কলকাতা, 7 অক্টোবর: কামদুনি গণধর্ষণ ও খুনের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার পরিবার এবার দেশের শীর্ষ আদালতে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। একই সঙ্গে, রাজ্য পুলিশ ও একাধিকবার সরকারি আইনজীবী বদল নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। এমন অবস্থায় শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। সেই চিঠিতে কামদুনি কাণ্ডের নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রশাসনিক তত্ত্বাবধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায় জানতে পেরে তিনি খুবই মর্মাহত বলেও এদিন জানিয়েছেন অধীর।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো চিঠিতে অধীর লিখেছেন, "আমাদের রাজ্যের মানুষ ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা এবং অটুট বিশ্বাস রাখে। কিন্তু 10 বছর আগের কামদুনি গণধর্ষণ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ জানতে পেরে আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি। কেন্দ্রীয় আইনসভার একজন প্রবীণ সদস্য হওয়ার কারণে, মাননীয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করার সাহস আমার নেই। কিন্তু, মৃত্যুদণ্ডের সাজা পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে, আমাদের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ভিত্তিতে কম্পন ধরেছে।"
এর সঙ্গেই চিঠিতে রাজ্য সরকারকেও বিঁধেছেন অধীর চৌধুরী ৷ তিনি লিখেছেন, "পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ব্যর্থতা এই সত্যে নিহিত আছে যে সংশ্লিষ্ট রাজ্য পুলিশ অফিসার এবং সিআইডি অফিসাররা অপরাধের নৃশংসতা প্রমাণ করার জন্য সঠিকভাবে তথ্য সরবরাহ করতে পারেনি। এই কারণেই মাননীয় ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটিকে ‘বিস্তৃত ও নৃশংস’ নয় বলে বর্ণনা করেছেন। যাইহোক, এটি একে অপরের প্রতি দোষারোপ করার সময় নয়। বরং শারদীয় উৎসবের প্রাক্কালে নির্যাতিতার কাছের এবং প্রিয়জনদের চোখের জল মুছে ফেলতে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ার সময়।"
অধীর চৌধুরী আরও লিখেছেন, "আমরা সকলেই জানি সন্তানের ক্ষতি বাবা-মায়ের আত্মাকে বেদনাদায়ক করে তোলে। একটি স্থায়ী ক্ষত হিসাবে থেকে যায়। যেখান থেকে বার বার রক্ত বের হয়। এই ধরনের একটি জটিল মানসিক পরিস্থিতিতে, আমি আপনাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করছি যে আপনি নির্যাতিতের পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে আপনার সাথে কথা বলার অনুমতি দিন। যাতে তারা তাদের স্থায়ী যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়।"