জলপাইগুড়ি, 23 মার্চ: একেই বলে গোদের ওপর বিষফোঁড়া । হাতি সন্তানকে কেড়ে নিয়েছিল । এবার জমির ফসল নষ্ট করে চলে গেল দাতাল হাতির দল । বনবিভাগকে ডাকা হলেও তাড়া আসেনি বলে অভিযোগ মৃত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুন দাসের বাবা ও স্থানীয়দের । কৃষকদের অভিযোগ, গত দু'দিন ধরে জলপাইগুড়ি বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল সংলগ্ন মহারাজ ঘাট এলাকায় হাতির হানা লেগেই রয়েছে । এর ফলে বিঘার পর বিঘা সবজি চাষের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কয়েক লক্ষ টাকা বলে দাবি কৃষকদের (Elephants rampage to damage crops of hapless Jalpaiguri family)।
প্রসঙ্গত, গত 23 ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় হাতির হানায় মৃত্যু হয় জলপাইগুড়ির বাসিন্দা অর্জুন দাসের । ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশের পরেই নড়েচড়ে বসেছিল বন দফতর । এলাকায় হাতির হানা রুখতে টহলদারি বাড়ানো-সহ ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর পরিবারের পাশে থাকার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । স্থানীয়দের অভিযোগ, এরপরেও কোনও হেলদোল নেই বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের বেলাকোবার রেঞ্জের । পরিস্থিতি যেই কে সেই রয়েছে ৷ অব্যাহত হাতির হানা ৷ যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বেলাকোবার রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত ।
মৃত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী অর্জুনের বাবা বিষ্ণু দাসের অভিযোগ, দুই বিঘা জমিতে 80 হাজার টাকা খরচ করে ঝিঙে চাষ করেছিলেন তিনি । হাতি সব নষ্ট করে দিয়ে চলে গিয়েছে ৷ বুধবার বিকেল থেকে হাতির হানা চলছে বলে তিনি জানান ৷ সেই খবর দেওয়ার জন্য বন দফতরকে ফোন করা হলেও সময় মত বনকর্মীরা আসেননি বলে তাঁর অভিযোগ । বিষ্ণু দাস বলেন, "বনকর্মীরা এসেছিলেন তবে হাতি চলে যাওয়ার পর । তাতে কোনও লাভ হয়নি ৷ 20-25টা হাতি এসে আমার জমির সব ফসল নষ্ট করে দিল । সব শেষ করে দিয়ে গেল আমার । ধার করে টাকা নিয়ে সবজি চাষ করেছিলাম । এখন কী করব বুঝে উঠতে পাড়ছি না ।"
অর্জুনের মা সুমিত্রা দাস বলেন, "মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় ছেলেটাকে হাতি মেরে দিল । সেই শোকে কোনও কিছুই করতে পারছিলাম না । ধার করে ঝিঙা, লঙ্কার চাষ করা হয়েছিল । কিন্তু দু'দিন আগে ঝিঙের খেত নষ্ট করে চলে গেল হাতি । সবঠিক করার পর আবার গতকাল হাতি এসে সব শেষ করে দিল ৷" বৈকুন্ঠপুর বনবিভাগের বেলাকোবার রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত জানান, বন দফতরের দুটো গাড়ি ওই এলাকায় টহল দিয়েছে । আসলে বিরাট বড় এলাকা জুড়ে তাদের ডিউটি করতে হয় । ফলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে সময় লেগে যায় বলে তিনি দাবি করেন । তিনি বলেন, "অর্জুন দাসের পরিবারের প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে । জমির কাগজ দেখাতে পারলে আমরা ক্ষতিপূরণ দেব । জঙ্গলের সামনেই এই সবজি চাষ করার ফলে হাতি ওই এলাকায় নেমে আসে ।"
আরও পড়ুন: দেওয়া হল না মাধ্যমিক, পরীক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার পথে বুনো হাতির হামলায় মৃত ছাত্র