জলপাইগুড়ি, 6 অক্টোবর : জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের ঘর ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে ৷ বানানো হয়েছে ঝাঁ-চকচকে কেবিন ৷ কিন্তু কেন এই পরিকাঠামো বদলের কাজ হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে ৷ কারণ, কারও কারও দাবি, এবার থেকে ওই ঘরে বসবেন উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ওএসডি ড. সুশান্তকুমার রায় ৷ নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওই ঘর ওএসডি দখল করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷
এমনকী, কোন খাত থেকে এই পরিকাঠামো বদলের অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, কোনও টেন্ডার ডাকা হয়েছিল কি না, তা নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে ৷ স্বাভাবিকভাবে এই নিয়ে সরব হয়েছেন অনেকে ৷ কেউ কেউ সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলছেন ড. সুশান্তকুমার রায়ের বিরুদ্ধে ৷
আরও পড়ুন : Sushant Roy : পুত্রবধূকে নিয়োগ, ছেলের জন্য হাসপাতালে পদ আটকে রাখায় অভিযুক্ত ওএসডি
জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিজয়চন্দ্র বর্মন ৷ তিনিও এই বিষয়ে অন্ধকারে ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এখানে মেডিক্যাল কলেজ চালু হচ্ছে । যার জন্য বেশ কিছু ঘরের প্রয়োজন । আমার সঙ্গে কথা হয়েছিল, তাই দিয়েছি । যেমন সদর হাসপাতালের সুপারের ঘরে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রিন্সিপাল বসছেন ।’’
তাহলে সেই ঘরে উত্তরবঙ্গের স্বাস্থ্য-ওএসডি ড. সুশান্তকুমার রায় কেন বসবেন ? উঠছে এই প্রশ্নও৷ এই প্রসঙ্গে বিজয়চন্দ্র বর্মনের বক্তব্য, ‘‘সেই ঘরে ওএসডি এখন বসেন শুনেছি । কিন্তু সেখানেও তিনি পরবর্তীতে থাকবেন কি না বলা যায় না ।’’
আরও পড়ুন : Jalpaiguri : ওএসডি সুশান্ত রায় ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি চিকিৎসক সংগঠনের
তিনি আরও বলেন, ‘‘কীভাবে কোন খাত থেকে টাকা দেওয়া হয়েছে, আমার জানা নেই । পরবর্তী মিটিং আমি বিষয়টি তুলে ধরব । যদি রোগী কল্যাণ সমিতির ফান্ড থেকে টাকাটি দেওয়া হয়ে থাকে । তাহলে তার একটি জবাবদিহি সুপারকে দিতে হবে । এটা আমি পরবর্তী মিটিংয়ে আলোচনা করব ।’’
প্রসঙ্গত, করোনার সময়ে রোগী কল্যাণ সমিতির পাশের চেয়ারে ড. সুশান্তকুমার রায়কে বসতে দেওয়া হয় । যাতে স্বাস্থ্য দফতরের কোভিড মোকাবিলার সরকারি কাজ করতে পারেন । অভিযোগ, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের ঘর দখল করে নিয়েছেন ড. রায় ৷
আরও পড়ুন : North Bengal OSD: উত্তরবঙ্গের ওএসডি সুশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে চিকিৎসকদের উপর জুলুমের অভিযোগ
এই নিয়ে জলপাগুড়ির বিশিষ্ট শিল্পী নীহার মজুমদারের কটাক্ষ, ‘‘একটা পদ পেয়ে কী করবেন বুঝে উঠতে পারছেন না ।’’ একই সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমি যতদূর জানি সরকারি কোনও দফতর কাজ করতে হলে, তা পূর্ত দফতরের মাধ্যমেই হয় । কিন্তু সুশান্ত রায়ের ঘরটি কি পূর্ত দফতরের মাধ্যমে হয়েছে ? দেখে তা মনে হচ্ছে না ।’’
এদিকে গ্রিন জলপাইগুড়ি নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক অঙ্কুর দাস বলেন, ‘‘রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের ঘর দখল করে সুশান্ত রায় চেম্বার নিয়ম বর্হিভূতভাবে বানাবেন, এটা তো ওঁর কাছে কাম্য । উনি তো উত্তরবঙ্গের অঘোষিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী । ওঁর অপকর্মের খতিয়ান তুলে ধরতে হলে দু’দিনেও শেষ করা যাবে না ।’’
অন্যদিকে এই নিয়ে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার বা জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কোনও মন্তব্য করতে চাননি । এই নিয়ে উত্তরবঙ্গের জনস্বাস্থ্য বিভাগের ওএসডি কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷