শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি, 17 সেপ্টেম্বর: শনিবার বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja) উপলক্ষে বিশেষভাবে দিন কাটল নর্থ বেঙ্গল ওয়াইল্ড অ্যানিমেল পার্ক বা বেঙ্গল সাফারি পার্কের (Bengal Safari Park) দুই কুনকি হাতি লক্ষ্মী ও উর্মিলার। পাশাপাশি ডুয়ার্সের গরুমারা, ধূপঝোড়া, মেদলা, পিলখানায় বর্ষণ, মতিরানী, চম্পা, ফাল্গুনী, যুবরাজ, রাজা, আমনদেরও রইল ছুটি ৷ শনিবার তাদের জন্য ছিল স্পেশাল মেনু (People Worshipped Elephant on Vishwakarma Puja) ৷
রীতিমেনে প্রতিবছর ধূপঝোড়ার এলিফ্যান্ট ক্যাম্পের বনকর্মীদের পক্ষ থেকে এই বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। পুজো উপলক্ষে শনিবার সকাল থেকেই ধূপঝোড়া, গরুমারা ও মেদলা এলাকার কুনকি হাতিদের নিয়ে মাহুতদের ব্যস্ততা ছিল চরমে। কুনকি হাতিদের প্রথমে মূর্তি নদীতে স্নান করানো হয়। এরপর নানা রঙের চক দিয়ে এঁকে সাজানো হয় ওদের। প্রতিটি হাতির গায়ে নাম লিখে দেওয়া হয়।
শেষে ওদের নিয়ে যাওয়া হয় পুজো মণ্ডপে। শাঁখ বাজিয়ে, উলুধ্বনি চলে পুজো চলাকালীন। পুরোহিত নিয়মনীতি মেনে মন্ত্র উচ্চারণ করে পুজো সারেন। এদিনের এই হাতি পুজো দেখতে প্রচুর পর্যটকরা ভিড় জমান। শুধু যে পর্যটকরাই হাতি পুজো দেখতে আসেন এমনটা কিন্তু নয়। পর্যটকদের পাশাপাশি আশেপাশে গ্রামের মানুষও প্রতিবছর এই বিশেষ দিনটিতে হাতি পুজো দেখতে চলে আসেন পিলখানায়। ধুপঝোরা এলিফ্যান্ট ক্যাম্পের পিলখানায় কুনকি হাতিদের মহাকাল বলে বিশ্বকর্মার বাহন হিসেবে পুজো করা হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বকর্মার পাশাপাশি বাহন হাতিও পূজিত হল বেঙ্গল সাফারি পার্কে
এই কুনকি হাতিদের নিয়েই বনকর্মীদের জঙ্গলে একাধিক কাজ করতে হয়। শুধুমাত্র বনকর্মীরাই নন হাতিকে ডুয়ার্সের জঙ্গল সংলগ্ন এলাকার মানুষ মহাকাল বলে পুজো করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকেই। এই কুনকি হাতিদের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি যাঁরা সময় কাটান তাঁরা হলেন বনবিভাগের মাহুতরা। কাজেই এই পুজোতে বাড়তি দায়িত্ব নিতে হয় এই মাহুতদের। তাঁদের খাবারের মেনুতেও এদিন ছিল অভিনবত্ব। রোজকার খাবারের পাশাপাশি মেনুতে ছিল চাল, ডাল, কলা ও বিভিন্ন ধরনের ফলের বাহার।
শনিবার বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে বিশেষভাবে দিন কাটল নর্থ বেঙ্গল ওয়াইল্ড অ্যানিমেল পার্ক বা বেঙ্গল সাফারি পার্কের দুই কুনকি হাতি লক্ষ্মী ও উর্মিলার। এই দিনটিতে পার্কের আধিকারিক, বনকর্মী সবাই তাদের পুজোতে সামিল হন। অন্যান্য দিন পর্যটকদের নিজের পিঠে তুলে জঙ্গল ঘোরালেও এই দিনটিতে ছুটি দেওয়া হয় লক্ষ্মী ও উর্মিলাকে।
আরও পড়ুন: শিল্পনগরীতে বায়না না পেয়ে হতাশ ঢাকি থেকে ফুল বিক্রেতা
শনিবার পার্ক খোলার আগে এদিন সকালে দুই হাতিকে স্নান করিয়ে, সারা শরীরে আল্পনা আঁকেন দুই মাহুত স্বপন নার্জিনারি ও কমল বর্মন। এরপর দুই কুনকির পুজো করে মাহুতরা। মোমবাতি, ধূপকাঠি দিয়ে দুই হাতিকে পুজো করা হয়। ওদের কর্ম ও কর্তব্যের জন্য সম্মান জানানো হয়। খাবারের মেনুতে অন্যান্য দিন ডাল, ভুসি, চাল থাকলেও এদিনটিতে বিশেষ করে ওদের পছন্দের কলা, আম, মুসম্বি, আখ, তরমুজ, শশা রাখা হয়। মন ভরে সেসব খাওয়ার পর ছিল ডাবের জল। সে সব পেয়ে বেজায় খুশি দুই বোন লক্ষ্মী, উর্মিলা।