ঝাড়গ্রাম, 16 মে: চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুললেন বিধায়ক তথা মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ৷ সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ৷ এরপর আদিবাসী সম্প্রদায়ের মন্ত্রী হাসপাতালের সিঁড়িতে ধরনায় বসেন ৷ পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে আসেন ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার গৌতমেশ্বর মজুমদার, হাসপাতালের সহকারী সুপার স্নেহাশিষ পাত্র ৷ তাঁরা মন্ত্রীকে সিঁড়ি থেকে ওঠার অনুরোধ করেন ৷
এদিন বিকেলে লালগড়ে ঝড়-বৃষ্টি হয় ৷ তাতে কয়েকজন জখম হয় ৷ ঝড় থামলে লালগড়ে যান মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ৷ আহত ব্যক্তিদের প্রথমে লালগড় গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ এর মধ্যে মৌলী মুর্মু নামে এক মহিলার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় ৷ তাঁকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকরা ৷ মৌলী মুর্মুর পরিবারের সঙ্গে মন্ত্রীও আসেন ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে ৷
সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রোগীকে জরুরি বিভাগে দেখানো থেকে শুরু করে এক্স-রে- সব ক্ষেত্রেই মন্ত্রী তদারকি করেন ৷ তারপর ওই জখম মহিলাকে সার্জারি বিভাগে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ সেখানে কর্তব্যরত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সৈকত রানা জখম মহিলার কী হয়েছে, তা জানতে চান ৷ এ প্রসঙ্গে মহিলার ছেলে বৈদ্যনাথ মুর্মু বলেন, "আমি সামনে যেতেই ডাক্তারবাবু বলেন, আমার কান পরিষ্কার আছে ৷ যা বলার, দূর থেকে বলুন ৷" এ থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত ৷ চিকিৎসকের এহেন কথায় অসন্তুষ্ট হন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ৷
চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মৌলী মুর্মুর ছেলের অভিযোগ, মায়ের জখমের জায়গাটি দেখাতে গেলে চিকিৎসক তাঁর উপর রেগে যান ৷ তাঁকে মহিলা ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন ৷ এই ঘটনাটি বীরবাহা হাঁসদার সামনেই হয় ৷ তখন তিনি চিকিৎসকের নাম জিজ্ঞাসা করেন ৷ উলটো দিকে চিকিৎসক বলেন, "আপনাকে চিনি না ৷ কেন নাম বলব ?" মন্ত্রীর অভিযোগ, ওই চিকিৎসক অসম্মানজনক ব্যবহার করেন ৷
এর প্রতিবাদে ঝাড়গ্রাম হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিঁড়িতে বসে পড়েন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ৷ বিষয়টি জানতে পেরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন হাসপাতালের সুপার গৌতমেশ্বর মজুমদার, সহকারী সুপার স্নেহাশিস পাত্র ৷ তাঁরা মন্ত্রীকে শান্ত করার চেষ্টা করেন ৷ সিঁড়ি থেকে ওঠার জন্য অনুরোধ করেন ৷
শেষে ওই চিকিৎসক মন্ত্রীর কাছে ক্ষমা চান ৷ তারপর বীরবাহা হাঁসদা সেখান থেকে উঠে যান ৷ হাসপাতাল ছাড়ার আগে মন্ত্রী বলেন, "হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে যা শুনেছি, আজ তা নিজের চোখে দেখলাম ৷ চিকিৎসককে আমরা ভগবানের চোখে দেখি ৷ চিকিৎসকের এরকম ব্যবহারে আমি অবাক !"
আরও পড়ুন: ডিগ্রি কোর্সের বদলে চিকিৎসকদের জন্য তিন বছরের ডিপ্লোমা কোর্সের প্রস্তাব মুখ্যমন্ত্রীর