কলকাতা, 19 মার্চ : কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, এম আর বাঙুর হাসপাতালের 2 চিকিৎসক এবং তাঁর এক সহযোগীকে 14 দিনের জন্য হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে । কলকাতা মেডিকেল কলেজের ওই চিকিৎসক সম্প্রতি ব্রিটেন থেকে ফিরেছেন বলে জানা গিয়েছে ৷ অন্যদিকে, কোরোনা ভাইরাস ডিজ়িজ় (COVID-19)-এ এরাজ্যের প্রথম আক্রান্ত যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন এম আর বাঙুর হাসপাতালের এক চিকিৎসক ও তাঁর সহযোগী । এই তিনজনকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৷
গত 12 মার্চ ব্রিটেন থেকে ফিরেছেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ওই চিকিৎসক । 13 মার্চ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তিনি একটি অস্ত্রোপচারের সঙ্গে ছিলেন । এরপরই ওই চিকিৎসক-সহ কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অন্য চিকিৎসক এবং নার্স মিলিয়ে পাঁচজনের একটি দল বাঁকুড়ায় গিয়েছিল কুষ্ঠ রোগীদের চিকিৎসা করাতে । সেখানে গত রবিবার ব্রিটেন ফেরত ওই চিকিৎসক অসুস্থ হয়ে পড়েন । তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । এর পরেই ওই চিকিৎসককে COVID-19-এর সংক্রমণ সন্দেহে বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভরতি করা হয় । সেখান থেকে তাঁকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৷
এবিষয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট কাম ভাইস প্রিন্সিপাল (MSVP) ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানান, " কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ওই অস্ত্রোপচারের দলে থাকা অন্য চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মিলিয়ে মোট 30-35 জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে । সেই সঙ্গে ব্রিটেন ফেরত ওই চিকিৎসকের সোয়াবের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৷ রিপোর্টে নেগেটিভ আসার কারণে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে তাঁদের আইসোলেশনে রাখা হয়নি । বাঁকুড়ায় যাওয়া চিকিৎসকদের ওই দলের সদস্যদেরও হোম আইসোলেশনে রাখা হয়নি । শুধুমাত্র ব্রিটেন ফেরত ওই চিকিৎসককে দেশে ফেরার দিন থেকে শুরু করে পরবর্তী 14 দিন পর্যন্ত হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাতে এরাজ্যে প্রথম COVID-19-এ এক আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে কলকাতার ID&BG হাসপাতালে । জানা গিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা এই আক্রান্তের বয়স 18 বছর । COVID-19-এ আক্রান্ত এই যুবক লন্ডনের ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ডের পড়ুয়া । গত 15 মার্চ তিনি লন্ডন থেকে কলকাতায় ফেরেন । আক্রান্ত ওই যুবকের বাবা পেশায় চিকিৎসক ।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত 15 মার্চ লন্ডন থেকে কলকাতায় ওই যুবক ফিরলে, থার্মাল স্ক্যানিংয়ের পরে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে তাঁকে বেলেঘাটার এই হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল । তবে এই যুবকের মা চেয়েছিলেন বাড়িতে একদিন রাখার পরে নিয়ে যাওয়া হবে বেলেঘাটার হাসপাতালে । যদিও গত সোমবার এই যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে । সেখানে এক চিকিৎসক এবং তাঁর এক সহযোগী ওই যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে বেলেঘাটার হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলেন । এর পরেই গত মঙ্গলবার সকালে ওই যুবককে বেলেঘাটার ওই হাসপাতালে নিয়ে যান তাঁর মা । ওই যুবকের সোয়াবের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যায় গত মঙ্গলবার রাতে । রিপোর্টে জানা যায় ওই যুবক COVID-19-এ আক্রান্ত ।
আক্রান্ত ওই যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন এম আর বাঙুর হাসপাতালের ওই চিকিৎসক এবং তাঁর ওই চিকিৎসা সহযোগী । এই কারণে ওই চিকিৎসক এবং তাঁর সহযোগীকে 14 দিনের জন্য হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয়কুমার চক্রবর্তী । সেই সঙ্গে ওই হাসপাতালের যে ঘরে COVID-19-এ আক্রান্ত ওই যুবকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল, গতকাল সেই ঘরটিকে জীবাণুমুক্ত করা হয় ।