হুগলি, 30 মে : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডাকা বৈঠকে না যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ৷ বললেন, বৈঠকে গিয়ে কথা না বলে মুখ্যমন্ত্রী খালি টাকা টাকা করছেন ৷ তার পাল্টা আবার হুগলির তৃণমূলের জেলা সভাপতি দিলীপ যাদবের দাবি, বাংলার দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর যা করা উচিত ছিল তা নিয়ে তারা আগে আলোচনা করুক ৷
লকেট বলেন, "যশের তাণ্ডবে পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী এসেছেন বৈঠক করেছেন বাংলা এবং ওড়িশায় ৷ ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক বিরোধী আসনে থেকেও ওড়িশার মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সহযোগিতা করছেন । কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী যোগ দিলেন না । আমাদের রাজ্য যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার হিসাব প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে হবে । শুধু টাকা টাকা করলেই তো হবে না । প্রধানমন্ত্রী সবার জন্য ভাবেন । ক্ষতি হলে টাকা নিশ্চয়ই দেওয়া হবে ৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মানুষের কথা ভাবলেন না । শুধুমাত্র নিজের স্বার্থের কথা ভেবে গেলেন না । গণতন্ত্রের উপর এর একটা বিরাট প্রভাব পড়বে । মানুষ ভোট দিয়েছেন ৷ আগামী পাঁচ বছর মানুষ বুঝবেন । এত দুর্যোগের মধ্যে মানুষের সাহায্য দরকার মুখ্যমন্ত্রী টাকা চাইছেন দূর থেকে । এটা ঠিক নয় ।"
এদিন চুঁচুড়া তিন নম্বর গেটে হুগলি সাংগঠনিক জেলা পার্টি অফিসে রান্নার আয়োজন করা হয় । কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় "পদ্ম পাতায়" ৷ যেখানে রান্নায় হাত লাগাতে দেখা যায় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে । চুঁচুড়া বিধানসভার দেড় হাজার পরিবারকে ডিমের ঝোল এবং ভাতের প্যাকেট দেওয়া হয় । আগামী পাঁচ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি । দশ হাজার লোককে খাওয়ানো হবে বলে জানান লকেট । ভদ্রেশ্বর পুরসভার 2 নম্বর ওয়ার্ডের ভ্রমরদিঘি ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত একশো পরিবারের হাতে ত্রিপল তুলে দেন হুগলির সাংসদ ।
সাংসদের মন্তব্যের পাল্টা তৃণমূল জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, "লকেট চট্টোপাধ্যায় ফেসবুক-সহ সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার জন্য খুন্তি নাড়তে পারেন । আর বিজেপির প্রতীক লাগিয়ে কিছু মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন । সাংসদকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না । তাই তিনি আজকে বেরিয়ে প্রমাণ দিয়েছেন যে তিনি আছেন । আমি বলি যাঁরা মনে করছেন, এই বাংলায় দুর্গতদের পাশে থাকবেন । তাঁরা তাঁদের প্রধানমন্ত্রীকে বোঝান যে বাংলার দুর্গতদের জন্য কিছু করার হলে আগে করোনা ভ্যাকসিন অথবা যশের মোকাবিলায় কিছু ব্যবস্থা করা দরকার ৷" বিজেপির কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে দিলীপ বলেন, "এরা শুধুমাত্র রাজনীতি করার জন্য এসব করছে ৷ অথচ যেসব বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছে, তাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী বাড়ি বাড়ি ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন । এর জন্য বিজেপির ভাবার দরকার নেই । বিজেপি শুধু বিরোধিতাই করে ।"
আরও পড়ুন : ক্ষুদ্র শিল্প ও শ্রমজীবীদের জন্য কঠিন সময়, উত্তরণের পথ খুঁজছে রাজ্য