হাওড়া, 31 মার্চ: ঘটনাস্থল হাওড়া শহর ৷ পুলিশ কমিশনারের দফতরের সামনে আঁটোসাটো নিরাপত্তা ৷ ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা রয়েছে কার্যালয়ে ঢোকার রাস্তা ৷ আর সেই ব্যারিকেডের এপারে অপেক্ষারত রাজ্য়ের বিরোধাী দলনেতা ! তাঁর হতে ধরা রয়েছে একটি সিডি ! বিরোধী দলনেতার দাবি, ওই সিডি তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছে পৌঁছে দিতে চান ৷ কারণ, "তাঁর সেটা পাওয়া দরকার !" অথচ, ভিতরে ঢুকতে পারছেন না বিরোধী দলনেতা ! এই অবস্থায় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দাগলেন তিনি ! আর তাঁকে ঘিরে ভিড় করে থাকলেন সাংবাদিকরা ৷ প্রায় ঘণ্টাখানেক ধরে চলল টানটান নাটক ! শেষমেশ অবশ্য পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের ভিতর ঢোকার অনুমতি পান তিনি ৷
হাওড়ায় রামনবমীর শোভাযাত্রায় গন্ডগোলের জেরে শুক্রবার দিনভর সরগরম থেকেছে রাজ্য রাজনীতি ৷ সেই প্রেক্ষাপটে এদিন হাওড়া সদর হাসপাতালে আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ বৃহস্পতিবারের ঘটনায় আহতদের বেশ কয়েকজন এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৷ শুভেন্দু তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন ৷ তারপর সটান রওনা হন পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের উদ্দেশে ৷ কিন্তু, প্রাথমিকভাবে সেখানে ঢুকতে পারেননি তিনি ৷ প্রায় ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পর জট কাটে ৷ কার্যালয়ের গেট খুলে শুভেন্দুকে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ তবে, পুলিশ কমিশনারের দেখা তিনি পাননি ৷ বদলে তাঁর অফিসের এক আধিকারিককে সংশ্লিষ্ট সিডিটি দিয়ে আসেন শুভেন্দু ৷
কী আছে এই সিডিতে ? বিরোধী দলনেতা নিজেই জানিয়েছেন, রামনবমীর শোভাযাত্রায় যাঁরা অশান্তি সৃষ্টি করেছিলেন, সেই 'আসল' অপরাধীদের সম্পর্কে তথ্য রয়েছে এই সিডিতে ৷ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ 36 জনকে গ্রেফতার করেছে ৷ কিন্তু, তাঁরা 'নির্দোষ' বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু ৷ তাই যাতে 'আসল' অপরাধীরা ধরা পড়ে, তার জন্যই শুভেন্দুর এদিন এভাবে কমিশনারের কার্যালয়ে 'ছুটে' আসা !
আরও পড়ুন: 'সংখ্যালঘু ভোট ফেরাতেই শিবপুরের ঘটনা', মমতাকে দায়ী করে পদত্যাগ দাবি শুভেন্দুর
কিন্তু, বিরোধী দলনেতার মতো এমন একজন হেভিওয়েটকে কেন এভাবে কমিশনারের অফিসে ঢুকতে না দিয়ে দীর্ঘক্ষণ বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখা হল ? শুভেন্দুর সটান জবাব, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ভয় পেয়েছেন ! তাই তাঁর সঙ্গে এমন আচরণ করা হচ্ছে ! এমনকী, তিনি বলেন, "এ রাজ্য়ের পুলিশ বেঙ্গল পুলিশ নয় ৷ এ রাজ্যের পুলিশ হল, মমতা পুলিশ ৷ পুলিশ কমিশনারকে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছিল আমি আসব ৷ কিন্তু, কমিশনার বলেছেন, তিনি আমার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না ৷ নবান্ন থেকে বারণ আছে !" এসবের পর অবশেষে শুভেন্দুকে ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয় এবং সঙ্গে থাকা সিডিটি কমিশনারের কার্যালয়ে জমা দেওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুভেন্দু সেখান থেকে বেরিয়ে যান ৷ রওনা হন কলকাতার পথে ৷