কলকাতা, 15 নভেম্বর: ক্রাইম থ্রিলার জাতীয় সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ দেখতে ভালোবাসে সকলেই । কিন্তু অনেকে সেই সিনেমা দেখেই হয়ে উঠছে ঠান্ডা মাথার খুনি । সম্প্রতি সামনে এসেছে এরকম অনেক ঘটনা ৷
দিল্লির নৃশংস শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ডে তোলপাড় হয়ে উঠেছে সারা দেশ ৷ যেখানে খোদ প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা 6 মাস আগে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে (Shraddha Murder Case) ৷ এর পর তাঁর দেহ 35টি টুকরো করে ৷ এমনকী দেহাংশগুলি রাখতে নতুন ফ্রিজ কেনে আফতাব ৷ এর পর ফ্রিজের ভিতরে প্যাকেটে করে দেহাংশগুলি লুকিয়ে রাখে ৷ নিয়মিত অফিসেও জেতে আফতাব ৷ আর রোজ রাত 2টো নাগাদ মেহরৌলির জঙ্গলের বিভিন্ন প্রান্তে দেহাংশগুলি ফেলে আসত অভিযুক্ত যুবক ৷ পুলিশকে সে জানিয়েছে, দেহ লোপাটের জন্য ইংরেজি ক্রাইম সিরিজ দেখে পরিকল্পনা সাজিয়ে ছিল ৷
শুধু দিল্লির মেহরৌলির ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড নয়, বেশ কিছুদিন আগে মধ্যপ্রদেশেও ঘটেছিল এমনই এক ঘটনা । একটি সিনেমা দেখে পাঁচটি খুন করেছিল এক ব্যক্তি । তবে শুধু রাজ্যের বাইরে নয়, খোদ কলকাতাতেও ঘটেছে এরকম অনেক ঘটনা । সিনেমা দেখেই দুই কিশোর খুন করেছিল । এমনকী সেই দেখেই সাজিয়েছিল প্রমাণ লোপাটের কৌশল ।
কয়েকমাস আগে সামনে এসেছিল বহরমপুরে মেসে কলেজ ছাত্রীকে হত্যা করার ঘটনা ৷ সেখানে সুতপা চৌধুরী নামে ওই যুবতীকে নৃশংসভাবে ছুরি দিয়ে খুন করে তাঁর প্রেমিক ৷ এমন একাধিক ঘটনা একের পর এক ঘটে চলেছে দেশে । তবে কি এই ক্রাইম থ্রিলার জাতীয় সিনেমা বা ওয়েব সিরিজই হয়ে উঠছে সমাজের ভিলেন ?
এই বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ (Psychiatrist) স্মরণিকা ত্রিপাঠী বলেন, "এই বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করে ওই ব্যক্তি কোন পরিস্থিতিতে রয়েছে তার উপর । কেউ হয়তো পারিপার্শ্বিক ভাবে বিপর্যস্ত । তখন সে হয়তো কোন সিনেমা দেখছে । আর ওই সিনেমাটিতে সমস্যার সমাধান হয়তো কোন খুন বা অসামাজিক কাজ রয়েছে । মানুষ সেটা দেখে তখন তার ওটাই উচিত বলে মনে করেন । আবার অনেক সময় সিনেমা আমাদের অনুপ্রাণিত করতে পারে না । এমন হয় যে ওই সময় আমায় ভালো ভালো সিনেমা অনুপ্রাণিত করে । আসল বিষয় আমার নেচার নির্ভর আমার কাজের উপর ।"
আরও পড়ুন: শ্রদ্ধার বাকি দেহাংশ উদ্ধারে আফতাবকে নিয়ে মেহরৌলির জঙ্গলে পুলিশ
তবে এর পাশাপাশি রয়েছে আরও একটি প্রশ্ন। অনেকেই মনে করছেন সিনেমার হত্যা বা ক্রাইমের দৃশ্যগুলি অতো স্বচ্ছভাবে না দেখানোই ভালো । এর জন্যও পরিস্থিতি আরও বিপাকে যাচ্ছে । তবে এই বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, "ওই সিনটা না-হয় আমরা বন্ধ করে দিলাম । তাতেও কি আমাদের মানসিকতার কোনও বদল আসবে ? আমাদের নিজেদের বদলাতে হবে । এত সচেতনতার অনুষ্ঠান হয়। সেখানে এই গুলিও আমরা তুলে ধরি । যদি আমরা মানসিকভাবে বদলে যাই । তবে কোনও সিনেমার কোনও নেগেটিভ দৃশ আমাদের অনুপ্রাণিত করতে পারবে না ।"