হুগলি, 11 জুলাই: ফের লাল আবীর উড়ল জেলায় ৷ গত দু'টি পঞ্চায়েতের ফলের তুলনায় এবার কিছুটা হলেও আলাদা হল হুগলির ফল ৷ 2018 বিরোধী শূন্য গ্রাম পঞ্চায়েতের ফল হলেও, এবার অবশ্য হুগলিতে খাতা খুলল বিরোধীরা। যদিও বেশ কিছু জায়গায় নমিশনেশনের ক্ষেত্রেই তৃণমূল বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতে জয় লাভ করেছে। তবে গ্রাম পঞ্চায়েতের ফল ঘোষণা হতেই হাসি ফুটল বিরোধীদের মুখে। একাধিক জায়গায় বিরোধীদের জয়ের উল্লাসও ধরা পড়ল ছবিতে ৷
মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিরোধীদের গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল ৷ কিন্তু বেলা গড়াতেই উচ্ছ্বাস দেখা গেল বিরোধী শিবিরে ৷ চলল লাল আবীর খেলা ও উল্লাস। হুগলি ও শ্রীরামপুর লোকসভা এলাকায় পাণ্ডুয়া, চন্ডীতলা ও তারকেশ্বরে সিপিএম তিনটি পঞ্চায়েত দখল করেছে বলে দলের তরফে দাবি করা হয়। এর মধ্যে পাণ্ডুয়ায় দু'টি ত্রিশঙ্কু হয়েছে ৷ যদিও সেক্ষেত্রেও সিপিএম জেলা নেতৃত্ব দাবি করেছে, সেগুলিও তাদের দখলে আসতে পারে ৷ অপরদিকে আরামবাগ মহকুমায় 10টির মধ্যে পুরশুরা এক নম্বর ব্লকে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত, খানাকুল এক নম্বর ব্লকে দু'টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও খানাকুল দুই নম্বর ব্লকে সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয় পেয়েছে বিজেপি।
এছাড়াও আরামবাগে বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়েছে। হুগলি জেলায় 207টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সিপিএম ও বিজেপির দখলে গিয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত। এখনও পর্যন্ত হুগলিতে তৃণমূল কংগ্রেস দুই হাজার 49টি, বিজেপি 298টি,বামফ্রন্ট 202টি, কংগ্রেস চারটি আসন, আইএসএফ তিনটি এবং অন্যান্যরা 57টি আসন পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। হুগলির পাণ্ডুয়ার জামনা গ্রাম পঞ্চায়েতে জয় পেয়ে খুশির হাওয়া সিপিএমের কর্মীদের মধ্যে। শুধু জামনা নয়, পাণ্ডুয়ার একাধিক গ্রাম সভাতেও ভালো ফল করেছে সিপিএম। বাম নেতা আমজাদ হোসেন বলেন, "তৃণমূলের সন্ত্রাসের পরও আমাদের জয় শুধুমাত্র কর্মীদের জন্য হয়েছে। তৃণমূল গুন্ডামি না করলে আরও আসনে জয় পেতাম আমরা।"
আরও পড়ুন: 'নো ভোট টু মমতা'র প্রচার মানুষ 'ভোট ফর মমতা' করে দিয়েছে, বিজেপিকে কটাক্ষ অভিষেকের
এক নজরে দেখা নেওয়া যাক হুগলির 18টি ব্লকে 207টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফলে পরিসংখ্যান-
শ্রীরামপুর উত্তরপাড়া ব্লকে ছয়টি পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূলের দখল করেছে পাঁচটি এবং একটি পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
সিঙ্গুর ব্লকে রয়েছে 16টি পঞ্চায়েত রয়েছে। তার মধ্যে 16টিই দখল করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
চন্ডীতলা এক নম্বর ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা নয়টি। তার মধ্যে নয়টিই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে।
চন্ডীতলা দুই ব্লকে নয়টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। এর মধ্যে আটটি দখল করেছে তৃণমূল এবং একটি সিপিএম।
জাঙ্গিপাড়া ব্লকে 10টি পঞ্চায়েত রয়েছে। তার মধ্যে নয়টি তৃণমূলের দখলে। একটি পঞ্চায়েতের ফলাফল এখনও অসম্পূর্ণ রয়েছে।
পোলবা দাদপুর ব্লকে রয়েছে 12টি পঞ্চায়েত। 12টিই তৃণমূলের দখলে।
চুঁচুড়া মগরা ব্লকে 10টি পঞ্চায়েত রয়েছে, যার মধ্যে 10টিই তৃণমূলের দখলে।
বলাগর ব্লকে 13টি পঞ্চায়েতের মধ্যে 13টিই তৃণমূলের দখলে রেখেছে।
পান্ডুয়া ব্লকে 16টি পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল 13টি, সিপিএম একটি এবং দুটি পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
হরিপাল ব্লকের 15টি পঞ্চায়েতই তৃণমূলের দখলে।
ধনিয়াখালি ব্লকের 18টি পঞ্চায়েতই দখলে রেখেছে তৃণমূল।
তারকেশ্বর ব্লকে 11টি পঞ্চায়েতের মধ্যে 10টি তৃণমূলের এবং একটি পঞ্চায়েত সিপিএম-এর দখলে।
আরামবাগ ব্লকের 15টির মধ্যে 15টিই তৃণমূলের দখলে।
পুরশুরা ব্লকে আটটি পঞ্চায়েতের মধ্যে সাতটি তৃণমূলের এবং একটি বিজেপির দখলে।
খানাকুল এক নম্বর ব্লকের 13টি পঞ্চায়েতের মধ্যে 11টি তৃণমূলের এবং বিজেপির দখলে দুটি রয়েছে।
খানাকুল দুই ব্লকে পঞ্চায়েত রয়েছে 11টি। তার মধ্যে তৃণমূলের তিনটি, বিজেপির দখলে সাতটি এবং একটি পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়েছে।
গোঘাট এক নম্বর ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতই তৃণমূল দখল করেছে।
গোঘাট দুই নম্বর ব্লকে আটটি পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে এবং একটি পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়েছে।