত্ব বহুসময় ওলটপালট হয়ে যায় যখন প্রবল পরিবর্তনের হওয়া বইতে থাকে ।

কে শেষ হাসি হাসবে? শাসকদল না কি বিজেপি? নাকি ফিনিক্স পাখির মতো ভেসে উঠবে সংযুক্ত মোর্চা? জানতে গেলে অপেক্ষা করতেই হবে 2 মে পর্যন্ত ।

Last Updated : Apr 28, 2021, 10:16 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.