জলপাইগুড়ি, 15 জানুয়ারি : সাইটাস ইনভার্সাস বা উলটো অঙ্গের রোগীর শরীরে সফল অস্ত্রোপ্রচার হল জলপাইগুড়িতে। চিকিৎসকের দাবি, এর আগে এই ধরনের 70টি অস্ত্রোপচারের নজির রয়েছে বিশ্বে। আর এবার কোচবিহারে হল 71নং অস্ত্রোপচার ৷
কোচবিহারের হলদিবাড়ির বাসিন্দা চঞ্চলা বর্মনের শরীরে সব অঙ্গ উলটো দিকে । তাঁর গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়ে ৷ তবে, চঞ্চলা বর্মনের শারীরিক পরীক্ষার সময় জানা যায়, তাঁর শরীরের সব অঙ্গের অবস্থান আর পাঁচটা মানুষের মতো নয় ৷ সেগুলি শরীরের বিপরীত দিকে অবস্থান করছে ৷ তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক জানান, সাধারণত একজন সুস্থ মানুষের শরীরে হৃদপিণ্ড থাকার কথা বাঁ দিকে । তবে, চঞ্চলা বর্মনের হৃদপিণ্ড রয়েছে ডান দিকে। শুধু হৃদপিন্ড নয়, গলব্লাডার এবং মহাধমনীর অবস্থানও উলটো। আর এই উলটো অঙ্গ নিয়েই দিব্যি দিনযাপন করছিলেন তিনি।
চঞ্চলার স্বামী জয়হরি বর্মন বলেন, ‘‘সম্প্রতি পেটের অসহ্য যন্ত্রনায় অসুস্থ হয়ে পড়ে আমার স্ত্রী। অস্ত্রোপচারের জন্য অনেক টাকার দরকার ছিল। কিন্তু আমি টাকা জোগাড় করতে পারছিলাম না।পরীক্ষানিরীক্ষায় ধরা পড়ে চঞ্চলা দেবীর গলব্লাডারে জমে রয়েছে পাথর। আর সেই পাথরের অবস্থান দেখতে গিয়ে অবাক হয়ে যান জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক রজত ভট্টাচার্য।’’
আরও পড়ুন : কোরোনায় আক্রান্ত, হাসপাতালের বেডে বসে ছবি আঁকছেন DIG
রজত ভট্টাচার্য জানান, এই ধরনের রোগী বিশ্বে এক কথায় বিরল। এর আগে এমন 70 জন রোগীর শরীরে অস্ত্রোপচারের নজির রয়েছে বিশ্বে। চঞ্চলা দেবী পেটে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। তাঁকে রোগ যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি দিতে বিনা খরচে অস্ত্রপ্রচারের সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তার বাবু। জলপাইগুড়ি শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও করেন তিনি। পঞ্চাশ মিনিট ধরে চলে সেই অস্ত্রোপচার । রজত ভট্টাচার্য জানান, গলব্লাডার থেকে পাথর বের করে দেওয়ায় এখন অনেকটাই সুস্থ এবং যন্ত্রণা মুক্ত চঞ্চলা দেবী। তবে রোগীর দেহের অঙ্গ সবই উলটো দিকে রয়েছে।