জলপাইগুড়ি, 26 অগস্ট: সোনাপাচার কাণ্ডে ধৃত এসডিপিও-সহ বাকিদের শুক্রবার আদালতে তোলা হল(Accused of gold smuggling case presented in court)। উদ্ধারকৃত সোনার বাক্সের চাবি খুঁজে না-পাওয়ায় এদিন বিচারকের সামনেই বাক্সের তালা ভাঙা হয় ।
এই বিষয়ে জলপাইগুড়ি আদালতে অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবী অশোক কুমার সেনগুপ্ত জানান, যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট থেকে নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুত ট্রায়াল করার জন্য, তাই সেই নির্দেশ পালন করা হচ্ছে । আজ সাক্ষীরাও এসেছিলেন । সোনাও নিয়ে আসা হয়েছিল । আগামী 19 সেপ্টেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হবে ।
15 সেপ্টেম্বর 2018 সালে সোনা পাচারের কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে হাসিমারার সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট কর্নেল পবন ব্রম্ভ, সেনাবাহিনী গোয়েন্দা শাখার কনস্টেবল দশরথ সিং, জয়গাঁর এসডিপিও অনিরুদ্ধ ঠাকুর, হাসিমারা আউটপোস্টের এসআই সত্যেন্দ্র নারায়ণ রায় ও হাসিমারার প্রাক্তন ওসি কমলেন্দু নারায়ণকে সোনা পাচারকান্ডে গ্রেফতার করা হয় ।
আরও পড়ুন : 7 কোটি উদ্ধারের খবরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ পেল 1 লক্ষ 22 হাজার টাকা
প্রসঙ্গত, গত 10 সেপ্টেম্বর 2018 সালে জয়গাঁ থানার হাসিমারা আউটপোস্টের তোর্সা সেতুর কাছে একটি রাজস্থান নম্বর প্লেটের মারুতি সুইফট ডিজায়ার গাড়ি আটকায় পুলিশ । সেনাবাহিনীর অফিসারের কাছে খবর আসে ভুটান থেকে সোনা পাচার হচ্ছে এই গাড়িতে করে । এরপরেই সেনাবাহিনীর খবর অনুযায়ী জয়গাঁর ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক, অন্যান্য পুলিশ কর্মী ও সেনাবাহিনীর কর্মীরা গাড়িটিকে আটকায় ৷ কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে সোনা উদ্ধার করেও কেস রেজিস্টার না করে সেনা ও পুলিশ কর্মীরা নিজেদের মধ্যে 15 কেজি সোনা ভাগাভাগি করে বলে অভিযোগ ।
খবরটি আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশের আধিকারিকের কাছেও পৌঁছালে রাতারাতি হাসিমারা থানা থেকে কমলেন্দু নারায়ণকে বারোবিশা থানায় বদলিও করা হয় । এই ঘটনার খবর যায় সিআইডি কলকাতার এক আধিকারিকের কাছে । ঘটনা শুনেই তিনি তাঁর টিম পাঠিয়ে ঘটনায় তদন্ত শুরু করেন । প্রথমে এলাকার রাস্তার পাশের বিভিন্ন দোকানের সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করেন । এরপর সেনার আধিকারিক ও কনস্টেবলকে জেরার জন্য ডাকা হয় । কিন্তু তাঁরা প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে 8 কেজি সোনা রাখার কথা পুলিশকে জানায় ৷ এরপর তা উদ্ধার করার পর ফের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সমস্ত ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ৷ এরপর একে একে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয় এসডিপিও অনিরুদ্ধ ঠাকুর-সহ তাঁর সহযোগী ও অন্য দুই পুলিশ কর্মীকে ৷ প্রথমে তাঁরা অস্বীকার করলেও হাসিমারা থানার এসআই সত্যনারায়ণ রায় 7 কেজি সোনা বের করে দেন । উদ্ধার হয় মোট 15 কেজি সোনা ৷ এরপরেই জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গণেশ বিশ্বাস জয়গাঁ থানায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার হন উপরোক্ত ব্যক্তিগণ ৷
আরও পড়ুন : বসল 500 সিসি ক্যামেরা, শিলিগুড়ি ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাড়ল পুলিশি নজরদারি