কলকাতা, ১৪ মে : ঘূর্ণিঝড় ফণী রাজ্যের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার পর বেড়েছে গরম । হাঁসফাঁস করছে শহরবাসী । একই অবস্থা আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রাণীদেরও । তাই, গরম থেকে রেহাই পেতে তাদের জন্যও খাবারের রোজনামচায় বদল ঘটাল চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ।
দই-ভাত, লস্যি আর ORS-র জল । হঠাৎ করে বদলে গেছে চিড়িয়াখানার প্রাণীদের খাবারের তালিকা । ভল্লুক খাচ্ছে দই-ভাত, শিম্পাঞ্জিকে দেওয়া হচ্ছে লস্যি। সারাদিন ধরে মেপে মেপে খাওয়ানো হচ্ছে ORS-র জল । গরমে মাংসতে যেন অনীহা বাঘ-সিংহের । তাই, এই প্রচণ্ড গরমে আলিপুর চিড়িয়াখানায় চালু করা হয়েছে বিশেষ ডায়েট ।
বৈশাখের শেষ প্রহরে দক্ষিণবঙ্গের পারদ ঊর্ধ্বমুখী। ক'দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় তাপমাত্রা 40 ডিগ্রির বেশি থাকছে। কলকাতাতেও অস্বস্তিকর গরমে নাজেহাল শহরবাসী।
গরম থেকে বাঁচতে ছাতা সানগ্লাসের ব্যবহার করছে শহরবাসী । খাওয়া-দাওয়া থেকে পোশাক-আশাক সবকিছুই চলছে গরমের কথা মাথায় রেখে। আর চিড়িয়াখানার প্রাণীদের রক্ষা করতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ । পাখি থেকে সব জীবজন্তুকে সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটা নাগাদ স্নান করানো হচ্ছে। নিয়মিত ভাবে সারা দিন ধরে দেওয়া হচ্ছে ORS-র জল । যাতে চিড়িয়াখানার বাসিন্দারা গরমে ডিহাইড্রেট না হয়ে পড়ে । ভল্লুককে দেওয়া হচ্ছে দই-ভাত। শিম্পাঞ্জিকে খেতে দেওয়া হচ্ছে লস্যি । পাখি ও অন্য প্রাণীদের খাবারের তালিকায় ফলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রসালো ফল যেমন আঙুর, তরমুজ, শসা এই ধরনের ফল বেশি দেওয়া হচ্ছে। হরিণ, জ়েব্রা, হাতিদের বেশি পরিমাণে ঘাস পাতা খেতে দেওয়া হচ্ছে। যাতে এই গরমে সুস্থ থাকে। বাঘ, সিংহ, লেপার্ডদের গরমে খাওয়ায় অনীহা আসে। নিয়মিত 8 কিলো মাংস দেওয়া হয়। এখন গরমের জন্য দু-আড়াই কিলো করে মাংস কম দেওয়া হচ্ছে। মাংস খাওয়াতে গরমে অরুচি চলে আসে বনের রাজার। তাই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস কুমার।
নিয়মিতভাবে চিকিৎসকরা নজর রাখছেন যাতে গরমের তাপ লেগে কোনও প্রাণী অসুস্থ না হয়ে পড়ে। বাঘ, সিংহ, জ়েব্রার মতো প্রাণীদের ঘরে পাখা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে । যাতে দুপুরে পাখার তলায় শুয়ে বিশ্রাম নিতে পারে। হাতিদের জন্য বিশেষ স্নানের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে তারা ইচ্ছেমতো স্নান করে গা ঠান্ডা করে নিতে পারে। সাপদের জন্য পাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাঁদরের ঘরের মাথার উপরে খড়ের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। আবার গরম থেকে বাঁচাতে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত প্রাণী ক্যাঙারুকে ঘিরে ফেলা হয়েছে খসখসি দিয়ে। রোদ পড়ে গেলে বেলা তিনটের পর বার করা হচ্ছে ক্যাঙারুদের।