কলকাতা, 25 এপ্রিল: টাটার গাড়ি কারখানা থেকে বঞ্চিত হয়েছে সিঙ্গুর । তবে সেই সিঙ্গুরেই এবার গড়ে উঠতে চলেছে এশিয়ার সবথেকে বৃহত্তম পাইকারী সবজির বাজার । শুধু তাই নয়, এই পাইকারী সবজির বাজারকে কেন্দ্র করে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের নয়া স্বপ্ন দেখছে বাংলা। রাজ্যে বৃহত্তম পাইকারী বাজারের কথা বললেই সকলের পোস্তার নামই প্রথমে মনে পড়ে । কিন্তু দিনে দিনে পোস্তায় বাজার সম্প্রসারণ একটা বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মমতা সরকারের কাছে । ইতিমধ্যেই সমগ্র বাজারটা এতটাই ঘিঞ্জি অবস্থায় এসে পৌঁছেছে নতুন করে তাতে সম্প্রসারণের সুযোগ প্রায় নেই বললেই চলে । কিন্তু গোটা রাজ্য তথা দক্ষিণবঙ্গের ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বার্থেই একটা বৃহত্তর পাইকারি বাজার প্রয়োজন । যেখানে অন্তত এক ছাতার তলায় প্রয়োজনের সবটাই মিলবে ।
রাজ্যবাসীর সেই প্রয়োজন মেটাতেই তৈরি হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম পাইকারি বাজার । তাও আবার সকলের পরিচিত সিঙ্গুরেই । এখনও পর্যন্ত যতটুকু তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাতে সিঙ্গুরের ইন্দ্রখালিতে 340 একর জমির উপরে গড়ে উঠবে এই বাজার । আর এই পাইকারি বাজারের পিছনে পোস্তার ব্যাবসায়ী সমিতিরও একটা যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে । এখনও পর্যন্ত যে অগ্রগতির খবর পাওয়া গিয়েছে তাতে রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতর এবং পোস্তা ব্যবসায়ী সমিতি যৌথভাবে এই পাইকারি বাজার তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে । প্রাথমিকভাবে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই প্রকল্পের জন্য জমি চিহ্নিত করণের কাজ শেষ হয়েছে । এখনও পর্যন্ত এখানে আনুমানিক বিনিয়োগের পরিমাণ 750 কোটি টাকা । মনে করা হচ্ছে, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে ।
এই প্রকল্পটি সম্পর্কে বলতে গিয়ে রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, "এই প্রকল্পটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা স্বপ্নের প্রকল্প । কলকাতাকে যানজট মুক্ত করতে পোস্তা বাজারকে স্থানান্তরিত করার বিষয় দীর্ঘদিন ধরেই ভাবনা-চিন্তা হচ্ছিল । আর সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে । আগামিদিনের দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি সবজির বাজার হতে চলেছে সিঙ্গুর । রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সবজি বহনকারী ট্রাকগুলি এসে প্রস্তাবিত বাজারে আনলোড করবে এবং তারপর সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন শহরের বাজারে সেগুলিকে নিয়ে যাওয়া হবে ।"
বেচারাম মান্না আরও জানিয়েছেন, সবজি বাজারে তিন শিফটে 24 ঘণ্টা কাজ চলবে । রাজ্যের বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীদের জন্য এখানে আধুনিক রেস্ট হাউসের সুবিধা থাকবে । থাকছে কোল্ড স্টোরেজ, একটি ফায়ার স্টেশন, একটি পেট্রোল পাম্প, একটি পাওয়ার সাবস্টেশন, একটি পার্কিং জোন ইত্যাদির সুবিধাও । মন্ত্রীর কথায়, এই বাজারের জন্য প্রয়োজনীয় জমির বিষয়ে এই মুহূর্তে কোনও সমস্যা নেই । ইতিমধ্যেই এই প্রকল্প রূপায়ণের লক্ষ্যে জমিদাতারা জমি দিতে রাজি হয়েছে । ফলে আগামিদিনে এই প্রকল্প রূপায়ণে কোনও বাধাই নেই রাজ্য সরকারের ।
আরও পড়ুন: ঊর্ধ্বমুখী সোনার দাম ! অক্ষয় তৃতীয়াতেও বাজার না হওয়ায় হতাশ বিক্রেতারা