ধূপগুড়ি, 11 নভেম্বর: প্রতিবেশী তরুণীর সঙ্গে বৃদ্ধের প্রেমের সম্পর্কের জের ৷ বাড়ি ছাড়ার দু'দিন পর গাছে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার দু'জনের ৷ শনিবার ভোরের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ধূপগুড়ি শহরে ৷ মৃত তরুণীর নাম বাবলি রায়(19) ৷ তাঁর বাড়ি আট নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল পাড়ায় ৷ মৃত বৃদ্ধের নাম অতুল রায়(65) ৷ তাঁর বাড়ি ধূপগুড়ি এক নম্বর ওয়ার্ডের চাকলা এলাকায় ৷ প্রাথমিকভাবে পুলিশ ও স্থানীয়দের অনুমান দু'জনে আত্মহত্যা করেছেন ৷ তবে পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমেছে ৷ দেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৷
জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ ও তরুণী প্রতিবেশী ৷ সম্পর্কে ঠাকুরদা ও নাতনি হয় ৷ তাঁরা দু'জনে একসঙ্গে কীর্তন করতেন ৷ তরুণীর মা লক্ষ্মী রায় জানান, তিনদিন আগে তাঁর মেয়ে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে চলে গিয়েছিল ৷ সেখান থেকে তাঁরা তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন । এরপর মেয়েকে অনেক বোঝানো হয় ৷ কিন্তু তারপরের দিন ফের বাবলি না বলে বাড়ি ছাড়েন ৷ পরিবারের সদস্যরা তাঁকে খুঁজে না পেয়ে ধূপগুড়ি থানার দারস্থ হন । তারপরে শনিবার ভোর চারটা নাগাদ বৃদ্ধের বাড়ির উঠোনে তাঁদের দু'জনের দেহ মিলল ৷ এ দিন সুপারি গাছে লাগানো বাঁশের উপর কাপড়ের ফাঁস দেওয়া অবস্থায় দু'জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ।
ঘটনার খবর পেয়ে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ সেখানে আসে ৷ ঘটনাস্থল থেকে দেহ দুটি উদ্ধার করে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ৷ কর্তব্যরত চিকিৎসক দু'জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন । মেয়েটি একাদশ শ্রেণিতে পড়তেন বলে জানা গিয়েছে । এই ঘটনায় দুই পরিবার-সহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে ।
স্থানীয় বাসিন্দা রঘুনাথ সূত্রধর বলেন, "এই ধরনের সর্ম্পকের বিষয়ে আমরা আগে আন্দাজ করিনি । কারণ তাঁদের ঠাকুরদা-নাতনি সর্ম্পক ছিল ।" যুবতীর মা লক্ষ্মী রায় বলেন, "মেয়ে তিনদিন আগে ব্যাগপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল । সেই সময় বাড়ির লোকজন গিয়ে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে এসেছিল ৷ কিন্তু পরবর্তীতে সে আবার চলে যায় । ফোনের সুইচ অফ ছিল বলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি । এরপরেই থানায় নিখোঁজের অভিযোগ জানানো হয়েছিল ।"
মৃত বৃদ্ধের ছেলে তাপস রায় কথায়, বাড়ির উঠোনেই সুপারি গাছে দু'জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় । দু'জনের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক ছিল ৷ তাঁরা আত্মহত্যা করেছে বলে মনে করছেন তিনি । ধূপগুড়ি পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর কৃষ্ণদেব রায় বলেন, "মনে হচ্ছে প্রেমের সর্ম্পকের জেরে এই ঘটনা । তবে খুবই দু:খজনক ঘটনা এটি ।" জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রামীণ ওয়াংদে ভুটিয়া জানান, ঘটনার বিষয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে । প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে ৷ তবে তদন্তের পর ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে ৷
আরও পড়ুন: