কলকাতা 26 এপ্রিল: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতের আংটি সংক্রান্ত মামলায় বুধবার প্রেসিডেন্সি জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তীকে তীব্র ভর্ৎসনা করল নগর দায়রা আদালত । শুনানিতে বিচারক দেবাশিস চক্রবর্তীকে বলেন, "ন'মাস ধরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আংটি খোলা হয়নি ৷ আর আদালতে মামলা হতেই ন'মিনিটেই আংটি খোলা হয়ে গেল !" পালটা জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, "পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে ব্যথা থাকার জন্য তাঁর আংটি খোলা সম্ভব হয়নি ।"
এদিন শুনানিতে ইডির আইনজীবী বলেন, "গরু পাচার মামলা ও কয়লা পাচার মামলায় দেবাশিস চক্রবর্তী সব সময় পোটাকেশন দিয়ে আসছে । পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে বসে প্রভাব খাটাচ্ছেন । এর আগে বিকাশ মিশ্রর ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম মানেননি তিনি । " বিচারক বলেন, " কোথাও প্রমাণ পেলাম না পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ফোলা ছিল । নয় মাস ধরে আংটি খোলা হয়নি । আদালতে বলার পর নয় মিনিটে আংটি খোলা হয়েছে । গত নয় মাস কেন আংটি খোলা হয়নি । দেবাশিসবাবু আপনার কথায় কোর্ট চলবে ! আপনি যা উত্তর দিয়েছেন তা সঠিক নয় । আপনি সর্বশক্তিমান নন । আপনি বলতে পারলেন না জেলে বসে হাতে আংটি পড়ে থাকতে পারবেন না ! আমরা আইনের বিষয় না বুঝলে উদ্ধতণ কর্তপক্ষের কাছে পাঠাই । আর আপনি নিজে নিজে সব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ?"
জেল সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, "আংটি খোলার চেষ্টা হয়েছিল, খোলা যায়নি । পার্থ চট্টোপাধ্যায় একটি দরখাস্ত দিয়েছিলেন । আমার ভুল হয়ে গিয়েছে । আংটি খোলার চেষ্টা হয়েছিল । তাঁর আঙুল ফোলা ছিল । খোলার জন্য চেষ্টা করেছিলেন তিনি কিন্তু ব্যাথা ছিল আঙুলে । পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অসুস্থতার জন্য চিকিৎসা চলছে । আমার ভুল আমি এইভাবে লিখতে অভ্যস্ত নই ।"
আদালতে বসে লিখিতভাবে দেবাশিস চক্রবর্তী সমস্ত বিষয় জানালেন । তিনি বলেন, "বুঝতে ভুল হয়েছে । এবার থেকে সঠিকভাবে নিয়ম মানব ।" প্রসঙ্গত, আগের দিন শুনানিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতের আংটির কথা আদালতে উল্লেখ করে ইডি ৷ আদালতে ইডির আইনজীবী জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এতটাই প্রভাবশালী যে এখনও হাতের আংটি পর্যন্ত খোলেননি । তারপরই বিচারক প্রেসিডেন্সি জেল সুপারকে এদিন আদালতে ডেকে পাঠান ।
আরও পড়ুন: হাতে আংটি কেন ? সিবিআইয়ের প্রশ্নে পার্থকে বিচলিত না হতে বললেন বিচারক