ETV Bharat / state

Alipurduar Bee Farming: গ্রামে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি চাষ, আর্থিক লাভও হচ্ছে গ্রামবাসীদের

বক্সার জঙ্গল লাগোয়া বন-বস্তি বা গ্রামগুলোতে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয়রা (Bee Farming to Prevent Elephant Attacks) ৷ মৌমাছি চাষের ফলে মধু সংগ্রহ করে রোজগার হচ্ছে । পাশপাশি কমেছে হাতির হানাও ।

Alipurduar Bee Farming
গ্রামে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি চাষের উদ্যোগ
author img

By

Published : Nov 11, 2022, 6:58 AM IST

Updated : Nov 11, 2022, 2:29 PM IST

আলিপুরদুয়ার, 11 নভেম্বর: গ্রামে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি চাষ । কামড়ের ভয়ে মৌমাছির ধারে কাছেও ঘেষছে না হাতির পাল (Bee Farming to Prevent Elephant Attacks)। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল থেকে প্রায়শই লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে হাতি । বিশেষ করে বক্সার জঙ্গল লাগোয়া বন বস্তি বা গ্রামগুলোতে হাতি হানা নিত্য দিনের ঘটনা । আর তা রুখতেই এই অভিনব উদ্যোগ ।

হাতির হানায় বিঘার পর বিঘা ধান থেকে শুরু করে সবজি সাবার করে চলে যায় হাতির দল । ফলে আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়েন কৃষকরা। শুধু কৃষকের আনাজই নয়, হাতির হানায় ঘর বাড়ি যেমন ক্ষতি হয় তেমনই জীবনহানিও ঘটে । এমন পরিস্থিতিতে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি পালনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন সমাজসেবী সদানন্দ চক্রবর্তী । তার হাত ধরেই জেলা প্রশাসন আলিপুরদুয়ার 2 নং ব্লকের নুরপুর গ্রামে মৌমাছি পালনের উদ্যোগ নেয় ।

আরও পড়ুন: মাকে বাঁচিয়ে মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু ছেলের

জঙ্গল থেকে গ্রামে হাতি ঢোকার করিডোরে মৌমাছি চাষ করা হচ্ছে । ফলে ওই পথ দিয়ে হাতি আর আসছে না । মৌমাছির ভয়ে হাতি কম আসছে আর তাই ফসলও নষ্ট হচ্ছে না । মৌমাছি চাষের ফলে মধু সংগ্রহ করে রোজগারও হচ্ছে । হাতির হানা অনেকটাই কমে গিয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নুরপুর গ্রামে । এমনটাই দাবি গ্রামবাসীদের । হাতির হানা কম হওয়ার ফলে নিশ্চিন্তে চাষাবাদ করছেন গ্রামবাসী । এবার ধানের ফলনও ভালো হয়েছে । অন্যান্য চাষও করেছেন গ্রামবাসীরা । নুরপুরের রায়পাড়া, আলবিশ পাড়া, বল্কুপাড়া, দামশিবাদ, গির্গাপাড়ার প্রায় কয়েকশো পরিবার এই মৌমাছি পালনের সঙ্গে যুক্ত । খাদি ইন্ডিয়ার রিডিউসিং এলিফ্যান্ট হিউম্যান অ্যাটাকস ইউসিং বিস (Reducing Elephant-Human Attacks using Bees) প্রজেক্টের মাধ্যমে মৌমাছি চাষ হচ্ছে । বর্ষাকাল বাদ দিয়ে বছরের অন্যান্য সময় মধু সংগ্রহ হচ্ছে । তবে গ্রামবাসীদের আরও প্রশিক্ষনের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানা গেছে ।

জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা মধু বিক্রির জন্য যশোডাঙায় একটি আউটলেটের ব্যবস্থা করেছেন । 'ডুয়ার্স হানি' নামে তা বিক্রি করা হচ্ছে । এক একটি বাক্স থেকে সপ্তাহে অন্তত 4 থেকে 5 কেজি মধু সংগ্রহ হয় । তবে তা চাষাবাদের উপর নির্ভর করে ।

গ্রামবাসী রাজকুমার মণ্ডল এবং রামনিয়াজরা বলেন, "আমরা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের পাশেই থাকি । ফলে হাতি প্রায়শই আমাদের গ্রামে আসত । জেলাপ্রশাসনের উদ্যোগে হাতির হানা রুখতে হাতির যাতায়াতের করিডোরে আমরা মৌমাছির চাষ করছি । তাতে হাতি ওই পথ দিয়ে গ্রামে ঢুকছে না । আমরা ভালো করে চাষাবাদ করতে পারছি । তাছাড়া মধু সংগ্রহ করে আমরা আর্থিক দিক দিয়েও লাভবান হচ্ছি ।"

স্থানীয় বাসিন্দা রামপ্রসাদ টোপ্পো বলেন, "জঙ্গলের পাশে থাকি । কোনও চাষাবাদ করলে কিছুই বাঁচত না । হাতি খেয়ে চলে যেত । আমরা মৌমাছি চাষের বাক্স হাতির করিডোরে রেখে দিচ্ছি । তাতে করে ওই করিডোর দিয়ে হাতি আসছে না । কিন্তু যেখানে মৌমাছির বাক্স নেই যেখানে দিয়ে হাতি আসে । মৌমাছি চাষের ফলে আমাদের উপকার হয়েছে । মধু সংগ্রহ করে লাভও হচ্ছে ।"

গ্রামে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি চাষের উদ্যোগ

আরও পড়ুন: মাখনায় লক্ষ্মী লাভের আভাস ! ফলন বাড়াতে উদ্যোগী মালদা প্রশাসন

আলিপুরদুয়ার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অমিতাভ রায় জানান, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা গ্রামে মৌমাছির চাষ করে লাভবান হয়েছি । একদিকে হাতির হানা কমেছে ৷ অন্যদিকে বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা হয়েছে । আমরা যেহেতু জঙ্গল ঘেরা জায়গায় থাকি । যেখানে হাতির হানা লেগেই আছে । গ্রামের 264টি পরিবার এই মৌমাছি পালনের সঙ্গে যুক্ত । জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনার উদ্যোগ নেন মৌমাছি চাষের জন্য ।

আলিপুরদুয়ার, 11 নভেম্বর: গ্রামে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি চাষ । কামড়ের ভয়ে মৌমাছির ধারে কাছেও ঘেষছে না হাতির পাল (Bee Farming to Prevent Elephant Attacks)। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল থেকে প্রায়শই লোকালয়ে বেরিয়ে আসছে হাতি । বিশেষ করে বক্সার জঙ্গল লাগোয়া বন বস্তি বা গ্রামগুলোতে হাতি হানা নিত্য দিনের ঘটনা । আর তা রুখতেই এই অভিনব উদ্যোগ ।

হাতির হানায় বিঘার পর বিঘা ধান থেকে শুরু করে সবজি সাবার করে চলে যায় হাতির দল । ফলে আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়েন কৃষকরা। শুধু কৃষকের আনাজই নয়, হাতির হানায় ঘর বাড়ি যেমন ক্ষতি হয় তেমনই জীবনহানিও ঘটে । এমন পরিস্থিতিতে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি পালনের উদ্যোগ নিয়েছিলেন সমাজসেবী সদানন্দ চক্রবর্তী । তার হাত ধরেই জেলা প্রশাসন আলিপুরদুয়ার 2 নং ব্লকের নুরপুর গ্রামে মৌমাছি পালনের উদ্যোগ নেয় ।

আরও পড়ুন: মাকে বাঁচিয়ে মৌমাছির কামড়ে মৃত্যু ছেলের

জঙ্গল থেকে গ্রামে হাতি ঢোকার করিডোরে মৌমাছি চাষ করা হচ্ছে । ফলে ওই পথ দিয়ে হাতি আর আসছে না । মৌমাছির ভয়ে হাতি কম আসছে আর তাই ফসলও নষ্ট হচ্ছে না । মৌমাছি চাষের ফলে মধু সংগ্রহ করে রোজগারও হচ্ছে । হাতির হানা অনেকটাই কমে গিয়েছে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নুরপুর গ্রামে । এমনটাই দাবি গ্রামবাসীদের । হাতির হানা কম হওয়ার ফলে নিশ্চিন্তে চাষাবাদ করছেন গ্রামবাসী । এবার ধানের ফলনও ভালো হয়েছে । অন্যান্য চাষও করেছেন গ্রামবাসীরা । নুরপুরের রায়পাড়া, আলবিশ পাড়া, বল্কুপাড়া, দামশিবাদ, গির্গাপাড়ার প্রায় কয়েকশো পরিবার এই মৌমাছি পালনের সঙ্গে যুক্ত । খাদি ইন্ডিয়ার রিডিউসিং এলিফ্যান্ট হিউম্যান অ্যাটাকস ইউসিং বিস (Reducing Elephant-Human Attacks using Bees) প্রজেক্টের মাধ্যমে মৌমাছি চাষ হচ্ছে । বর্ষাকাল বাদ দিয়ে বছরের অন্যান্য সময় মধু সংগ্রহ হচ্ছে । তবে গ্রামবাসীদের আরও প্রশিক্ষনের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানা গেছে ।

জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনা মধু বিক্রির জন্য যশোডাঙায় একটি আউটলেটের ব্যবস্থা করেছেন । 'ডুয়ার্স হানি' নামে তা বিক্রি করা হচ্ছে । এক একটি বাক্স থেকে সপ্তাহে অন্তত 4 থেকে 5 কেজি মধু সংগ্রহ হয় । তবে তা চাষাবাদের উপর নির্ভর করে ।

গ্রামবাসী রাজকুমার মণ্ডল এবং রামনিয়াজরা বলেন, "আমরা বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলের পাশেই থাকি । ফলে হাতি প্রায়শই আমাদের গ্রামে আসত । জেলাপ্রশাসনের উদ্যোগে হাতির হানা রুখতে হাতির যাতায়াতের করিডোরে আমরা মৌমাছির চাষ করছি । তাতে হাতি ওই পথ দিয়ে গ্রামে ঢুকছে না । আমরা ভালো করে চাষাবাদ করতে পারছি । তাছাড়া মধু সংগ্রহ করে আমরা আর্থিক দিক দিয়েও লাভবান হচ্ছি ।"

স্থানীয় বাসিন্দা রামপ্রসাদ টোপ্পো বলেন, "জঙ্গলের পাশে থাকি । কোনও চাষাবাদ করলে কিছুই বাঁচত না । হাতি খেয়ে চলে যেত । আমরা মৌমাছি চাষের বাক্স হাতির করিডোরে রেখে দিচ্ছি । তাতে করে ওই করিডোর দিয়ে হাতি আসছে না । কিন্তু যেখানে মৌমাছির বাক্স নেই যেখানে দিয়ে হাতি আসে । মৌমাছি চাষের ফলে আমাদের উপকার হয়েছে । মধু সংগ্রহ করে লাভও হচ্ছে ।"

গ্রামে হাতির হানা রুখতে মৌমাছি চাষের উদ্যোগ

আরও পড়ুন: মাখনায় লক্ষ্মী লাভের আভাস ! ফলন বাড়াতে উদ্যোগী মালদা প্রশাসন

আলিপুরদুয়ার পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য অমিতাভ রায় জানান, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আমরা গ্রামে মৌমাছির চাষ করে লাভবান হয়েছি । একদিকে হাতির হানা কমেছে ৷ অন্যদিকে বিকল্প রোজগারের ব্যবস্থা হয়েছে । আমরা যেহেতু জঙ্গল ঘেরা জায়গায় থাকি । যেখানে হাতির হানা লেগেই আছে । গ্রামের 264টি পরিবার এই মৌমাছি পালনের সঙ্গে যুক্ত । জেলাশাসক সুরেন্দ্র কুমার মিনার উদ্যোগ নেন মৌমাছি চাষের জন্য ।

Last Updated : Nov 11, 2022, 2:29 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.