চন্দননগর, 28 নভেম্বর: স্পেশাল কেয়ার ওয়ার্ডে থাকা রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা হাসপাতাল চত্বরে ৷ রোগী আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ৷ তবে সেই দাবি মানতে নারাজ রোগীর পরিবার ৷ পালটা হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে রোগীর পরিবার ৷ ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির চন্দননগরের গৌরহাটি ইএসআই হাসপাতালে । মৃত রোগীর নাম রবীন সিং(19)। বাড়ি ভদ্রেশ্বর বাবুবাজার এলাকায় । চন্দননগর থানার পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য দেহ চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠিয়েছে ৷
জানা গিয়েছে, গত 12 নভেম্বর গৌরহাটি ইএস আই হাসপাতালে পেটে ব্যথা নিয়ে রবীনকে ভরতি করেছিল পরিবার । তবে তাঁর পরিস্থিতি খারাপ থাকায় তাঁকে আরও ভালো চিকিৎসার জন্য বজবজের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । সেখানেই 19 নভেম্বর রবীনের অস্ত্রোপচার হয় । রবীনের পরিস্থিতি ঠিক থাকায় পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য আবার তাঁকে গৌরহাটিতে ফেরত পাঠায় ওই হাসপাতাল । সোমবার রাত 8টা নাগাদ রবীনকে ফের ইএসআই হাসপাতালে ভরতি করা হয় । কিন্তু হঠাৎ অবস্থার অবনতি হয় তাঁর ৷ হাসপাতালের তরফে পরিবারকে সেকথা জানানো হয় ৷ রবীনের পরিবার হাসপাতালে পৌঁছলে কর্তৃপক্ষ বলে, আত্মহত্যা করেছেন তিনি । এইচডিইউ-2 বেডে ভরতি ছিলেন ওই তরুণ। হাসপাতালের কর্মরত নার্স ও কর্মীদের দাবি, বেডের পর্দা টাঙানোর অ্যালুমিয়ান বারে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়েছেন রবীন । তবে তাঁদের এই দাবি কোনওভাবেই মেনে নিতে চায়নি রোগীর পরিবার ।
এইচডিইউ-এর ভিতর স্পেশাল কেয়ার থাকে । সেখানে একজন অসুস্থ রোগী কীভাবে আত্মহত্যা করল, প্রশ্ন তোলে রবীনের পরিবার ৷ এরপরই ভোর থেকেই যুবকের পরিবার ও এলাকাবাসীরা হাসপাতালে জড়ো হতেই উত্তেজনা বাড়ে ৷ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তারা ৷ ঘটনাস্থলে আসে চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ ।
রবীনের প্রতিবেশী চন্দ্রেস রায়ের দাবি, "রবীন যদি আত্মহত্যা করে তাহলে একটা ছবি তো তুলে রাখবে । এইচডিইউ-এর মধ্যে কী করে এই ঘটনা ঘটতে পারে । পুলিশকে ও পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি । একজন রোগী কীভাবে অসুস্থ অবস্থায় আত্নহত্যা করল । এটা পুরোপুরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ।" অন্যদিকে হাসপাতালের কর্মী পুলককুমার ধারার দাবি, "রোগী আত্মহত্যা করেছে দেখে আমরা নামিয়ে চিকিৎসা করার চেষ্টা করি । সেই সময় ছবি তোলা সম্ভব হয়নি ।"
ভদ্রেশ্বর পৌরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল প্রকাশ গোস্বামী ঘটনার খবর পেয়ে ইএসআই হাসপাতালে আসেন । হাসপাতালের নার্স এবং কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি ৷ তাঁর কথায়, "আমার পৌরসভা এলাকার বাবুবাজারের বাসিন্দা ওই তরুণ । এইচডিইউ ওয়ার্ডের ভেতরে যেভাবে মৃত্যু হয়েছে তাতে হাসপাতালের গাফিলতি স্পষ্ট । পুলিশকে বলেছি বিষয়টি দেখতে । পুলিশ বলেছে স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেটকে তদন্তে যুক্ত করা হচ্ছে ।"
আরও পড়ুন: