জলপাইগুড়ি, 15 মার্চ: জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান কে হবেন? দাবিদার 4 জন (Chairman Contest In Jalpaiguri Municipality)। চেয়ারম্যনের দৌড়ে যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা হলেন প্রাক্তন প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল, ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, সন্দীপ মাহাতো ও টাউন ব্লক সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিয়েছেন, স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিকেই চেয়ারম্যান করা হবে। জলপাইগুড়ি পৌরসভার 8 নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের আগে 3 বার জয়ী হয়েছেন। 5 নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্দীপ মাহাতো 1995 সাল থেকে জয়ী হয়ে আসছেন। মাঝে 10 বছর তাঁর স্ত্রী ও মা কাউন্সিলর হয়েছিলেন। মোহন বোসের ডান হাত অর্থাৎ পুরসভার সিংহভাগ কাজটি সন্দীপ মাহাতোই করতেন। এমনকি পৌরসভার কাজের মানুষ বলেন চেয়ারম্যান যেই হয়েছেন, তাঁরা সন্দীপ মাহাতোকেই কাজে লাগিয়েছেন। চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল থেকেছেন সন্দীপবাবু। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ছবিও রয়েছে সন্দীপের। কোভিডকালে প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছেন সন্দীপ মাহাতো।
আরও পড়ুন : Left Front Deputation : জলপাইগুড়িতে বাম-মিছিলে লাঠিচার্জে অভিযুক্ত পুলিশ
অন্যদিকে, সৈকত চট্টোপাধ্যায়ও চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (Chairman in Council) ছিলেন। প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কোভিডকালে জলপাইগুড়ি শহরে দিনরাত এক করে কাজ করেছেন। শুধু তাই নয়, নিজে জেতার পাশাপাশি 8 জন প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার পেছনে সৈকতের কৃতিত্ব রয়েছে বলে দাবি করা হয়। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়ও এবার চেয়ারম্যান হওয়ার দাবিদার।
এদিকে পাপিয়া পাল দু'বারের জয়ী কাউন্সিলর। তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ির পুরনো কাউন্সিলর সোমনাথ পালের স্ত্রী পাপিয়া পাল এই নিয়ে দু'বার কাউন্সিলর পদে জয়ী হলেন। পাপিয়া পাল প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন ছিলেন। বিগত দু'বছর ধরে তিনি পৌরসভা চালিয়েছেন। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির ছবি রয়েছে পাপিয়া পালের। পাশাপাশি জলপাইগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও এবার চেয়ারম্যানের দাবিদার। কারণ জলপাইগুড়ি পুরসভার 22টি আসন পাওয়ার পেছনে তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃতিত্ব রয়েছে। কারণ টাউন ব্লক সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরেই এই প্রথম এককভাবে 22 টি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস। 1990 সাল থেকে জলপাইগুড়ি পৌরসভার 15 নং ওয়ার্ডটি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারের দখলেই রয়েছে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তিও রয়েছে তাঁর।
জলপাইগুড়ি পৌরসভার 17 বছর ধরে চেয়ারম্যান ছিলেন মোহন বোস। কিন্তু বর্তমানে পৌরসভার নতুন চেয়ারম্যান কে হবেন তা নিয়েই কাজিয়া শুরু হয়েছে। 2015 সালে এককভাবে পুরবোর্ড গঠন করে তৃণমূল কংগ্রেস। চেয়ারম্যান হন মোহন বোস। শারীরিক অবস্থার অবনতি হবার পর প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে থেকে খানিকটা সরে যেতে তাঁকে। এবার দল তাঁকে টিকিট দেয়নি। 2020 সালে পৌরসভার বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার পর পৌরসভায় প্রশাসকমণ্ডলী নিযুক্ত করে রাজ্য সরকার। মোহন বোস ছাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান জলপাইগুড়ি ভাবতেই পারত না। কিন্তু এবার সমীকরণটা একদমই অন্যরকম। কারণ এবার পৌরসভার চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়েই গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
এদিকে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, "কে হবেন জলপাইগুড়ি পৌরসভার চেয়ারম্যান তা নেত্রী ঠিক করবেন। আমাদের থেকে কয়েকটি নাম চাওয়া হয়েছে, আমরা নাম দিয়ে দিয়েছি।" কিন্তু চেয়ারম্যানের দাবিদাররা এ বিষয়ে কেউ মন্তব্য করতে রাজী নন। তাঁদের দাবি, নেত্রী ঠিক করবেন চেয়ারম্যান কে হবেন। আমরা দলের সামান্য কর্মী মাত্র।