কলকাতা, 28 সেপ্টেম্বর: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসমিতির বৈঠকের পরও রয়ে গেল একাধিক প্রশ্ন। দীর্ঘ 12 ঘণ্টার বৈঠকের পরেও মিলল না কোনও রফা সূত্র। এই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট পেশ করার কথা না-থাকলেও পড়ুয়া এবং শিক্ষকদের চাপের মুখে সেই রিপোর্ট পেশ করতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ওই রিপোর্টে যে 35 জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের হস্টেল থেকে বহিষ্কার করা নিয়ে কথা হয়েছে বৈঠকে। তবে কর্মসমিতির বৈঠকের পর রিপোর্ট যাবে অ্যান্টি ব়্যাগিং স্কোয়াডের কাছে। তাদের সিদ্ধান্তের পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বৈঠক শেষে উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ জানিয়েছেন, আলোচ্য বিষয়গুলি নিয়ে কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। বৈঠক 'অসম্পূর্ণ'।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। যে কমিটি সম্পূর্ণ ঘটনার তদন্ত করেছিল। 46 পাতার রিপোর্ট জমা দেয় কমিটি। সেই রিপোর্টের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। ওই রিপোর্টে অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তারপর কর্মসমিতির এই বৈঠকে ওই রিপোর্টে পেশ না-করার কথা শোনা যায়। গতকালের কর্মসমিতির বৈঠকের আগে অল স্টকহোল্ডার বৈঠক হয় যেখানে উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য।
ওই বৈঠকেই জুটা-সহ অন্যা সংগঠন প্রশ্ন তোলে, কেন সাত মাসের মাথায় হওয়া কর্মসমিতির এই বৈঠকে পেশ করা হচ্ছে না ৷ সূত্রের খবর, বৈঠক শুরু হওয়ার পর প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ডেঙ্গি নিয়ে কথা হয়। তারপরে পেশ হয় অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্ট। যদিও জানা যাচ্ছে, কর্মসমিতির এই বৈঠকে হস্টেল নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এদিনের বৈঠক চলাকালীন অরবিন্দ ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ দেখায় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। বৈঠক যখন দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যায় তারপর তাদের বিক্ষোভের মাত্রা চরমে পৌঁছয়।
পরবর্তীকালে কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দেন তাঁরা। পড়ুয়াদের পক্ষ থেকে কর্মসমিতির সদস্যদের প্রশ্ন করা হয়েছে কেন হস্টেল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হল না? সেই নিয়ে পরবর্তীতে আবারও বৈঠক চলে কর্মসমিতিদের সদস্যদের মাঝে ৷ এ বিষয়ে আপসুর এক সদস্য সৌর্য গুপ্ত বলেন, "ইউজি হস্টেল আলাদা করার জন্য যে দাবি আমরা জানিয়েছিলাম তা লিখিত আকারে আমাদের জানানো হয়েছে ৷ এছাড়া অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটি ও স্কোয়াডের কাছে অভ্যন্তররীণ রিপোর্ট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ প্রাথমিকভাবে আমাদের এই দাবিই ছিল ৷"
সূত্রের খবর, গতবারের অল স্টেক হোল্ডার বৈঠকের পর উপাচার্য সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বেশ কিছু মন্তব্য করেন। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে পড়ুয়াদের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন। এনিয়ে উপাচার্যকে প্রশ্ন করেন পড়ুয়ারা ৷ লিখিতভাবে উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার কথা জানানো হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে ৷ এদিকে বারো ঘণ্টা পর যখন উপাচার্য বেরোন তখন তিনি জানান বৈঠক অসম্পূর্ণ ৷ তাঁর শরীর খারাপ লাগছে ৷
আরও পড়ুন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ঘিরে প্রশ্ন নাগরিক সমাজের