ঝাড়গ্রাম, 25 অগস্ট: হাতির হানায় প্রাণ গেল (Elephant Attack Death) এক মহিলা-সহ তিনজনের ৷ বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে ঝাড়গ্রাম (Jhargram) শহর লাগোয়া বসত এলাকায় ৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহতরা হলেন, দেবী মণ্ডল (45), ভূষণ মাহাত (25) এবং রামেশ্বর বাস্কে (65) ৷ এঁরা বেনাগেড়িয়া, দরখুলি এবং কন্যাডোবা গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ৷ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দু'জন ৷ তাঁরা ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ আহত আরও একজনের আঘাত তেমন গুরুতর না হওয়ায় তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বুধবার রাত 9টা নাগাদ হঠাৎই এলাকায় হইচই শুরু হয় ৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই বোঝা যায়, লোকালয়ে হাতি ঢুকে পড়েছে ৷ গ্রামবাসীর দাবি, যে হাতিটি হামলা চালিয়েছে সেটি একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী হাতি ৷ সঙ্গে তার শাবকও ছিল ৷ আশপাশে মানুষ দেখে হাতিটি উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং হামলা শুরু করে ৷ আসলে, ওই সময় ঝাড়গ্রাম শহর থেকে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন চারজন ৷ শহরের আট নম্বর ওয়ার্ডে পেরিয়ে রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কন্যাডুবা গ্রামের রাস্তায় ঢুকতেই মা হাতি ও তার শাবকের সামনে পড়ে যান তাঁরা ৷ সঙ্গে সঙ্গে তেড়ে আসে পূর্ণবয়স্ক হাতিটি ৷ তাতেই ওই চার ব্যক্তি আহত হন ৷ পরবর্তীতে বেনাগেড়িয়া এলাকার একটি বাড়িতেও হামলা চালায় হাতিটি ৷ তাতেই দেবী মণ্ডল নামে স্থানীয় এক মহিলার মৃত্যু হয় ৷
আরও পড়ুন: বানারহাটে হাতির হানায় ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ও নষ্ট ধান
হাতির হামলার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বন দফতরের কর্মীরা ৷ আক্রান্তদের সকলকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ তাঁদের মধ্যে একজনকে প্রথমেই মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ৷ পরে আরও দু'জনের মৃত্যুর খবর মেলে ৷ হাতি তাড়ানোর জন্য হুলা পার্টিও পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে ৷ সূত্রের দাবি, শাবক-সহ মা হাতিটি সারারাত স্থানীয় ভাস্করকাটার জঙ্গলেই ছিল ৷ বৃহস্পতিবার সকালে তারা দুবরাজপুরের জঙ্গলে ঢুকে যায় ৷
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে পৌঁছে যান স্থানীয় কাউন্সিলর নবু গোয়ালা ৷ তিনি বলেন, স্বাভাবিকভাবেই আমজনতার মধ্যে হাতি নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ৷ কিন্তু আমরা চাই না হাতির কোনও ক্ষতি হোক ৷ আবার মানুষের ক্ষতিও মেনে নেওয়া যায় না ৷ আমরা আগেই স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতি নিয়ে সতর্ক করেছি ৷ আবারও প্রচার চালাব ৷ কিন্তু, এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য বন দফতরকেও যথাযথ পদক্ষেপ করতে হবে ৷
প্রসঙ্গত, এলাকারই বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, যে জায়গায় হাতিটি প্রথম হামলা চালায়, সেখানে রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই ৷ তাছাড়া, একটি বাঁক রয়েছে ৷ সেই বাঁক ঘুরতেই হাতির মুখে পড়ে যান চারজন ৷ রাস্তায় আলো থাকলে হয়তো এই অঘটন এড়ানো যেত ৷ কিন্তু, ওই রাস্তায় আলো কেন লাগানো হয়নি, তার কোনও সদুত্তর প্রশাসনের তরফে পাওয়া যায়নি ৷