চুঁচুড়া, 15 সেপ্টেম্বর: উৎকর্ষ বাংলার (Utkarsh Bangla Job) নামে চাকরিপ্রার্থীরা প্রতারণার শিকার হুগলিতে ! এমনই অভিযোগ উঠল হুগলিতে (Hooghly Job aspirants)৷
উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষা বিভাগ থেকে তরুণ-তরুণীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । সেই মতো গত 12 সেপ্টেম্বর বিভিন্ন জেলা থেকে বাসে করে চাকরিপ্রার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ৷ সেখানে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের হাতে অফার লেটার তুলে দেবেন বলে জানানো হয়েছিল । যদিও তা সম্ভব হয়নি । পরে তাঁদের বলা হয়, বাসে ফেরার সময় অফার লেটার হাতে দিয়ে দেওয়া হবে । তাও দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ (Fake training certificate)।
হুগলি জেলার 107 জনকে পরে ফোন করে জানানো হয়, হুগলি এইচআইটি কলেজ থেকে অফার লেটার সংগ্রহ করতে হবে । প্রত্যেকের মোবাইলে একটি পিডিএফ ফাইল দিয়ে দেওয়া হয় গতকাল । আজ হুগলি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি কলেজে অফার লেটার নিতে আসেন অনেকেই । চিঠিতে লেখা গুজরাতের মারুতি সুজুকি কোম্পানিতে দু বছরের আইটিআই প্রোগ্রামে ভেহিকেল টেকনিক্যাল-এর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে । সেই প্রশিক্ষণ চলাকালীন এগারো হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে । সেন্টার ফি বহন করবে সুজুকি মোটরস গুজরাত প্রাইভেট লিমিটেড । স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও নথি দেখার পরই প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচন করা হবে ।
চিঠির নিচে সেন্টার ম্যানেজার হিসাবে ভেদপ্রকাশ সিং-এর নাম ও ফোন নম্বর দেওয়া হয় । সেই নম্বরে ফোন করে প্রার্থীরা জানতে পারেন, এই প্রশিক্ষণের ব্যাপারটাই ভুয়ো । যেভাবে তাঁদের চিঠি ধরানো হয়েছে প্রশিক্ষণের জন্য, এটা কোনও পদ্ধতি নয় । এই সংস্থা গুজরাতে প্রশিক্ষণ দেয় ৷ সে জন্য যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচন করা হয় এবং তাঁদের প্রত্যেকের জন্য আলাদা করে চিঠি কোম্পানির প্যাডে ইস্যু করা হয় । ফানফাস্ট নামে এক সংস্থার সঙ্গে সুজুকি যৌথভাবে প্রশিক্ষণ দেয় বলে জানান ভেদপ্রকাশ । ফানফাস্টের (FUN1ST) পক্ষ থেকে সিদ্ধার্থ শংকর জানান, গতকাল রাতেই বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন । এই ধরনের কোনও চিঠি তাঁরা দেননি । পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই । ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকদের মেইল করে বিষয়টি জানানো হয়েছে ।
আরও পড়ুন: কীভাবে নিয়োগপত্র প্রদান ? ধোঁয়াশা দেখে চটলেন মমতা, খামতি সামলালেন নিজেই
এই সংস্থা জানিয়েছে, তারা বিহার ও উত্তরপ্রদেশের ছেলে-মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে । কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কেউ এখনও প্রশিক্ষণ নেয়নি । যেভাবে কোম্পানির প্যাড ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এটি ভুয়ো । অফার লেটার হাতে পাওয়া ছাত্রছাত্রীরা এই ঘটনায় মুষড়ে পড়েছেন ৷ কেউ কেউ আবার গুজরাতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে চাইছেন না বলে অফার লেটার নিতেও আসেননি ।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের তরফে নোডাল অফিসার কিছু বলতে চাননি । তবে হুগলির জেলাশাসক পি দীপা বলেন, "কী কারণে এই ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ এটা কোনও উৎকর্ষ বাংলার প্রজেক্ট নয় । আইটিআইয়ের কোনও ট্রেনিং হবে । আমরা কারিগরি শিক্ষা দফতরকে বিষয়টি জানিয়েছি ৷"
এ দিকে, সিঙ্গুরে গিয়ে সিপিআইএম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় এই ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন ৷ তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য চালাতে পারছেন না । কিন্তু বেকার যুবকদের চাকরি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ছেলেখেলা না করলেও পারতেন । পশ্চিমবঙ্গের যুবদের অপমান করেছেন তিনি ।"