চন্দননগর, 25 ফ্রেব্রুয়ারি: গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত সুতন্দ্রার পরিবারকে আইনি সহায়তা দেবে সিপিএম। এমনটাই জানালেন রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ৷ হুগলিতে সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চন্দননগরে সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি পৌঁছন সেলিম ও যুব নেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ৷ অন্যদিকে, সন্তানহারা মা তনুশ্রীর সঙ্গেও দেখা করতে চন্দননগরের বাড়িতে আসেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পলও ৷
এদিন বেশ কিছুক্ষণ সুতন্দ্রা মা তনুশ্রী ও ঠাকুমার সঙ্গে কথা বলেন সিপিএম ও বিজেপির নেতা-নেত্রীরা ৷ মায়ের অভিযোগ শুনে রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সেলিম ৷ পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, "পুলিশ তদন্ত করবে ৷ তার আগেই কী করে জানিয়ে দেয় কী হয়েছিল ! একাধিক ঘটনায় এই ধরনের কাজ পুলিশ করছে ৷ আগে থেকে বলে দিয়ে মামলা সাজানো হয় ৷ পুলিশ বিচারের আগেই বিচারকের মতো রায় শুনিয়ে দিচ্ছে ৷" আনিশ খান থেকে শুরু করে আরজি করে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনাতেও একই বিষয় হয়েছে বলে তাঁর দাবি ৷
সেলিম আরও বলেন, "যাঁরা গাড়িতে ছিলেন, তাঁদের ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করে বয়ান নেওয়া হয়েছে ৷ মায়ের বয়ান নেওয়া হয়নি ৷ এতে ফাঁসবে পুলিশ ৷ সিসিটিভি ফুটেজ কাদের কাছে ছিল ? আমাদের দাবি, পুলিশকে এখানে এসে মায়ের বয়ান রেকর্ড করতে হবে ৷ তা না হলে আমরা আইনি সাহায্য দেব ৷ ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মা তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধ করবেন ৷ সেটাকে এফআইআর হিসাবে গণ্য করতে হবে ৷ মা বলছেন, এফআইআর করবেন ৷ "
নিহত সুতন্দ্রার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও ৷ তিনি বলেন, "মায়ের যা লড়ার মানসিকতা দেখলাম তা শেখার মতো ৷ দোষীদের শাস্তির দাবিতে এই পরিবারের সঙ্গে আমরা থাকব ৷ দায়িত্বজ্ঞান হীনতার পরিচয় দিয়েছে পুলিশ ৷ পরিবারের পাশে থেকে পুলিশকে দ্বায়িত্বজ্ঞান কাকে বলে সেটা আমাদের বুঝিয়ে দিতে হবে ৷"
এদিকে মৃত তরুণী সুতন্দ্রার মা তনুশ্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দু'টি গাড়ির মধ্যে রেষারেষি হলে কেন তারা (এসইউভি গাড়িতে থাকা আরোহীরা) পালাল ? দুটো গাড়ি রেষারেষির সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গিয়েছে বলছে ৷ সিসিটিভির মনিটরিং চলে নিশ্চয়ই ৷ তখনই কেন পুলিশ তৎপর হল না ৷ মদের বোতল, মদের গ্লাস পাওয়া গিয়েছে ৷ কী করে মদ খেতে খেতে তারা গাড়িতে যেতে পারে ? এটাও প্রশ্ন ৷ বিচার পাওয়াটা আমার অধিকার ৷ এখনও পুলিশে আস্থা রাখছি ৷"
চন্দননগরের বাড়িতে গিয়ে মা তনুশ্রীর সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল ৷ তিনি পরে সাংবাদিকদের বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী অভয়ার মৃত্যুর পর মহিলাদের রাতে কাজে না বেরনোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ৷ তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী বলতে চাইছেন, সুতন্দ্রার মতো মেয়েরা যাঁরা ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বা কল সেন্টারে কাজ করেন বা ডাক্তারি করেন, তাঁরা রাতে কোনও কাজ করতে যাবেন না ?"
বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, জাতীয় সড়কে পুলিশের কোনও গাড়ি নেই। বাবলু যাদব ও তার গাড়িতে যারা ছিল, তারা মদ্যপ অবস্থায় বিভিন্ন ইঙ্গিত করে রেষারেষি করছিল ৷ পুলিশ বিষয়টি দেখেনি কেন ? সেখানে কেন পুলিশের টহলদারির ভ্যান ছিল না ? মহিলাদের সুরক্ষাটা কোথায় ? পুলিশ সমস্ত ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে বলেও তিনি দাবি করেন ৷