কলকাতা, 10 নভেম্বর : অফিসের কাজে কলকাতায় এসেছিলেন ভিন রাজ্যের এক যুবক । তবে এই শহরে আসার পরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন । তাঁকে ভরতি করানো হয় বেসরকারি এক হাসপাতালে । সেখানে তাঁর কোরোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে । যদিও 36 বছর বয়সের এই যুবককে শেষ পর্যন্ত আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি । এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মৃত এই যুবকের স্ত্রী । কীভাবে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হল ? তা জানতে চান তিনি । ওই চিঠিটিকেই অভিযোগ হিসেবে মান্যতা দিয়ে ওই বেসরকারি হাসপাতালকে মৃত ওই যুবকের মেডিকেল রেকর্ডস দিতে বলল স্বাস্থ্য কমিশন ।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন (WBCERC) জানিয়েছে, অফিসের কাজের জন্য কলকাতায় এসেছিলেন 36 বছর বয়সি এক যুবক । অসুস্থ বোধ করায় টালিগঞ্জে অবস্থিত বেসরকারি একটি হাসপাতালে গত 5 অক্টোবর তিনি ভরতি হয়েছিলেন । এই যুবকের COVID-19-এর সংক্রমণ ধরা পড়ে । টালিগঞ্জের ওই বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলতে থাকে । তবে, তাঁকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি । টালিগঞ্জের ওই হাসপাতালে গত ২১ অক্টোবর এই যুবকের মৃত্যু হয় ।
কমিশন জানিয়েছে, ওই হাসপাতালে ভরতি থাকার সময় এই যুবককে ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি, যে কারণে পরিজনদের সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারেননি বলে অভিযোগ । এই যুবক তাঁর স্ত্রীকে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ করেন তাঁর মৃত্যুর আগে । কাগজে লেখা এই মেসেজটির ছবি তুলে তিনি হোয়াটসঅ্যাপে তাঁর স্ত্রীকে পাঠিয়েছিলেন । এই মেসেজে হয়ত কোনও অভিযোগের বিষয়ে জানিয়েছেন ওই যুবক, কমিশন এমন মনে করছে বলে জানা গিয়েছে । তবে, কমিশন জানিয়েছে, এই যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রীর কোনও অভিযোগ নেই । কিন্তু, কীভাবে তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন, তা তিনি জানতে চান । গত 21 অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রীকে মৃত এই যুবকের স্ত্রী একটি চিঠি লিখেছিলেন । এর পরে ওই চিঠিটি কমিশনে পাঠানো হয় । ওই চিঠিটিকেই অভিযোগ হিসাবে মান্যতা দিয়েছে কমিশন ।
কমিশন জানিয়েছে, মৃত এই যুবক বারাণসীর বাসিন্দা ছিলেন । তাঁর স্ত্রী বর্তমানে COVID-19-এ আক্রান্ত । এই অবস্থায় তিনি কমিশনের শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন । কমিশন জানিয়েছে, মৃত এই যুবকের ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা ছিল । এর জন্য তাঁকে ইনহেলার ব্যবহার করতে হত । শরীরের অতিরিক্ত ওজনের পাশাপাশি মৃত এই যুবক হাইপারটেনশনের সমস্যায়ও আক্রান্ত ছিলেন ।
কমিশন জানিয়েছে, এই যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে । তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে হলফনামা চাওয়া হয়েছে । এই যুবকের মেডিকেল রেকর্ডস বেসরকারি ওই হাসপাতালের কাছে চেয়েছে কমিশন । এই মেডিকেল রেকর্ডস খতিয়ে দেখে কমিশন বোঝার চেষ্টা করবে, এই যুবকের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও খামতি ছিল কি না । মৃত ওই যুবকের স্ত্রীর দেওয়া হলফনামা এবং ওই হাসপাতাল থেকে মেডিকেল রেকর্ডস পাওয়ার পরে এই ঘটনায় কমিশন আবার শুনানি শুরু করবে বলে জানানো হয়েছে ।