হুগলি, 18 জুন: প্রার্থীতালিকা নিয়ে সংঘাত বলাগড়ের বিধায়ক বনাম ব্লক সভাপতির । বিধায়কের দাবি, টাকা নিয়ে টিকিট দিয়েছেন ব্লক সভাপতি ৷ পালটা ব্লক সভাপতির দাবি, জেল খাটা দুষ্কৃতীদের টিকিট দেওয়া হয়েছে । এই নিয়েই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল ৷ ব্লক সভাপতির ডাকা বৈঠকে রীতিমতো টেবিল চাপড়ে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানালেন নেতাকর্মীরা ৷
পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিকিট নিয়ে এমনিতেই হুগলি জেলায় মাঝে মধ্যেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে বিভিন্ন জায়গায় । তেমনি প্রার্থীতালিকা প্রকাশের পর থেকে ক্ষোভ দেখা যাচ্ছিল বলাগড়ে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে । শেষ দিনে মনোনয়ন পেশ করেন অনেকেই । কিন্তু দল যাদের টিকিট দিয়েছে তারাই প্রার্থী হতে পারবে জানার পর ক্ষোভ চরমে ওঠে ।
হুগলির বলাগড়ের জিরাটের একটি লজে শনিবার বিকেলে প্রার্থী নিয়ে বৈঠক ডাকেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায় । সেখানেই ক্ষোভ উগরে দেন কর্মীরা । বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির গত বোর্ডের ছ'বারের জয়ী কর্মাধ্যক্ষ বাদ পড়েছেন ৷ একাধিক প্রধান ও উপপ্রধান এমনকি ব্লক সভাপতি, সহ সভাপতিদেরও টিকিট দেওয়া হয়নি । তৃণমূলের একাংশের দাবি, এর পিছনে হাত রয়েছে বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর । উলটে বিধায়কের দাবি, তিনি কেবল 90টি প্রার্থীর টিকিট পেয়েছেন । বাকি সবই অন্যরা পেয়েছেন । টিকিট বিক্রি করার অভিযোগ এনেছেন বিধায়ক ।
তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি নবীন গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, "দলের প্রার্থী নিয়ে নানা ক্ষোভ রয়েছে । বিজেপির অনেক বুথ সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন । অনেক দুষ্কৃতীদের প্রার্থী করা হয়েছে । কোনওদিন দল করেননি এমন লোক থেকে শুরু করে বিজেপির লোকেদেরও টিকিট দিয়েছেন বিধায়ক । উনি ভূমিপুত্র নন । কেউ না কেউ তাঁকে পরিচালনা করছে । উনি নির্বাচন সম্পর্কে জানেন না । দলকে সব জানিয়েছি । আশা করছি দল সমাধান করবে ।"
আরও পড়ুন: ডাকাতি মামলায় অভিযুক্তকে প্রার্থী তৃণমূলের, গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক দাবি বিরোধীদের
ব্লকের সাধারণ সম্পাদক সুজয় মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, "জেল খাটা শান্তনুর ভাই অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় মনোরঞ্জন ব্যাপারীকে টাকা দিয়ে টিকিট নিয়েছে । বিধায়কের বাড়ির পরিচারককেও প্রার্থী করা হয়েছে । অথচ ব্লক সভাপতি নবীনকে টিকিট দেওয়া হয়নি ৷ কেন ?" এই বিষয়ে বলাগড় বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী বলেন, "238টা গ্রাম পঞ্চায়েতের আসনের মধ্যে মাত্র 90টা আমি নিয়েছি । যাঁরা আমাকে জেতাতে সাহায্য করেছিলেন তাঁদের টিকিট দেওয়া হয়েছে । তার জন্য এক টাকাও নিইনি । বাকি সমস্ত ব্লক সভাপতি টিকিট দিয়েছেন । আমার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্দল দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন । উনি প্রত্যেকের কাছ থেকে উৎকচ নিয়ে টিকিট দিয়েছেন । সকলের কাছে পয়সা খেয়ে বাকি টিকিট দিতে পারছেন না । তাই এখন ক্ষুব্ধ । সব দোষটা আমার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন । আমি যাদের টিকিট দিয়েছি তাদের কাছ থেকে পাঁচ পয়সাও নেওয়া হয়নি ।"