কলকাতা, 20 জুলাই: শহরের বেলগাম দৃশ্য দূষণ। সেই দূষণ ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নিল কলকাতা পৌরনিগম । রাস্তার উপরে থাকা কেবলের তার দ্রুত সরানোর জন্য দিনক্ষণ বেঁধে দেওয়া হল। এখন থেকে মাটির তলা দিয়ে কেবলের তার নিয়ে যেতে হবে। সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হলে পৌরনিগমই তার কেটে দেবে ৷ সেক্ষেত্রে অপরেটররা সমস্যায় পড়লে তার দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ। বুধবার কেবল অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠকে একথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন কলকাতা কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ বিভাগের মেয়র পারিষদ সন্দীপ বক্সি ৷ এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পৌর কমিশনার বিনোদ কুমার-সহ অন্য অধিকারিকরা ।
এদিন বৈঠক শেষে আলো বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ জানান, 40টি রাস্তার তালিকা অপারেটরদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে । এই রাস্তা গুলির ড্রাফটও তৈরি করতে বলা হয়েছে ৷ হাজরা রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, জওহরলাল নেহেরু রোড-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা এই তালিকায় আছে । আগামী সোমবারের মধ্যে যাবতীয় রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে অপারেটরদের । সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, সাতদিনের মধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ডের কাজ শুরু হবে ।
ছোট গলির ক্ষেত্রে মাটির তলা দিয়ে তার নিয়ে গিয়ে ল্যাম্পোস্টের মাধ্যমে কেবল সংযোগ দিতে হবে গ্রাহকদের ৷ সেই অনুমতি দেবে কলকাতা পৌরনিগম । যদিও বড় রাস্তার ক্ষেত্রে এই সমস্যা থাকছে না । অন্যদিকে, আন্ডারগ্রাউন্ডের ক্ষেত্রে কেবল তার নিয়ে যাওয়ার জন্য বেশ কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছিল ৷ সেই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ ডিজি সঞ্জয় ভৌমিককে ।
যে সমস্ত কেবল অপরেটররা বা স্থানীয় বাসিন্দারা মাটির তলা দিয়ে তার নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করেছিলেন তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে বিষয়টি দ্রুত মীমাংসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । তবে কেবলের তার যে কোনওভাবেই উপর দিয়ে টানা যাবে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অপারেটরদের ।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় কেবল অপারেটররা, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
কলকাতা পৌরনিগমের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী মাটির তলা দিয়েই তার নিয়ে যেতে হলে 'ইনস্টলেশন চার্জ' বা ভাড়াও গুনতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে । এর প্রভাব সংশ্লিষ্ট সংস্থার গ্রাহকদের বিলের উপর পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা ৷ ফলে নতুন এই ব্যবস্থা চালু হলে এক ধাক্কায় অনেকটাই বিল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুরুতেই চুক্তি করে আগামী 15 বছরের ভাড়ার টাকা নিয়ে নেওয়া হবে কেবল অপারেটরদের থেকে । বড় সংস্থাগুলি এক মিটার রাস্তা পিছু বছরে 100 টাকা করে ভাড়া দেবে ৷ ছোট সংস্থাগুলিকে দিতে হবে 20 টাকা করে । হিসেব বলছে, এই ভাড়া বাবদ শুধু মাত্র হরিশ মুখার্জি রোড থেকেই প্রায় 15 কোটি টাকা আয় হতে চলেছে পৌরনিগমের ৷