ধূপগুড়ি, 30 অগস্ট: নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ৷ তাঁর দাবি, ছাত্রবস্থায় যে নেতারা দুর্নীতিতে হাতপাকাতে পারেন, তাঁদের পরে মূল দলে বড় পদ দেয় তৃণমূল কংগ্রেস ৷
আগামী 5 সেপ্টেম্বর জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি বিধানসভা আসনে উপ-নির্বাচন ৷ সেখানে বিজেপি প্রার্থী করেছে শহিদ জওয়ানের স্ত্রী তাপসী রায়কে ৷ তাঁর সমর্থনে এ দিন সেখানে প্রচারে যান সুকান্ত মজুমদার ৷ প্রচার ও সেই সংক্রান্ত একাধিক কর্মসূচির মাঝেই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ৷ সেই সময়ই তিনি তোপ দাগেন ঘাসফুল শিবিরের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে ৷
বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, কয়েকটি শিক্ষাঙ্গন ছাড়া রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দখল নিয়ে নিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ৷ শিক্ষক নিয়োগ থেকে গবেষণার সুযোগ পাবেন, তা তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন ঠিক করে দেয় ৷ ভর্তির ক্ষেত্রেও টিএমসিপি টাকা নেয় বলে তিনি অভিযোগ করেন ৷
এর পর তিনি বলেন, ‘‘চোর কীভাবে তৈরি হবে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের নেতাদের প্রশিক্ষণ শুরু হয় ৷ ওখানে হাতপাকাও ৷ হাতপাকিয়ে যখন বড় চোর হবে, তখন তোমাকে মূল দলের দায়িত্ব দেওয়া হবে আরও বেশি করে চুরি করার জন্য ৷’’
এছাড়া এ দিন তিনি জানান, 40 কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী হলে তবেই ধূপগুড়িতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্ভব ৷ জলপাইগুড়ির জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন ৷ তিনি আরও বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস এই উপনির্বাচনে আরও অনৈতিক কিছু করবে বলে আমাদের কাছে খবর রয়েছে ৷ তাই আগামী 3 তারিখ পর্যন্ত অর্থাৎ প্রচারের শেষ দিন পর্যন্ত এখানে থাকার চিন্তাভাবনা করেছি ।’’
এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিষয়ে বলেন, "রাজবংশী ও নমঃশূদ্র মানুষকে হেয় করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । একারণে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে । তা না হলে বিজেপি রাজবংশী ও নমঃশূদ্র মানুষকে নিয়ে আন্দোলনে নামবে ।’’
পশ্চিমবঙ্গ দিবস নিয়ে ডাকা রাজ্য সরকারের সর্বদলীয় বৈঠক নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘গতকাল একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছিল রাজ্য সরকারের তরফে সেখানে আমরা যাইনি । কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণের পরিকল্পনা ও বাংলার ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছিল ৷ সেই কারণে আমরা ওই বৈঠকে না গিয়ে একটি নোট পাঠিয়েছি আমাদের উত্তর হিসেবে ।’’
আরও পড়ুন: তৃণমূল পাকিস্তানপ্রেমীদের সরকার চালাচ্ছে, ধূপগুড়ি থেকে তোপ সুকান্তর
সাংবাদিক সম্মেলনের পর তিনি আচমকা চলে যান ধূপগুড়ি পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শিক্ষক শৈলেন রায়ের বাড়িতে । উল্লেখ্য, ধূপগুড়ি পৌরসভা 2012 সালে প্রথম এককভাবে তৃণমূল কংগ্রেস দখল করে এবং চেয়ারম্যান পদে বসেন শৈলেন রায় । যদিও তারপর আর দলের কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি তাঁকে । এমনকি 2017 সালের পৌরসভা ভোটে তৃণমূল তাঁকে প্রার্থীও করেনি । যদিও এ দিনের এই সাক্ষাৎ সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে দাবি করে দুই পক্ষই । তবে উপনির্বাচনের আগে এই নিয়ে জল্পনা ছড়িয়েছে ধূপগুড়িতে ।
এ দিন বিজেপির সদ্য প্রয়াত বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের বাড়িতেও যান দলের রাজ্য সভাপতি ৷ বিষ্ণুপদ রায়ের ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ।