ঝাড়গ্রাম, 24 এপ্রিল: হইহই করে সকলে বিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল ৷ ছন্দপতন হল মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ৷ বরযাত্রীর গাড়ি উলটে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বরের দাদা ও মমার ৷ রবিবার রাতে মানিকপাড়া ফাঁড়ির রাধাশ্যামপুর গ্রামের বেলতলা-মানিকপাড়া এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ৷
জানা গিয়েছে, সাঁকরাইল থানার সিদাকরা গ্রামের বাসিন্দা বিষয় মাহাতোর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল মানিকপাড়া এলাকার আখড়াশোল গ্রামের প্রতিমা মাহাতোর । রবিবার ছিল বিয়ে ৷ এদিন বরের গাড়ি-সহ মোট 5টি গাড়িতে বরযাত্রী রওনা হয় । তার মধ্যে একটি বরের গাড়ি, দু’টি মারুতি ইকো, একটি ছোট হাতি এবং একটি মারুতি অলটো গাড়ি ছিল । পাঁচটি গাড়িতে সবমিলিয়ে 45-50 জন বরযাত্রী ছিল । তারমধ্যে বরযাত্রী মারুতি অলটো গাড়িতে 6 জন ছিলেন । এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলটে যায় ৷ মৃত্যু হয় বরের দাদা সুশান্ত মাহাতো (25) ও গ্রাম সম্পর্কের মামা শক্তি মাহাতোর (45) ৷
প্রাত্রের বাবা ভুবন মাহাতো বলেন, "আমাদের অনেক আগেই মারুতি অলটো গাড়িতে 6 জন ছিল । ছ'নম্বর জাতীয় সড়ক ছেড়ে বেলতলা ও মানিকপাড়ার রাস্তায় শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের কাছে আসতেই মারুতি অলটো গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পালটি খেয়ে রাস্তার ডান দিকের একটি বট গাছে ধাক্কা মারে । আমরা যখন পৌঁছই ওখানে তখন দেখি সকলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে । ততক্ষণে শ্যামসুন্দরপুর গ্রামের বহু মানুষ তাদেরকে উদ্ধারের জন্য চলে এসেছে । আমরা তড়িঘড়ি 6 জনকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাই । হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা সুশান্ত মাহাতো(25) ও গ্রাম সম্পর্কিত মামা শক্তি মাহাতো (45)কে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ।"
গুরুতর আহত অবস্থায় 4 জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । রাতে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাপস মাহাতো নামের এক ব্যক্তিকে অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ পরিবারের লোকজন তাকে চিকিৎসার জন্য উড়িষ্যা রাজ্যের কটককে নিয়ে গিয়েছে । সোমবার ভোরে আরও দুই বরযাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়েছে । রহিম মাহাতো নামের একজন বরযাত্রী এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ।
আরও পড়ুন: জাতীয় সড়কে বাসের পিছনে ধাক্কা ট্রাকের, মৃত অন্তত 4
মৃত সুশান্তের বাবা তরণী মাহাতো বলেন, "আমিও বরযাত্রীতে ছিলাম । আমি ছোট হাতিতে ছিলাম । আমরা যখন শ্যামসুন্দরপুর পৌঁছাযই দেখি আমার ছেলে যে গাড়িতে ছিল সেই গাড়িটি দুমড়ে মুচড়ে পালটি হয়ে রয়েছে ৷ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে আসলে আমার ছেলেকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে । এমনটা হবে কখনো ভাবতেই পারিনি ।" দুর্ঘটনার খবর বাড়িতে পৌঁছতেই পরিবারের নেমে এসেছে শোকের ছায়া ৷ বাতিল করে দেওয়া হয় বৌভাতের অনুষ্ঠান ৷