জলপাইগুড়ি, 26 মে : দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়িকে সড়ক পথে যোগাযোগ করে 27 নম্বর জাতীয় সড়ক ৷ এই সড়কের মাধ্যমেই উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশের বাকি অংশের যোগাযোগ স্থাপন করা ৷ কিন্তু এই জাতীয় সড়কটি এক লেনের ৷ তাই যানবাহনের চাপে বেহাল দশা এই সড়কের ৷ তাই দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরটিকে চার লেনের বানানোর ৷
বিগত চার বছর ধরে এই করিডোরটিকে চার লেনের বানানোর কাজ চলছে ৷ ঘোষপুকুর থেকে ধুপগুড়ি পর্যন্ত ৮৩ কিলোমিটার ২৭ নং জাতীয় সড়কের চার লেনে বানানোর বরাত পায় L & T সংস্থা ৷ প্রথমদিকে ধীর গতিতে কাজ চললেও শেষ দুই বছর কাজে গতি পায় ৷ কিন্তু লকডাউন ও তার পরবর্তী সময়ে গতি হারায় এই কাজ ৷
এই জাতীয় সড়কেই তিস্তার উপর আছে একটি সেতু ৷ কিন্তু ক্রমাগত গাড়ির চাপ বাড়তে থাকায় দ্বিতীয় সেতু বানানোর পরিকল্পনা নেই প্রশাসন ৷ সেই মতো শুরু হয় কাজ ৷ প্রকস্তুতকারী সংস্থার কথা মতো জুন মাসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল সেতুর কাজ ৷ কিন্তু দেশজুড়ে দীর্ঘ লকডাউনের জেরে আপাতত তা বিশ বাঁও জলে ৷
কোরোনা মোকাবিলায় জন্য দীর্ঘদিনের লকডাউন ৷ আর তার জেরেই গতি হারিয়েছে দার্জিলিং জেলা থেকে জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়ি পর্যন্ত জাতীয় সড়কে ফোর লেনের কাজ ৷ এমনকী থমকে গেছে ইস্টওয়েস্ট করিডোরের তিস্তার উপর দীর্ঘ এক কিলোমিটারের ব্রিজ তৈরির কাজও ৷
কোরোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে জারি হল লকডাউন ৷ ফলে বন্ধ হয়ে যায় জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ ৷ বাড়ি ফিরে যান অনেক শ্রমিক ৷ লকডাউনের আগে এই প্রকল্পে কাজ করত প্রায় 550 জন শ্রমিক ৷ লকডাউনের পর তা কমে দাঁড়ায় 300 জনে ৷ পরে সরকারের নির্দেশে সামাজিক দূরত্ব মেনে কাজ শুরু হলেও, শ্রমিকের অভাবে তা গতি হারায় ৷ অতিরিক্ত যন্ত্রপাতি এনে কাজের গতি বাড়ানোর চেষ্টাও করা হয় ৷
লকডাউনেও মধ্যেই ধীরে ধীরে হবে ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরের ফোর লেন নির্মাণের কাজ । এই মর্মে নবান্ন থেকে কাজ শুরু করার অনুমতি পায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ৷ সেইমতো এখানে থেকে যাওয়া শ্রমিকদের বাড়ি ফেরাতে মানা করা হয় জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে । কারণ শ্রমিকরা একবার নিজেদের রাজ্যে ফিরে গেলে তাঁদের ফেরানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷ তবে শ্রমিকদের থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেই করার নির্দেশ দেয় জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে ।
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সড়কের কাজ সামাজিক দূরত্বের বিধি মেনেই হবে । এক জায়গায় সব শ্রমিককে কাজে লাগানো হবে না । আপাতত মেশিনের দ্বারা যে কাজগুলো করা যায় সেগুলি বেশি করে করা হচ্ছে । জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প ম্যানেজার প্রদ্যুৎ দাশগুপ্ত বলেন, আমাদের ফোর লেনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে । তবে আমাদের যে টার্গেট ছিল তা থেকে আমরা পিছিয়ে গিয়েছি । তবে সামনে বর্ষাকাল থাকায় ইস্ট ওয়েস্ট করিডোরের কাজ যে আরও দীর্ঘায়িত হবে, তা বলাই বাহুল্য ৷