জলপাইগুড়ি, 11 সেপ্টেম্বর: ভারত-ভুটান সীমান্তে বক্সার দুর্গম পাহাড় (Tourist Spot Buxa Hill)। বক্সা ফোর্টের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখার জন্য সেখানে ছুটে যান পর্যটকরা। তবে বক্সা ফোর্টে পর্যটকদের জন্য বাড়তি পাওনা ষাটোর্ধ্ব ইন্দ্রশঙ্কর থাপা (Indrashankar Thapa)। যাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত আর মাউথ অর্গ্যানের সুরে ধ্বনিত হয় পাহাড়বাসীর যন্ত্রণা ৷ এলাকায় কোনও সরকারি আবাসন না-থাকলেও কয়েকটি ‘হোম স্টে’ রয়েছে । যার মধ্যে অন্যতম ইন্দ্রশঙ্কর থাপার বাড়ি। পর্যটকরা গেলে তাঁদের আনন্দ দেওয়ার জন্য বৃদ্ধ ইন্দ্রশঙ্কর গান শোনান,বাদ্যযন্ত্র বাজান, কবিতা আবৃ্ত্তি কর হলিডে আরও স্পেশাল করে তোলেন । এর মাধ্যমে তিনি বক্সা পাহাড়ের অধিবাসীদের দুঃখ-দুর্দশার কাহিনী পর্যটকদের কাছে তুলে ধরেন ৷ এই আশাতেই যদি কোনও পর্যটক সরকারি আমলা বা মন্ত্রী হন যদি তিনি এই দুর্দশা শুনে বক্সার উন্নয়নে সাহায্য করেন ৷
2000 সাল থেকে লেখালেখি শুরু করেন ইন্দ্রশঙ্কর থাপা। বক্সা পাহাড়ের বিভিন্ন কাহিনি তুলে ধরেন পর্যটকদের কাছে ৷ এলাকার অনুন্নয়নের কথা কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরেন। তিনি বাংলাও শিখেছেন পর্যটকদের কাছ থেকেই ৷ পর্যটকরা এলেই তাদের বক্সার অনুন্নয়ন সম্পর্কে সচেতন করেন। যদি কোনও সহৃদয় হয়ে উন্নয়ন এনে দিতে পারেন এই আশাতেই । আর পর্যটকরা এলে ইন্দ্রশঙ্কর থাপার গান কবিতা না শুনে পাহাড় ছাড়চে চান না। আর এটাই ইন্দ্রশঙ্করের চাবিকাঠি। গান-বাজনার জন্যই তাঁর হোমস্টেতে ভিড় করেন পর্যটকরা।
আরও পড়ুন: রাজ্যে পর্যটন শিল্পের বিস্তারে আসছে একাধিক নতুন প্যাকেজ, জানালেন বাবুল
বক্সা পাহাড়ে 13টি গ্রাম রয়েছে। সেখানে বসবাস করেন 3000 পরিবার ৷ ভোটার সংখ্যা 1800টি ৷ গ্রামগুলির মধ্যে অন্যতম সদর বাজার, দারাগাও, বক্সা ফোর্ট, খাটা লাইন, লেপচাখা, অছলুং, টাসিগাও, লালবাংলো, চুনাভাটি, লামনা, সেওগাও, আদমা, ফুলবাড়ি, তড়িবাড়ি। লেপচা, ডুকপা,মঙ্গর, রাই,লিম্বু,আদিবাসীদের বসবাস বক্সাতে। গ্রামে প্রাইমারি স্কুল থাকলেও সেখানে শিক্ষক নেই ৷ জুনিয়র হাইস্কুলে আছেন একজন মাত্র প্যারা টিচার ৷ এখনও এই এলাকায় মোবাইলের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়না ৷ গান, মাউথ অর্গ্যানে বক্সা এলাকার এই সমস্যার কথাই তুলে ধরেন ইন্দ্রশঙ্কর থাপা ৷