ETV Bharat / state

Lataguri Township Controversy: ইকো সেনসিটিভ জোনের 50 মিটারের মধ্যে নির্মাণ, লাটাগুড়ি টাউনশিপ নিয়ে একাধিক অভিযোগ বিজেপির - Forest Minister Jyotipriya on Lataguri Township

বেআইনিভাবে জলপাইগুড়িস্থিত লাটাগুড়িতে টাউনশিপ তৈরি হচ্ছে ৷ এলাকা পরিদর্শন করে তৃণমূল সরকারকে দুষলেন বিজেপি সাংসদ ও 8 বিধায়ক (BJP Visits Lataguri Township)৷

ETV Bharat
লাটাগুড়িতে টাউনশিপ
author img

By

Published : Mar 20, 2023, 12:56 PM IST

লাটাগুড়িতে টাউনশিপ তৈরির বিতর্কে বিজেপি ও তৃণমূলের বক্তব্য

জলপাইগুড়ি, 20 মার্চ: মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিকে আবাসন প্রকল্প করার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে টাকার বিনিময়ে । জলপাইগুড়ির লাটাগুড়িতে টাউনশিপ নিয়ে এমনই অভিযোগ বিজেপি বিধায়কের (Jalpaiguri News)। ইকো সেনসিটিভ জোনের 50 মিটারের মধ্যে টাউনশিপ তৈরির অনুমতি কীভাবে পেল একটি বহুজাতিক সংস্থা (অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপ) তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে । রবিবার লাটাগুড়ি জঙ্গলের পাশে এই টাউনশিপ পরিদর্শনে যান জেলার বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদরা । ইকো সেনসেটিভ জোনের মধ্যেই কী করে হাইরাইজ বিল্ডিং হচ্ছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা ৷

কলকাতা হাইকোর্ট ও গ্রিন ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হতে চলেছে বিজেপি । ইতিমধ্যেই লাটাগুড়ির এই টাউনশিপ নিয়ে বিধানসভায় সোচ্চার হয়েছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ । স্থানীয় মানুষদের নিয়ে গণ আন্দোলন গড়ে তোলারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি । যদিও সরকারি সব নিয়ম মেনেই অনুমতি অনুসারে এই টাউনশিপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপ ।

Lataguri
লাটাগুড়িতে টাউনশিপ পরিদর্শনে বিজেপি সাংসদ ও বিধায়করা
রবিবার লাটাগুড়ির এই এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলার 8 বিজেপি বিধায়ক ও জলপাইগুড়ির সাংসদ (8 BJP MLA and one MP Visits Lataguri Township)। লাটাগুড়ি রেললাইনের পাশ দিয়ে জঙ্গলের রাস্তা ধরে তাঁরা জঙ্গলের পাশে গড়ে ওঠা টাউনশিপের প্রকল্পের জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ।

এই বিষয়ে বিজেপির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, "বন্য আবাস নামে লাটাগুড়িতে একটা প্রকল্প হচ্ছে । আমি বিধানসভার অভ্যন্তরে প্রশ্ন তুলেছি ৷ এখানে এসে অবাক হয়েছি । জঙ্গলের কাঁচা রাস্তা দিয়ে এসেই বুঝেছি এটা জঙ্গলের একদম পাশেই । এখান দিয়ে হাতি যাতায়াত করে । কিন্তু জঙ্গল সাফাই করে করে কোনও প্রকল্প হবে না । আমরা এর বিরোধী ৷ প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করে টাকা রোজগার করছে এই সরকার । গ্রিন বেঞ্চের রায় ও গ্রিন ট্রাইব্যুনালকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাজ করা হয়েছে । বনমন্ত্রী বলছেন জঙ্গল থেকে অনেক দূরে তৈরি হচ্ছে এই প্রকল্পটি । কিন্তু এখানে এসে দেখা যাচ্ছে জঙ্গলের 50 মিটারের মধ্যেই টাউনশিপ গড়ে তোলা হচ্ছে । আসলে বনমন্ত্রী কলকাতায় থাকেন তাই তিনি জানেন না । আগামীতে হাইকোর্ট রিড ফাইল করা হবে । গ্রিন ট্রাইব্যুনালে যাওয়া হবে । আমরা পরিবেশ মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছি । গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ জঙ্গলের পাশে কমার্শিয়াল বিল্ডিং করা যাবে না । কিন্তু সেটা হচ্ছে না ।"

জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ ডা: জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, "জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় হাইরাইজ বিল্ডিং হচ্ছে জানতে পারি । তাই 13 ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্টে এই প্রশ্ন তুলি । কীভাবে বড় বিল্ডিং হচ্ছে । হলে নিয়ম কী আছে । জঙ্গলের বর্ডার থেকে কত দূর ও ইকো সেনসেটিভ জোন দেখে তবে অনুমতি দেওয়া হয় । লাটাগুড়িতে যেটা হচ্ছে সেটা ইকো সেনসেটিভ জোন । দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনও স্থায়ী বিল্ডিং করা যাবে না । কিন্তু এখানে 50 মিটারের মধ্যেই তা করা হচ্ছে ।যেখানে বন্যপ্রাণীদের করিডোর, যেখানে বন্যপ্রাণীরা জল খেতে আসে সেই ইকো সেনসেটিভ জোনেই গড়ে উঠছে টাউনশিপ । শুধু তাই নয় জঙ্গলের জলাধারের গতিপথে পরিবর্তন করে পাথর দিয়ে বাঁধাই করে ফেলা হচ্ছে ।"

এদিকে অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ পাণ্ডে বলেন, "আমরা আবাসন করার জন্য সরকারের সমস্ত নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়েই কাজ শুরু করেছি । আমরা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর থেকে জমি কমার্শিয়াল কনভারসনও করেছি । স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে 2007-2008 সালে জমি কিনেছি । সরকারিভাবে আমাদের জমি দেওয়া হয়নি । আমাদের প্রকল্পটি কোনও রিজার্ভ ফরেস্টের কাছে নয় । এটি জলপাইগুড়ি বনবিভাগের জঙ্গলের নিম্ন টুন্ডুর জঙ্গল রয়েছে । আমাদের জমিতেই আমরা 'বন্য আবাস' প্রোজেক্ট করছি । এই প্রোজেক্ট হয়ে গেলে এলাকায় প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে ।"

সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Forest Minister Jyotipriya Mallick on Lataguri Township) জানান, পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্ত নিয়ম মেনেই টাউনশিপ তৈরি করা হচ্ছে ৷ কাঁটাতার থেকে 200 মিটার দূরে অবস্থিত এই জায়গা ৷ আর লাটাগুড়ি বনাঞ্চল থেকে 3.2 কিমি দূরে ৷ সুপ্রিম কোর্ট সেনসিটিভ নিয়ম এখনও তৈরি করেনি ৷ তৈরি হলে সেখানে উল্লিখিত এলাকায় থাকা সবকিছু ভেঙে দেওয়া হবে ৷

আরও পড়ুন : বাড়ছে নদীভাঙন, দিদির সুরক্ষা কবচে এসে ক্ষোভের মুখে মন্ত্রী বুলু চিক

লাটাগুড়িতে টাউনশিপ তৈরির বিতর্কে বিজেপি ও তৃণমূলের বক্তব্য

জলপাইগুড়ি, 20 মার্চ: মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতিকে আবাসন প্রকল্প করার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে টাকার বিনিময়ে । জলপাইগুড়ির লাটাগুড়িতে টাউনশিপ নিয়ে এমনই অভিযোগ বিজেপি বিধায়কের (Jalpaiguri News)। ইকো সেনসিটিভ জোনের 50 মিটারের মধ্যে টাউনশিপ তৈরির অনুমতি কীভাবে পেল একটি বহুজাতিক সংস্থা (অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপ) তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে । রবিবার লাটাগুড়ি জঙ্গলের পাশে এই টাউনশিপ পরিদর্শনে যান জেলার বিজেপি বিধায়ক ও সাংসদরা । ইকো সেনসেটিভ জোনের মধ্যেই কী করে হাইরাইজ বিল্ডিং হচ্ছে সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা ৷

কলকাতা হাইকোর্ট ও গ্রিন ট্রাইব্যুনালের দ্বারস্থ হতে চলেছে বিজেপি । ইতিমধ্যেই লাটাগুড়ির এই টাউনশিপ নিয়ে বিধানসভায় সোচ্চার হয়েছেন শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ । স্থানীয় মানুষদের নিয়ে গণ আন্দোলন গড়ে তোলারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিজেপি । যদিও সরকারি সব নিয়ম মেনেই অনুমতি অনুসারে এই টাউনশিপ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপ ।

Lataguri
লাটাগুড়িতে টাউনশিপ পরিদর্শনে বিজেপি সাংসদ ও বিধায়করা
রবিবার লাটাগুড়ির এই এলাকায় পৌঁছে গিয়েছিলেন দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলার 8 বিজেপি বিধায়ক ও জলপাইগুড়ির সাংসদ (8 BJP MLA and one MP Visits Lataguri Township)। লাটাগুড়ি রেললাইনের পাশ দিয়ে জঙ্গলের রাস্তা ধরে তাঁরা জঙ্গলের পাশে গড়ে ওঠা টাউনশিপের প্রকল্পের জায়গা পরিদর্শনে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ।

এই বিষয়ে বিজেপির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, "বন্য আবাস নামে লাটাগুড়িতে একটা প্রকল্প হচ্ছে । আমি বিধানসভার অভ্যন্তরে প্রশ্ন তুলেছি ৷ এখানে এসে অবাক হয়েছি । জঙ্গলের কাঁচা রাস্তা দিয়ে এসেই বুঝেছি এটা জঙ্গলের একদম পাশেই । এখান দিয়ে হাতি যাতায়াত করে । কিন্তু জঙ্গল সাফাই করে করে কোনও প্রকল্প হবে না । আমরা এর বিরোধী ৷ প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করে টাকা রোজগার করছে এই সরকার । গ্রিন বেঞ্চের রায় ও গ্রিন ট্রাইব্যুনালকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কাজ করা হয়েছে । বনমন্ত্রী বলছেন জঙ্গল থেকে অনেক দূরে তৈরি হচ্ছে এই প্রকল্পটি । কিন্তু এখানে এসে দেখা যাচ্ছে জঙ্গলের 50 মিটারের মধ্যেই টাউনশিপ গড়ে তোলা হচ্ছে । আসলে বনমন্ত্রী কলকাতায় থাকেন তাই তিনি জানেন না । আগামীতে হাইকোর্ট রিড ফাইল করা হবে । গ্রিন ট্রাইব্যুনালে যাওয়া হবে । আমরা পরিবেশ মন্ত্রককে চিঠি দিয়েছি । গ্রিন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ জঙ্গলের পাশে কমার্শিয়াল বিল্ডিং করা যাবে না । কিন্তু সেটা হচ্ছে না ।"

জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ ডা: জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, "জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় হাইরাইজ বিল্ডিং হচ্ছে জানতে পারি । তাই 13 ফেব্রুয়ারি পার্লামেন্টে এই প্রশ্ন তুলি । কীভাবে বড় বিল্ডিং হচ্ছে । হলে নিয়ম কী আছে । জঙ্গলের বর্ডার থেকে কত দূর ও ইকো সেনসেটিভ জোন দেখে তবে অনুমতি দেওয়া হয় । লাটাগুড়িতে যেটা হচ্ছে সেটা ইকো সেনসেটিভ জোন । দুই কিলোমিটারের মধ্যে কোনও স্থায়ী বিল্ডিং করা যাবে না । কিন্তু এখানে 50 মিটারের মধ্যেই তা করা হচ্ছে ।যেখানে বন্যপ্রাণীদের করিডোর, যেখানে বন্যপ্রাণীরা জল খেতে আসে সেই ইকো সেনসেটিভ জোনেই গড়ে উঠছে টাউনশিপ । শুধু তাই নয় জঙ্গলের জলাধারের গতিপথে পরিবর্তন করে পাথর দিয়ে বাঁধাই করে ফেলা হচ্ছে ।"

এদিকে অম্বুজা নেউটিয়া গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট রমেশ পাণ্ডে বলেন, "আমরা আবাসন করার জন্য সরকারের সমস্ত নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়েই কাজ শুরু করেছি । আমরা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর থেকে জমি কমার্শিয়াল কনভারসনও করেছি । স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে 2007-2008 সালে জমি কিনেছি । সরকারিভাবে আমাদের জমি দেওয়া হয়নি । আমাদের প্রকল্পটি কোনও রিজার্ভ ফরেস্টের কাছে নয় । এটি জলপাইগুড়ি বনবিভাগের জঙ্গলের নিম্ন টুন্ডুর জঙ্গল রয়েছে । আমাদের জমিতেই আমরা 'বন্য আবাস' প্রোজেক্ট করছি । এই প্রোজেক্ট হয়ে গেলে এলাকায় প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হবে ।"

সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Forest Minister Jyotipriya Mallick on Lataguri Township) জানান, পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্ত নিয়ম মেনেই টাউনশিপ তৈরি করা হচ্ছে ৷ কাঁটাতার থেকে 200 মিটার দূরে অবস্থিত এই জায়গা ৷ আর লাটাগুড়ি বনাঞ্চল থেকে 3.2 কিমি দূরে ৷ সুপ্রিম কোর্ট সেনসিটিভ নিয়ম এখনও তৈরি করেনি ৷ তৈরি হলে সেখানে উল্লিখিত এলাকায় থাকা সবকিছু ভেঙে দেওয়া হবে ৷

আরও পড়ুন : বাড়ছে নদীভাঙন, দিদির সুরক্ষা কবচে এসে ক্ষোভের মুখে মন্ত্রী বুলু চিক

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.