কলকাতা, 22 জুন: পঞ্চায়েত ভোটে 822 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য আবেদন করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রক্ত ঝড়েছে ৷ অশান্তি এবং হিংসার ঘটনায় চোখ বুজে থাকেনি কলকাতা হাইকোর্ট ৷ মামলায় হস্তক্ষেপ করেে কলকাতা হাইকোর্ট কমিশনকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেই ভোট করাতে হবে ৷ এরপর অবশ্য সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েও ধাক্কা খেয়েছে কমিশন ৷ শেষ পর্যন্ত, বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিল, 2013 সালের থেকে বাহিনী দিয়ে রাজ্য়ে পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে ৷ এরপরই তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে বাহিনী চেয়ে চিঠি পাঠাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷ আগেই কমিশনের তরফে 22 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছিল ৷ এবার ভোট পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও 800 কোম্পানি বাহিনী চাইল কমিশন ৷
বুধবারই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন খোদ প্রধান বিচারপতি ৷ 48 ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যে বাহিনী মোতায়েনের যে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত তা কার্যত মানেনি কমিশন ৷ আর তার জেরেই আদালত অবমাননার মামলায় ওইদিন ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, গত 2013 সালের পঞ্চায়েত ভোটে যে সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন হয়েছিল, তার থেকে আরও বেশি সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে ৷ সুতরাং সরাসরি না বললেও হাইকোর্টের স্পষ্ট বার্তা ছিল, 2013 সালে যেখানে 82 হাজার বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, সেই সংখ্যা এবার বাড়াতে হবে ৷ এর সঙ্গেই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, কমিশনার যদি নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়, তবে কমিশনার পদ থেকে সরে যেতে পারেন ৷ সেখানে রাজ্যপাল নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন ৷ কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের পরই এদিন দেখা গেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে অতিরিক্ত বাহিনী চেয়ে চিঠি দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ৷
অন্যদিকে, বাহিনী চাওয়ার পরই রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহা ৷ বৈঠকে রয়েছেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বিপি গোপালিকা, এডিজি আইন-শৃঙ্খলা জাভেদ শামিম ৷ কমিশন সূত্রে খবর, ভোটে বাহিনী এলেও তাদের রাজ্যের সাড়ে 300 ব্লকে মোতায়েন করতে হবে ৷ এমনকী এলাকা ডমিনেশনের কাজও করতে হবে বাহিনীকে দিয়ে ৷ সেক্ষেত্রে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে কমিশনকে বৈঠক করতেই হবে ৷ অন্যদিকে, কমিশন সূত্রে খবর, এদিন বিকালে রাজ্যের সব জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গেও ভার্চুয়ালি বৈঠক করবেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ৷
আরও পড়ুন: ইমপিচমেন্ট ছাড়া কমিশনারকে সরানো যাবে না, পটনা উড়ে যাওয়ার আগে স্পষ্ট বার্তা মমতার
অন্যদিকে, কলকাতা হাইকোর্টের ভর্ৎসনার পর আচমকা রাজ্যপাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহার জয়েনিং লেটার নবান্নে ফেরত পাঠান। আর তারপরই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার পদত্যাগ করা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এদিন সকালে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে প্রবেশ করার সময় এই বিষয়ে প্রথমবার প্রতিক্রিয়া মেলে রাজীবা সিনহার থেকে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রাজীবা সিনহা বলেন, "আমার কাছে এখনও এধরণের কিছু আসেনি।"