হাওড়া, 17 মার্চ: বাঙালির দোলে (Holi 2022) পুজো-আচ্চায় মঠের উপস্থিতি আবশ্যিক (Traditional Holi sweet)। পর্তুগিজ মিষ্টি হলেও মঠ জড়িয়ে রয়েছে বাঙালি ঐতিহ্যের সঙ্গে ৷ তবে স্বাস্থ্যের কথা ভেবে কড়া মিষ্টির মঠ থেকে মুখ ফিরিয়েছে অনেকেই ৷ তার উপর করোনা আবহে মঠের চাহিদা নেমে যায় তলানিতে ৷ ব্যবসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন প্রস্তুতকারকরা ৷
মঠের ইতিহাস বেশ সুপ্রাচীন । দোল পূর্ণিমায় (low demand of traditional holi sweet mothh) রাধামাধবের প্রসাদের থালায় বাতাসা-কদমার মাঝখানে সাজানো মন্দিরের চূড়ার আকারের মিষ্টিটিই হল মঠ । মঠ মূলত পর্তুগিজ মিঠাই । হুগলির ব্যান্ডেল চার্চে প্রথম এই মিষ্টি প্রভু যিশুর প্রসাদী থালায় পাওয়া যায় । পরে বাঙালি ময়রারা পরম স্নেহে মঠকে বাঙালি বানিয়ে ফেলেছেন । তাকে গোলাপি, হলুদ, লাল - নানা রঙে রাঙিয়ে দোলে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ করে তুলেছেন । চিনির কড়া পাক দিয়ে সেই তরল কাঠের ছাঁচে জমিয়ে বা ফুটো পাত্রের ভিতর দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা ফেলে এই মঠ প্রস্তুত করা হয় । এটি 5-6 সেন্টিমিটার উঁচু একটি শুকনো ও অত্যন্ত পরিচিত মিষ্টি । এই মঠ তৈরির ধারা আজও বর্তমান রেখেছেন হাওড়ার উনসানি শিউলি পাড়ার স্বপন মণ্ডল ও তাঁর পরিবার ।
আরও পড়ুন: 10 টাকায় জোড়া খাসি-মুরগি-বিদেশি মদ, হোলি বাম্পার লটারি শিলিগুড়িতে
তবে আগের থেকে চাহিদা এখন অনেক কম বলে জানালেন তাঁরা ৷ আগে 15দিন আগে থেকে দোলের মঠ প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেলেও এখন 7 দিন আগেই কাজ শুরু হয় । দোল ছাড়া বছরের অন্য কোনও সময়ে এই মঠের চাহিদা বিশেষ থাকে না । অগত্যা সংসার চালাতে দুই ধরনের বাতাসা ও সাদা মুড়কিই ভরসা এই পরিবারের ৷ চাহিদা কম থাকায় কর্মীরাও কাজ পাচ্ছেন না ৷ ফলে তাঁরা চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায় ৷ স্বপন মণ্ডল জানালেন, ডায়াবিটিসের আশঙ্কায় অনেকেই আজকাল মঠ খেতে চান না ৷ আর করোনার সময়ে পুজো-আচ্চা কমে যাওয়ায় চাহিদা আরও কমে গিয়েছিল ৷
মানুষ প্রাচীন এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে আবারও মঠের প্রতি আগ্রহী হবে, এই আশা নিয়েই ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে হাওড়ার এই পরিবার ৷