ঝাড়গ্রাম, 15 এপ্রিল : গত সাত বছর ধরে হাতি তাড়ানোর কাজ করছিলেন দীপক মাহাত (32) ৷ এর জন্য বনদফতর প্রশিক্ষণও দিয়েছে তাঁকে ৷ তবু একটু ভুল হল ৷ আর তার পরিণতি হল ভয়ঙ্কর ৷
বুধবার রাতে ঝাড়গ্ৰামের গোপীবল্লভপুর 1 নম্বর ব্লকের আলমপুর গ্রামে ঢুকে পড়ে 12টি হাতির একটি দল ৷ দীপক মাহাত-সহ হুলা পার্টির সদস্যরা যথারীতি হাতি তাড়ানোর কাজে লেগে পড়েন ৷ গোপীবল্লভপুরের কমলাশোল বনাঞ্চল থেকে তাঁরা হাতির দলটিকে ড্রাইভ করে সুবর্ণরেখা নদী পার করতে চাইছিলেন । হাতিগুলিকে তাঁরা তাড়িয়ে নদীর দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ৷ খেয়াল করেননি হুলা পার্টির পিছনে পড়ে গিয়েছে একটি হাতি ৷ সাধারণত এমন ভুল হয় না ৷ আর সেটাই কাল হল ৷ বুধবার রাত 12টা নাগাদ হাতিগুলো আলমপুর গ্রামের মাঠের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় অতর্কিতে একটি হাতি ধাওয়া করে দীপক মাহাতকে ৷ পালাতে গিয়ে জমির আলে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান দীপক ৷ উঠে ফের পালাবার আগেই উন্মত্ত হাতির একটি পা গিয়ে পড়ে দীপকের বুকের উপর ৷ রাতেই বনদফতর এবং পুলিশ-প্রশাসনের কর্মীরা তাঁর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যান ।
ওই হুলা পার্টির আর এক সদস্য সুভাষ মাহাত জানান, হাতির দলটি তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় পিছনে থেকে যায় একটি হাতি ৷ অন্ধকারে তা বুঝতে না পারার কারণেই এই পরিণতি ৷ সুভাষদের দাবি, প্রশিক্ষণ নিয়ে হাতি তাড়ানোর কাজ করছেন প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ৷ তবে তাঁদের এই কাজ স্থায়ী নয় ৷ তাঁদের স্থায়ী কাজের ব্যবস্থা করা হোক । সঙ্গে মৃত দীপক মাহাতর পরিবারকে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি তাঁর পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হোক।
মৃত ব্যক্তির পরিবারকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানান বনদফতরের এক আধিকারিক ।
বেশ কয়েকবছর ধরে ঝাড়গ্ৰাম জেলা তথা জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জঙ্গলে বেড়েছে হাতির তাণ্ডব । খাবার এবং পানীয়ের অভাবে দলমার কয়েকটি হাতির দল একপ্রকার স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে নয়াগ্ৰাম, গোপীবল্লভপুর, সাঁকরাইলের জঙ্গলগুলোতে । ফলে প্রায়ই হাতির তাণ্ডবে এলাকার মানুষের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায় । মাঝে-মধ্যেই মানুষের প্রাণহানির পাশাপাশি ঘটছে হাতিমৃত্যুর ঘটনাও ৷