কলকাতা, 6 অক্টোবর: আবারও ঠেকে শিখল নবান্ন (Nabanna) ৷ জলপাইগুড়ির মাল নদীতে বিসর্জনের সময় আচমকা হড়পা বানে আটজনের মৃত্যুর (Jalpaiguri Immersion Accident) পর নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকার ৷ বিসর্জনের মরশুমে (Durga Idol Immersion) সবক'টি জেলার প্রশাসনকে সতর্ক করল রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবন ৷ দেওয়া হল নয়া নির্দেশ ৷
বৃহস্পতিবার আয়োজিত একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে সমস্ত জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Hari Krishna Dwivedi) ৷ সূত্রের খবর, এই বৈঠকে তিনি সমস্ত জেলাশাসককে সতর্ক থাকার কড়া নির্দেশ দিয়েছেন ৷ জলপাইগুড়ির ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব ৷ বিসর্জনের ঘাটগুলি ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা আঁটোসাটো করতে বলেছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: বিসর্জনের কার্নিভাল বন্ধের দাবিতে জেলাশাসককে চিঠি বিদ্বজনেদের
উল্লেখ্য, বুধবার খাতায়-কলমে বিজয়া দশমীর রীতি শেষ হলেও প্রতিমা নিরঞ্জনের প্রক্রিয়া এখনও বহু জায়গাতেই বাকি রয়ে গিয়েছে ৷ বিশেষ করে বড় বাজেটের পুজোগুলিতে সম্প্রতি দশমীর পরও প্রতিমা মণ্ডপে রেখে দেওয়ার চল শুরু হয়েছে ৷ ফলে আবারও যাতে কোনও দুর্ঘটনা না-ঘটে, সেই বিষয়েই নিশ্চিত হতে চাইছে নবান্ন ৷
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলাশাসকদের বলা হয়, যেখানে যেখানে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে, সেই সমস্ত জায়গায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করতে হবে ৷ প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য কোথাও নদী বা জলস্রোতের স্বাভাবিক ধারা আটকানো যাবে না ৷ যে কোনও দুর্ঘটনার মোকাবিলা করার মতো প্রশিক্ষিত লোকবল এবং সরঞ্জাম মজুত রাখতে হবে ৷ নিরঞ্জনের ঘাটগুলিতে সর্বদা নজরদারির বন্দোবস্ত করতে হবে ৷ প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এখনও তিনদিন প্রতিমা নিরঞ্জন হবে ৷ সেই প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে ৷
প্রসঙ্গত, জলপাইগুড়ি জেলার মাল নদীতে নিরঞ্জনের সময় যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাতে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে ৷ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি যেমন জানতে চাইছে, নিরঞ্জনের জন্য নদীতে কেন বাঁধ দেওয়া হল ? কেন আটকানো হল নদীর স্বাভাবিক গতিপথ ? প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও ৷
সূত্রের খবর, নবান্নের এদিনের এই বৈঠকে রাজ্যের তরফ থেকে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কাছে জবাব তলব করা হয়েছে ৷ বুধবারের ঘটনায় প্রশাসনিক স্তরে কোনও গাফিলতি ছিল কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে ৷ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য নদীর ঘাটে কী কী ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তারও বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে ৷ নবান্নেরই একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাট থেকেই পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন ৷ মুখ্যসচিবের সঙ্গে এ নিয়ে কথাও বলেছেন তিনি ৷