হাওড়া, 18 জুলাই : স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই স্বপ্নের যাত্রাপথ তৈরি করতে শুরু হয় তোড়জোড় । 8 টা 35-এর ডবল ডেকার । সাইরেন বাজিয়ে ঘণ্টা চারেকের মধ্যে পৌঁছে যাবে ধানবাদ । এযেন ট্রেন যাত্রীদের এক স্বপ্নের যাত্রা ।
2011 সালের 1 অক্টোবর । শুরু পথচলা । কিন্তু শুরুতেই হোঁচট । রেকের সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের নির্দিষ্ট দূরত্ব না থাকায় যাত্রাপথে বারবার বিপদ সংকেত দেখা দিল । তবে, দুরন্ত গতির ডবল ডেকারের গতি দিতে কোনওরকম খামতি রাখল না প্রশাসন । তৎকালীন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীর তত্ত্বাবধানে যাত্রাপথের সমস্ত প্লাটফর্মগুলিকে কাটতে শুরু করা হল । কিন্তু তাও শেষরক্ষা হল না । ছেদ পড়ল স্বপ্নের যাত্রায় । বলা ভালো, গঠনগত ত্রুটি থাকার কারণে ডবল ডেকার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হল রেল ।
চালু হওয়ার পর প্রথম প্রথম ট্রেনটি জনপ্রিয়তা পেলেও দেখা দিল গঠনগত ত্রুটি । মাত্র তিন-চার বছরের মধ্যে গতি হারিয়ে ফেলল ট্রেনটি । এছাড়া যাত্রী না হওয়ার সমস্যা তো ছিলই । এমনভাবে ট্রেনটিকে তৈরি করা হয়েছিল যা প্রচলিত প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানোর উপযুক্ত নয় । রেকের সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের নির্দিষ্ট দূরত্ব না থাকায় বিপদ সংকেত দিতে থাকে । তখনও হাল ছাড়েনি রেল । হাওড়া থেকে ধানবাদ যে পথ দিয়ে ট্রেনটি যেত সেই সমস্ত প্ল্যাটফর্মগুলিকে কাটতে শুরু করা হয় । তাতেও দেখা দেয় সমস্যা । কারণ একটি ট্রেনের সুবিধা করতে গিয়ে অন্য ট্রেনগুলির সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের দূরত্বের গরমিল তৈরি হয়ে যায় । হোলি
ট্রিনিটি বন্ধ করা ছাড়া রেলের কাছে আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না ।
এরপর থেকে রেকটির ঠাঁই হয় হাওড়ার কারশেডে। এই বিষয়ে, হাওড়ার DRM ইশাক খান বলেন, "ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ত্রুটি থাকার কারণে একাধিকবার সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় রেকটিকে । প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে ধাক্কা খেত ট্রেনটি । তাই বাধ্য হয়েই রেলের তরফে বন্ধ করে দেওয়া হয় ।" পাশাপাশি যাত্রী না হওয়ার সমস্যা তো ছিলই । কিন্তু এর মাঝেও কয়েকটি প্রশ্ন থেকে যায় । কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ট্রেনটি তৈরি করার সময় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এত ত্রুটি থেকে গেল কী করে ? উত্তর অবশ্য আজও পাওয়া যায়নি । আর ত্রুটির জাঁতাকলে গতিহারা ডবল ডেকার আজ কারশেডের জঙ্গলে কোনও এক অজানা ভবিষ্যতের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে ।