ভদ্রেশ্বর, 5 জানুয়ারি: মহিলা পুরোহিতরা শুধু বিয়ে বা শুভকাজ সম্পন্ন করেন না, মানুষের শেষযাত্রায় শ্মশানেও কাজ করছেন মহিলা পুরোহিত । হুগলির ভদ্রেশ্বরের শ্মশানে স্বামীর দেখানো পথেই কাজ সামলে চলেছেন এলাকার পরিচিত দুর্গাদি । তাঁর এই কাজের প্রতি নিষ্ঠা-ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ পৌরসভার চেয়ারম্যান থেকে এলাকার সাধারণ মানুষ ।
চেয়ারম্যান প্রলয় চক্রবর্তী বলেন, "দীর্ঘদিন ধরেই ভদ্রেশ্বর শশ্মানে পুরোহিতের কাজ করতেন দুর্গারানি চট্টোপাধ্যায়ের স্বামী । বৃদ্ধের মৃত্যুর পর তিনিই সেই কাজ সামলে চলেছেন । সচেতন নাগরিকরাও এ বিষয়ে কোনও আপত্তি করেননি । করোনার সময় তাঁরা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছিলেন । দুর্গাদির বয়স হয়েছে । তাও তিনি পুরোহিতের কাজ করে চলেছেন । পৌরসভার পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে কিছু দেওয়া হয় না । অন্য কোনও সাহায্যের প্ৰয়োজন হলে আমরা সাহায্য করি । মহিলা হয়েও যেভাবে তিনি এই কাজ করছেন আমরা কৃতজ্ঞ ।"
পুরোহিত দুর্গারানি বলেন, "প্রথম দিকে আমার স্বামী এই কাজ করতেন । আমার ভালো লাগত না । কিন্তু পরবর্তী সময়ে স্বামীকে সাহায্য করতে শুরু করি । শাস্ত্র পাঠ বা পুরোহিতের প্রথাগত শিক্ষা নেই । স্বামীর শেখানো মন্ত্র ও রীতি মেনেই এই কাজ করে চলেছি ।" বর্তমানে শ্মশানের পুরোহিতের কাজের জন্য কেউ আসেন না । যৎসামান্য যেটুকু আসে চিকিৎসা ও নিজের খাবার খরচে চলে যায় । পৌরসভার কাছে তাঁর আবেদন, যদি কিছু সাহায্য পাওয়া যায় তাহলে উপকৃত হবেন তিনি ।
জানা যায়, প্রথম দিকে দুর্গাদির জীবন শুরু হয়েছিল অবহেলার মধ্যে দিয়ে । ভগবানের প্রতি অগাধ বিশ্বাস দেখে স্বামী শিবপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায় বিয়ে করেন তাঁকে । বয়সের অন্তর বেশি থাকলেও সাংসারিক ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হয়নি । শ্মশান ঘাটের কাছে একটি ভাঙাচোরা বাড়িতে বাস করতেন তাঁরা । সম্প্রতি স্বামী শিবপ্রসাদের মৃত্যু হয়েছে । তাই একা হাতে স্বামীর কাজের দায়িত্বভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন দুর্গারানি । শ্মশানে সরা, তিল, চাল, পাটকাঠি ইত্যাদি বিক্রি ও যে যেমন দেন, তাই নিয়েই কোনও রকমে দিনযাপন করে চলেছেন এলাকার পরিচিত দুর্গাদি ।
আরও পড়ুন
1. স্কুলগাড়িতে আগুন, চালকের বুদ্ধিতে প্রাণে বাঁচল 12 পড়ুয়া-সহ অভিভাবক
2. বাঘের আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে এলাকার বাসিন্দাদের, দেখুন ভিডিয়ো
3. পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ, থানায় আত্মসমর্পণ অভিযুক্তের